ধর্ম প্রতিবেদন:
জিকির আল্লাহর সেরা ইবাদত। আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা সমৃদ্ধ জিকির ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সব নবি-রাসুল ও তাদের উম্মতদের জন্য সেরা জিকির। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় ছোট্ট এ জিকিরের বিশেষ ফজিলত ও মর্যাদা ওঠে এসেছে। হাশরের ময়দানে ওজনের পাল্লায় ছোট্ট এ জিকির হবে সাত আসমান ও সাত জমিনের চেয়েও ভারি। আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে এ জিকিরটি বেশি বেশি পড়ার কথা বলেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস থেকেই তা প্রমাণিত। আল্লাহ তআলা মানুষকে তার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। ইবাদত-বন্দেগির মূল বিষয় হলো আল্লাহকে সব সময় স্মরণ করা। আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করতে কুরআনুল কারিমের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
১. ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির বা আল্লাহকে স্মরণ কর।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৪১)
২. ‘তোমরা অনেক বেশি জিকির কর, তবেই সফলকাম হতে পারবে।’ (সুরা আনফাল : আয়াত ৪৫)
৩. ‘অতঃপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ১০)
সর্বকালের সর্বোত্তম জিকির হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। কুরআন-সুন্নায় বেশি বেশি আল্লাহর জিকির বা স্মরণ করার ব্যাপক দিকনির্দেশনা এসেছে। জিকিরের মধ্যে সর্বকালে সবচেয়ে উত্তম ও মর্যাদার জিকির হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা ওঠে এসেছে-
১. হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, আর সর্বোত্তম দোয়া হলো- আল-হামদুলিল্লাহ। (মুসতাদরাকে হাকেম)
২. সর্বোত্তম জিকির সম্পর্কে হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে- হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহর কাছে আরজ করেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে এমন একটি দোয়া শিখিয়ে দিন, যার মাধ্যমে আমি আপনার জিকির করব এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করব। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন- হে মুসা! তুমি (শুধু) বল- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, হে আল্লাহ! আপনার সব বান্দাই তো এই জিকির করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন (আবারও) বললেন, তুমি বল- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।’কিন্তু আমি চাইছি আমাকে বিশেষ একটি দোয়া শিখিয়ে দেবেন; যা কেবল আমার জন্য হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন, হে মুসা! আমি ছাড়া সাত আসমান, সাত জমিন ও তার মাঝে যা রয়েছে সবকিছু যদি এক পাল্লায় থাকে আর (শুধু) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অন্য পাল্লায় থাকে তাহলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর পাল্লা ভারি হবে।’ (মুসতাদরাকে হাকেম) সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত উঠা-বসা, চলাফেরায় অবসর সময়ে এ জিকির বেশি বেশি পাঠ করা। আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণায় নিজের জিহ্বাকে সচল রাখা। তবেই মহান আল্লাহর কাছে সর্বোচ্চ সফলতা লাভ করবে মুমিন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী সর্বোত্তম জিকির ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
