মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেলা কারাগারে জামিরুল ইসলাম (৩৬) নামের এক হাজতির মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষের দাবি সে গলায় গামছা দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। তবে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছেন, নিহতের শরীরে গামছায় ঝুলে আত্মহত্যার কোন লক্ষণ নেই। নিহতের স্ত্রী শাহিনা খাতুন প্রশ্ন করেছেন জেলখানায় এত নিরাপত্তার মধ্যে কিভাবে একজন হাজতি আত্মহত্যা করতে পারে? নিহত জামিরুলের মা বানিয়ারা খাতুন বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি জেলখানার লোকজন মেরে ফেলেছে, আমি এর বিচার চাই। নিহতের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও দাবি জামিরুলকে হত্যা করা হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে ময়না তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নিহত জামিরুল ইসলাম গাংনী উপজেলার বালিয়াঘাট গ্রামের ছলেমান মিয়ার ছেলে। গত ২অক্টোবর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক অভিযানে ইয়াবাসহ আটক হয় জামিরুল। মেহেরপুর জেল সুপারের দায়িত্ব থাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার আরিফ হোসেন জানান, গতকাল সোমবার দুপুরে গলায় গামছা দিয়ে কারাগারের রেলিং এর সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে জামিরুল। তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশিষ কুমার দেবনাথ জানান, নিহতের গলাসহ শরীরের কোথাও গলাই রশি বা গামছা দিয়ে আত্মহত্যার কোন আলামত কিংবা লক্ষণ পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে লাশ ময়না তদন্তের প্রক্রিয়া চলছে। সর্বশেষ জমিরুল মাদকের মামলায় কারাগারে ছিল। তার হাজতি নম্বর ছিল ১৭৭৭/১৬ । সে কারাগারের ভৈরবÑ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বন্দী ছিল। মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধূরী বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে । উল্লে¬খ্য, মেহেরপুর কারাগারে বন্দী নির্যাতন, ঘুষ, দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জেলারসহ তিন কারারাক্ষীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে মেহেরপুর শহরের মনিরুল ইসলাম নামক এক ব্যক্তি । মামলার এজাহারে বলা হয়েছে জেলার আখতার হোসেন ও অন্য আসামীগন বেতন ভুক্ত সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী হওয়ার পরেও পরস্পর যোগ-সাজসে অবৈধভাবে কারাগারের ভিতরের ক্যান্টিন থেকে বন্দিদের মালামাল কিনতে বাধ্য করে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করাসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে দুই বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামী শেখ শাহীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। নির্যাতনে শেখ শাহী গুরুতর জখম হলেও তাকে কোন চিকিৎসা না দিয়ে ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করেন জেলার শেখ আখতার হোসেন।