শিক্ষার্থীদের প্রদত্ত আশ্বাস দ্রুত বাস্তবায়ন করুন
- আপলোড টাইম : ০৯:২৬:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অগাস্ট ২০১৮
- / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে
সড়কে নৈরাজ্য বন্ধের দাবি নিয়ে সারা দেশে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। এক সপ্তাহ ধরে নিজেরা সড়কে থেকে ফিটনেসহীন গাড়ি, লাইসেন্সহীন চালক, উল্টো পথে গাড়ি চালানোসহ অনেক অনিয়ম হাতেনাতে ধরিয়ে দিয়েছে। সরকার তাদের সব দাবি মেনে নিয়ে দ্রুততম সময়ে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গত রবিবার থেকে শুরু হয় ট্রাফিক সপ্তাহ পালন। কিন্তু তাতে কি সড়কের বিশৃঙ্খলা খুব একটা কমেছে? স্থানে স্থানে চেকপোস্ট বসানোর কারণে ফিটনেসহীন গাড়ি ও লাইসেন্সহীন চালকের সংখ্যা কমেছে। এতে বেড়েছে যাত্রীদের দুর্ভোগ। সিটিং ভাড়া দিয়েও বাদুড়ঝোলা হয়ে যেতে হচ্ছে। গতকালও অনেক বাসকে দেখা গেছে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে। বাসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়নি। মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাতে দেখা গেছে অনেক চালককে। পথচারীদের ‘ফ্রিস্টাইল’ চলাফেরায়ও কোনো পরিবর্তন আসেনি। তাহলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে কিভাবে? সড়কে নৈরাজ্যের জন্য ট্রাফিক পুলিশের ব্যর্থতাকেই বেশি দায়ী করা হয়। জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ রকম ১০টি ব্যর্থতা। এর মধ্যে রয়েছে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশদের ঘুষ ও হয়রানি বন্ধ করতে না পারা, আলাদা লেন বাস্তবায়ন না করতে পারা, প্রভাবশালীদের আইন মানাতে না পারা, চালকের যোগ্যতা যাচাই ও গাড়ির ফিটনেস নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবহার না করা ও উল্টো পথে গাড়ি চলাচল প্রতিরোধ করতে না পারা ইত্যাদি। উচ্চ আদালত গাড়িতে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেটি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বেপরোয়া গতির প্রতিযোগিতা দূর হচ্ছে না। বেশির ভাগ ফুটপাত দখলে থাকায় পথচারীরা সড়কে নেমে আসে। এর ওপর থাকে অবৈধ পার্কিং। পথচারীরা বাধ্য হয় মাঝরাস্তায় চলে যেতে। ঘটে দুর্ঘটনা। একই সঙ্গে রাস্তাজুড়ে অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করায় রাস্তার গতি কমে যায়। সৃষ্টি হয় যানজট। এমনই আরো বহু কারণ রয়েছে সড়কের বিদ্যমান বিশৃঙ্খলার পেছনে। শুধু আন্তরিক উদ্যোগই পারে কিছুটা হলেও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। সেই আন্তরিকতার অভাবই আমরা বরাবর দেখে এসেছি। শুধু ট্রাফিক পুলিশ নয়, সড়কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যদেরও দায়িত্ব পালনে সৎ ও আন্তরিক হতে হবে। জানা যায়, রাস্তায় কড়াকড়ির কারণে বিআরটিএ কার্যালয়ে ফিটনেস সংগ্রহের হিড়িক পড়েছে। কিন্তু সেখানে দালালদেরও সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। অনেকেই হয়তো দালাল ধরে ঘুষের বিনিময়ে গাড়ির ফিটনেস না থাকলেও ফিটনেস সনদ পেয়ে যাবে। রাস্তা পারাপারের জন্য আন্ডারপাস বা ফুট ওভারব্রিজের সংখ্যা খুবই কম। সেগুলো বাড়াতে হবে। নিদেনপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিগন্যালযুক্ত জেব্রাক্রসিং করতে হবে। এরপর পথচারীদের বাধ্য করতে হবে সেগুলো ব্যবহার করতে। শিক্ষার্থীরা অতি জরুরি একটি বিষয়ে নাড়া দিয়েছে এবং কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এখন শিক্ষার্থীদের প্রদত্ত আশ্বাস বাস্তবায়নে সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিকতা প্রদর্শন করবে, এমনটাই আমরা প্রত্যাশা করি।