হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম একটি পূজা হলো সিদ্ধেশ্বরী পূজা। হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজারও নারী-পুরুষ মেতে উঠেছেন পূজা উদ্যাপনে। শুধু মেহেরপুর নয়, এ সম্প্রদায়ের নানা বয়সী নারী-পুরুষ এসেছেন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে। গতকাল রোববার মেহেরপুরের ঐতিহ্যবাহী বড়বাজার সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ সিদ্ধেশ্বরী পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটি মূলত মান্নত পূরণের জন্য পাঠা বলির পূজা বলে জানালেন গাংনী থেকে আসা শ্রী লালন কুমার দাশ। মেহেরপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা ঝিনাইদহ থেকে এসেছেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা সাগর মণ্ডল, চঞ্চল ও আকাশ জানান, এটি একটি ঐতিহ্যবাহি ধর্মীয় উৎসব এবং উৎসব উপলক্ষে দিনব্যাপী মেলা। মেলায় অনেক ঘুরেছি। ভালো লাগছে এখানে এসে। মেহেরপুর সদর উপজেলার বারাদী গ্রামের ইন্দ্রজিৎ হালদার জানালেন, ‘ছোট মেয়ে সূচনার জন্য মান্নত করেছিলাম। আমার পরিবারের সবাই এসেছি এখানে। পাঠা বলি দিয়েছি। পুরোহিতের কাছে পাঠা দিয়ে পূঁজা সম্পন্ন করে এখন মেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরছি।’ গাংনী উপজেলার নিত্যনন্দপুর গ্রাম থেকে আসা পদ্দা হালদার বলেন, ‘আমার ছেলে শ্রী মনজোনের চোখে সমস্যা আছে। তাই তার জন্য মান্নত করেছি। আমরা সন্ধ্যা হালদার ও পদ্দা হালদারের সাথে এসেছি।’
গাংনী থানার চাঁদপুরের মহল দাস বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুই বছর এই সিদ্ধেশরী পূজা বন্ধ ছিল। এ বছর জাঁকজমকভাবেই পূজা ও মেলা হচ্ছে। আমরা পরিবারের সাথে ঘোরাঘুরির আর পূজা দেখার জন্যই এসেছি।’ দৌলতপুর থেকে আসা শ্রী স্বাধীন কুমার বলেন, গত দু বছর মেলাটি বন্ধ ছিল। আগের বছরগুলোতে মেলায় প্রচুর মানুষজন আসতো। এবছর মেলা ও পূজা এক সাথে হলেও আগের মতো মেলার সেই জৌলুস আর নেই।
মেহেরপুর সিদ্ধেশরী কালি মন্দীরের পুরোহিত তপন ব্যানার্জি জানালেন, সিদ্ধেশরী পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য এটা একটি উৎসবও বটে। মেহেরপুর জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ই নয়, এ জেলার আশেপাশের জেলাগুলো থেকে শত শত মানুষ আসেন এ উৎসবে। বিভিন্ন রোগ ভোগের কারণে ঠাকুরের কাছে মান্নত করেন। তারা ঠাকুরের উদ্যেশ্যে পাঠা বলি দিয়ে থাকেন। অন্যান্য বছরে আমাদের পাশের দেশ ভারত থেকেও অনেক ভক্তগণ আসতেন। করোণার কারণে গত দুই বছর মেলাটি বন্ধ ছিল। এবছর আবারও শুরু করা হয়েছে।