গাংনীতে জমির হিস্যা চেয়ে প্রভাবশালী চক্রের রোষানলে একটি পরিবার
গাংনী অফিস:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামে জমির হিস্যা চেয়ে প্রভাবশালী চক্রের রোষানলে পড়েছে একটি পরিবার। নানাভাবে হয়রানি করছে ওই পরিবারটিকে, এমনই অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। স্থানীয়ভাবে সুরাহা না মেলায় এ ব্যাপারে মেহেরপুর আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী রহিমা খাতুন।
মামলার এজাহার সূত্র ও ভুক্তভোগী রহিমা খাতুন জানিয়েছেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে গ্রামের মানুষ হতে জানতে পারি আমাদের পরিবারের শরিকানা জমি সবাইকে ফাঁকি দিয়ে উক্ত জমি আমার আপন ভাইয়ের ছেলে আরিফুল ইসলাম নিজ নামে করিয়ে নিয়েছে। আমার মায়ের (ছপুরা খাতুন) নামে প্রায় ২৫-২৬ বিঘা জমি ছিল। মা অসুস্থ থাকা অবস্থায় আমারই আপন ভাইয়ের ছেলে আরিফ অর্ধেক জমি নিজের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে করেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে নানাভাবে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। পাশাপাশি আমরা যাতে গ্রাম থেকে চলে যায়, তার জন্য স্থানীয় একটি জালিয়াতি চক্রকে সাথে নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে আরিফ। তারই আলোকে গত ৯-০৬-২১ইং তারিখে আমাকে মারধর করে। চক্রের সাথে স্থানীয় মন্ডল, বিজিবি সদস্যসহ স্থানীয় মাস্তান রয়েছে। যার ফলে স্থানীয়ভাবে তাদের মারধরের ঘটনায় কেউ বিচার করার সাহসও পায়নি। ঘটনার বিচার চেয়ে মেহেরপুর আদালতে ৬ জনকে আসামি করে মারধর ও জমি জালিয়াতির বিষয়ে মামলা করেছি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম অনেকটায় বন্ধ রয়েছে।’
এদিকে গ্রাম থেকে চলে যেতে ও মামলা তুলে নিতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে এই চক্রটি। গত কয়েক দিনে হুমকি পর হুমকিতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে পরিবারটি। নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের থানায় ডেকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা মৌখিকভাবে জানিয়েছে যে এরপর তারা তাদের আর হুমকি-ধামকি দেবে না।
রহিমা খাতুন আরও জানান, ‘এসকল ষড়যন্ত্র ও হামলার সাথে আরিফুলকে সহযোগিতা করছে স্থানীয় জালাল উদ্দীনের ছেলে মো. টোকন, জালাল, জামাল, কামাল ও মো. নাসির উদ্দীন। আর এই লোকগুলোর সহযোগিতায় আমাদের গ্রাম ছাড়া করতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এসময় আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারধর করাসহ নানাভাবে হয়রানি করছে।’
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বজলুর রহমান জানান, ‘উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের রহিমা খাতুন নামের এক মহিলা অভিযোগ করেছিলেন, কিছু লোক গ্রাম ছাড়া করতে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমন খবরে আমি এসআই নূরকে পাঠিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নিদের্শ দিয়েছি। গাংনী উপজেলার কোনো মানুষ নির্যাতিত হলে পুলিশ বসে থাকবে না। বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। বতমানে তারা শান্তিপূণভাবে বসবাস করছে। কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’
