ইপেপার । আজ শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪

ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে বিদেশ গমন : অবশেষে দালাল আলেকের ক্ষপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব আশরাফ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:১৪:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০১৭
  • / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের বাজারপাড়ার হতদরিদ্র এক পরিবারের বড় ছেলে আশরাফ আলী (৩৫)। ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম। পিতা ভ্যান চালক রবিউল ইসলাম মন্ডল। আর মাকে নিয়ে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। পরিবারের দরিদ্রতা ঘোচাতে আর স্বচ্ছলতা ফেরাতে খুব কষ্টে সাড়ে চার লক্ষ টাকা খরচ করে মালেয়শিয়া যান আশরাফ। তবে তার ভাগ্যে কোনো কর্মসংস্থান তো দূরের কথা উল্টে দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব^ খোয়াতে হয় তাকে। প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে তার পরিবারের কাছে আরো দু’লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। তার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে দাবিকৃত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না হওয়া আটকে রেখে চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। কূল কীনারা না পেয়ে অবশেষে মালেয়শিয়া পুলিশের সহায়তায় খালি হাতে মরনাপন্ন অবস্থায় ফিরতে হয় আশরাফ আলীকে। এ ব্যাপারে নির্যাতিত যুবক আশরাফ আলী সাংবাদিকদের জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মহাসিন মল্লিক ওরফে মসার ছেলে আদমব্যাপারী দালাল আলেক মল্লিকের কাছে বিদেশে কাজে পাঠানোর জন্য ভিসা পেতে তার পরিবার ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেয়। ভিসা দেওয়ার কথা বলে আরো ৫০হাজার টাকা দিতে হয় তাকে। পরিশেষে গত বছরের ৫ই জুন তাকে মালেয়শিয়া নিয়ে যাওয়ার ভিসা দেওয়া হয়। তবে তা ভ্রমণ বা পর্যটন ভিসা। ফলে বিদেশে যেতে পারলেও মেলেনি কোনো কাজ। এদিকে, সেখানে পৌছানোর পর অপর সহযোগী দালাল আলেকের ছোট ভাই খালেক মল্লিক তাকে বিমান বন্দর থেকে সাথে নিয়ে তার গোপন আশ্রয়ে রাখেন। সেখান থেকে আবারো ৩য় দফায় দু’লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। না দিলে মেরে ফেলার হুমকীও দেওয়া হতো। টাকা দিতে না পারায় আটকে রেখে বেদম প্রহার ও অনাহারে রাখা হতো তাকে। দীর্ঘ কয়েক মাস সেখানে আটকে রেখে শারিরীক নির্যতনসহ ভারী কাজ করিয়ে নেওয়া হতো তাকে দিয়ে বিনিময়ে দু-এক বেলা খাবার জুটতো কপালে তার। সেখান থেকে আরেক সহযোগী প্রধান দালাল আলেক মল্লিকের ভাগ্নে রনির জিম্মায় দেওয়া হয় তাকে। সেখানেও একই ভাবে তাকে দিয়ে পরিশ্রম করিয়ে নেওয়া হতো। তবে তাকে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হতো না। এক পর্যায়ে আশরাফ কৌশলে তাদের কাছ থেকে পালিয়ে মালেয়শিয়ার স্থানীয় পুলিশের কাছে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশের সহযোগিতায় দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হন। নির্মম নির্যাতনের স্বীকার যুবক আশরাফ আলীকে গত বৃহস্পতিবার মরনাপন্ন অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছিলো বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে বিদেশ গমন : অবশেষে দালাল আলেকের ক্ষপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব আশরাফ

আপলোড টাইম : ০৫:১৪:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের বাজারপাড়ার হতদরিদ্র এক পরিবারের বড় ছেলে আশরাফ আলী (৩৫)। ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম। পিতা ভ্যান চালক রবিউল ইসলাম মন্ডল। আর মাকে নিয়ে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। পরিবারের দরিদ্রতা ঘোচাতে আর স্বচ্ছলতা ফেরাতে খুব কষ্টে সাড়ে চার লক্ষ টাকা খরচ করে মালেয়শিয়া যান আশরাফ। তবে তার ভাগ্যে কোনো কর্মসংস্থান তো দূরের কথা উল্টে দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব^ খোয়াতে হয় তাকে। প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে তার পরিবারের কাছে আরো দু’লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। তার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে দাবিকৃত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না হওয়া আটকে রেখে চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। কূল কীনারা না পেয়ে অবশেষে মালেয়শিয়া পুলিশের সহায়তায় খালি হাতে মরনাপন্ন অবস্থায় ফিরতে হয় আশরাফ আলীকে। এ ব্যাপারে নির্যাতিত যুবক আশরাফ আলী সাংবাদিকদের জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মহাসিন মল্লিক ওরফে মসার ছেলে আদমব্যাপারী দালাল আলেক মল্লিকের কাছে বিদেশে কাজে পাঠানোর জন্য ভিসা পেতে তার পরিবার ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেয়। ভিসা দেওয়ার কথা বলে আরো ৫০হাজার টাকা দিতে হয় তাকে। পরিশেষে গত বছরের ৫ই জুন তাকে মালেয়শিয়া নিয়ে যাওয়ার ভিসা দেওয়া হয়। তবে তা ভ্রমণ বা পর্যটন ভিসা। ফলে বিদেশে যেতে পারলেও মেলেনি কোনো কাজ। এদিকে, সেখানে পৌছানোর পর অপর সহযোগী দালাল আলেকের ছোট ভাই খালেক মল্লিক তাকে বিমান বন্দর থেকে সাথে নিয়ে তার গোপন আশ্রয়ে রাখেন। সেখান থেকে আবারো ৩য় দফায় দু’লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। না দিলে মেরে ফেলার হুমকীও দেওয়া হতো। টাকা দিতে না পারায় আটকে রেখে বেদম প্রহার ও অনাহারে রাখা হতো তাকে। দীর্ঘ কয়েক মাস সেখানে আটকে রেখে শারিরীক নির্যতনসহ ভারী কাজ করিয়ে নেওয়া হতো তাকে দিয়ে বিনিময়ে দু-এক বেলা খাবার জুটতো কপালে তার। সেখান থেকে আরেক সহযোগী প্রধান দালাল আলেক মল্লিকের ভাগ্নে রনির জিম্মায় দেওয়া হয় তাকে। সেখানেও একই ভাবে তাকে দিয়ে পরিশ্রম করিয়ে নেওয়া হতো। তবে তাকে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হতো না। এক পর্যায়ে আশরাফ কৌশলে তাদের কাছ থেকে পালিয়ে মালেয়শিয়ার স্থানীয় পুলিশের কাছে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশের সহযোগিতায় দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হন। নির্মম নির্যাতনের স্বীকার যুবক আশরাফ আলীকে গত বৃহস্পতিবার মরনাপন্ন অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছিলো বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।