মুমিনজীবনে সাফল্য

ধর্ম ডেস্ক: ‘মুমিন মুমিনের আয়না’ হাদিসটি সংক্ষিপ্ত হলেও মর্মার্থের দিক থেকে অত্যন্ত সারগর্ভ। শিক্ষার এক বিশাল জগত এ ছোট্ট হাদিসটিতে লুকায়িত। হাদিসের মর্মার্থ হলো, আয়না দর্শককে বলে দেয় তার চেহারার প্রকৃত অবস্থা। চেহার ময়লা থাকলে নীরবে সে জানিয়ে দেয়। সৌন্দর্য থাকলেও তা প্রকাশ করে দেয়। অনুরূপভাবে একজন মুমিন যখন দেখবে তার অপর ভাইয়ের মধ্যে দোষ আছে, তখন সে তাকে তা ধরিয়ে দেবে, ফলে দোষী মুমিন নিজেকে শোধরানোর কাজে লেগে যেতে সক্ষম হবে। এই হাদিসের মধ্যে উভয়ের জন্য শিক্ষা রয়েছে। যে ভুল ধরিয়ে দেয় তার জন্য এবং যার ভুল ধরা হয় তার জন্যও। যে ভুলটি ধরা হয়েছে, সেই ভুলটি শোধরে নেয়াই কাম্য। যিনি ভুল ধরেছেন, তার ওপর মনে কষ্ট নেয়া উচিত নয়, তাকে কোনো দোষারোপও করা যাবে না। অনেক সময় রোগী জানে না, তার রোগ কী? তাই সে ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার তাকে বলে দেয়, তোমার  এ রোগ আছে। এজন্য ডাক্তারকে তো একথা বলা হয় না যে, ডাক্তার অমুককে রোগী বানিয়ে দিয়েছে। বরং রোগীকে বলা হয়, তোমার রোগটা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কারণেই ধরতে পেরেছ। এই হাদিসে আরেকটি শিক্ষাও রয়েছে যিনি দোষ ধরেন তাকে আয়নার সঙ্গে তুলনা দেয়া হয়েছে। আয়নার কাজ হলো দর্শককে তার মুখের দাগ সম্পর্কে অবহিত করে দেয়া। এ ক্ষেত্রে যতটুকু দাগ থাকে, আয়না ঠিক ততটুকুর কথাই বলে। সে বাড়িয়ে বলে না। অনুরূপভাবে একজন মুমিন যখন অপর মুমিনের দোষের কথা বলবে, তখন শুধু তাকেই বলবে, যতটুকু দোষ আছে ততটুকুর কথাই বলবে। এ নিয়ে সে হইচই করবে না। অন্যদের সামনে মাতামাতি করবে না এবং দোষকে নুন-মরিচ লাগিয়ে বাড়িয়ে সে বলবে না। এটাই আয়নাসদৃশ মুমিনের চরিত্র। দোষী ব্যক্তিকে বকাঝকা করা, তার দোষের কথা মানুষের সামনে বলা বা এ নিয়ে মাতামাতি করা আয়নাসৃদশ মুমিনের চরিত্র হতে পারে না। অপর মুমিন ভাইকে ভুলে লিপ্ত দেখলে এ সম্পর্কে তাকে সতর্ক করা একজন মুমিনের কর্তব্য। বর্তমানে আমরা এ কর্তব্যের কথা ভুলে বসেছি। মুমিনদের মধ্যে এই গুণটির চর্চা জরুরি। বারবার সতর্ক আর পাশাপাশি দোয়া করলে মুমিনজীবনে সাফল্য আসবে।