সমীকরণ প্রতিবেদন:
মেহেরপুরে গবাদি পশুর শরীরে দেখা দিয়েছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি)। এ রোগে গত এক মাসে পাঁচটি গরুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে কয়েক হাজার। অ্যান্থাক্সের পর হঠাৎ গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন খামারীরা। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে দেওয়া ‘গোটপক্স’ ভ্যাকসিন কোনো কাজে আসছে না বলে দাবি তাঁদের।
গতকাল সোমবার সকালে গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, লাম্পি স্কিন ডিজিজ অন্তত ১৩টি গরুকে বিভিন্ন গ্রাম থেকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিন শতাধিক গরুকে ‘গোটপক্স’ ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় পরামর্শ। তবে কোনো পরামর্শই কাজে আসছে না বলে অভিযোগ গরুর মালিকদের।
গাংনীর উত্তর পাড়ার জামেনা খাতুনের একটি বাছুর গরু ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি এসেছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চিকিৎসকের কাছে। জামেনা বলেন, সরকারিভাবে কোনো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র ব্যবস্থাপত্র লিখে হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। পাশেই ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে আনতে হয়েছে। এরপরও কবে নাগাদ গরু সুস্থ হবে, তা বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা।
চৌগাছা গ্রামের আজাদ আলী জানান, তাঁর একটি গাভী গরু তিনদিন আগে আক্রান্ত হয়েছে। তাঁর দুধ পান করে বকনা বাছুরের সারা শরীর ফুলে গেছে। তাঁর বাড়িতে ১১টি গরু রয়েছে। আক্রান্ত গরুগুলোকে আলাদা করে মশা মাছি থেকে নিরাপদ রাখা হচ্ছে। সদর উপজেলার শালিকা গ্রামের বাসিন্দা জিল্লুর রহমান জানান, তাঁর ২৫টি গরুর মধ্যে একটি লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত। প্রথমে গরুর শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে সারা শরীরের গুটি গুটি বের হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিসা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের বাদশাহ জানান, তাঁর বাড়ির একটি বড় গরু ১০ দিন যাবত আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এতে তাঁর লক্ষাধিক টাকা লোকসান হয়েছে।
এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, ধীরে ধীরে মহামারি পর্যায় ধারণ করেছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। নিয়মিত পরিচর্যা করলে এ রোগ নিরাময়যোগ্য। তিনি আরও বলেন, কোনো গরু আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে আলাদা করে রাখতে হবে। আক্রান্ত গরুকে অবশ্যই মশারি আবৃত করে রাখতে হবে। তা নাহলে সামলানো মুশকিল হয়ে যাবে। সূত্র-জাগো নিউজ
