নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা রেলবাজার জামে মসজিদের মুসলি¬¬¬রা মসজিদের উপযুক্ত শৌচাগারের অভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন। অভিযোগ উঠেছে রেলবাজার জামে মসজিদে শৌচাগারের এমনই ভগ্নদশা যা ব্যবহারের পর মুসলি¬দের মনকে পাক-নাপাক প্রশ্নে বিদ্ধ করছে। দীর্ঘদিনের পুরনো ও ভাঙ্গাচোরা মসজিদের শৌচাগারটি সংস্কারের অভাবে ব্যহারের অনুপযোগি হয়ে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। দীর্ঘদিন ধরে মুসলি¬¬রা শৌচাগারটি মেরামত বা নতুনভাবে নির্মানের দাবী জানিয়ে আসলেও মসজিদ পরিচালনা কমিটি এতে কোন কর্ণপাত করছেন না। ফলে ধর্মপ্রাণ মুসলি¬¬দের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যেকোন সময় পুঞ্জিভুত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন অনেকে।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভাধীন রেলবাজার জামে মসজিদটি এলাকার মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো, ঐতিহ্যবাহী ও আয়তনেও বড়। বর্তমানে এখানে প্রতি ওয়াক্তে প্রায় পাঁচ শতাধিক মুসলি¬ নামাজ আদায় করেন। মসজিদটি বাজার সংলগ্ন হওয়ায় স্বাভাবিক কারনেই এখানে নামাজ আদায় করতে আসা বেশিরভাগ মুসলি¬¬দের টয়লেট ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। স্বাধীনতার পর থেকে মসজিদটি বেশ কয়েকবার সংস্কার করার ফলে বর্তমানে এ আয়তন বেড়েছে অনেক। সেইসাথে মুসলি¬¬ সংখ্যাও বেড়েছে বহুগুন। কিন্তু মসজিদের মুসলি¬¬র সংখ্যা ও আয়তন বাড়লেও বাড়েনি শৌাচাগারের সংখ্যা। বর্তমানে এখানে ২টি পায়খানা ও স্বল্প পরিসরে দুই লাইনে মোট ১০টি প্রসাবখানা রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। আবার যাওবা আছে অনেক দিনের পুরাতন ও ভাঙ্গাচোরা হওয়ায় সেগুলোর অধিকাংশই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রসাব করতে বসলে ভাঙ্গাচোরা স্থানের কারনে প্রসাব ও ছিটিয়ে পড়া ট্যাপের নোংরা পানিতে শরীর ও কাপড়চোপড় নাপাক হয়ে যায়। ফলে অনেকে নামাজ পড়তে এসে নাপাকের কারনে নামাজ না পড়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন। আবার অনেকে অজান্তে নাপাক শরীর বা কাপচোপড়েই নামাজ আদায় করেন। প্রসাবখানার অর্ধেকের উপরে কোন শেড নেই। বাকি অর্ধেকের উপর টিনের শেড থাকলেও বর্ষার সময় জ্বরাজীর্ন টিনের ফাঁক দিয়ে গড়িয়ে পড়ে বৃষ্টির পানি। ফলে সারা বছরই রোদে পুড়ে অথবা বৃষ্টিতে ভিজে প্রয়োজন সারতে হয়। শৌচাগার নির্মানের জন্য বছরখানেক আগে মসজিদ পরিচালনা কমিটি মসজিদের ভাড়া দেওয়া বেশ কয়েকটি দোকানঘর থেকে ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করে তা ভেঙে জায়গা খালি করে। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ সদস্যদেরকে অনেকবার জানানো সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারনে তাতে কেউ কর্নপাত করেন না। এলাকার মধ্যে এ মসজিদটির বার্ষিক আয়ের পরিমান সবচাইতে বেশি। তারপরেও শৌচাগারসহ মসজিদের উন্নয়নের ব্যাপারে সংশি¬¬ষ্টদের তেমন কোন মাথাব্যাথা নেই। কিছুদিন আগে ১০লক্ষ টাকা খরচ করে মসজিদের ভিতর ১৬টি এসি লাগালেও অকেজো শৌচাগার সংস্কার বা নতুন শৌচাগার নির্মানের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ এখনও গ্রহন করা হয় নি। এছাড়াও বেশ ক’বছর আগে দ্বিতীয় তলার ছাদ নির্মিত হলেও বাকি কাজ সম্পন্ন করার কোন উদ্যোগ নেই। সামনের অংশ সম্পুর্ণ ফাঁকা হওয়ায় চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে একটি ফ্যানও লাগানো হয়নি। বিশেষ করে রমজান মাসে ও জুম্মার দিনে নীচতলায় মুসলি¬দের জায়গা না হওয়ায় দ্বিতীয় তলায়ও কয়েক’শ মুসলি¬¬ প্রচন্ড গরম সহ্য করে নামাজ আদায় করে থাকেন। এতসব অসুবিধা সত্ত্বেও মসজিদের উন্নয়নের ব্যাপারে মুসলি¬¬দের কথায় কর্ণপাত না করায় বর্তমান মসজিদ পরিচালনা কমিটির কর্মকান্ডের প্রতি জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন ও ক্ষোভ।