সমীকরণ প্রতিবেদন:
গত এক মাসে কতিপয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে শুধু ব্রয়লার মুরগিতে কারসাজির মাধ্যমে ১ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে দাবি করে এর পেছনে মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ব্রয়লার মুরগিসহ নিত্যপণ্যের কারসাজিতে দায়ীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে এ দাবি জানান ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। এ সময় ক্যাবের নেতারা ছাড়াও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক (সিপিবি) রুহিন হোসেন প্রিন্স বক্তব্য রাখেন।
নাজের হোসাইন বলেন, এ রমজানে মানববন্ধনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি। দেশের সাধারণ মানুষ বাজারে যেতে ভয় পায়। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। অতি মুনাফাবাদীদের জন্য সাধারণ মানুষের জীবন এখন বিপন্ন। কাউকে আধাবেলা খেতে হয়, কেউ না খেয়ে থাকতে হয়। এসব ব্যবসায়ী কখনো চিনি, কখনো তেল, কখনো মুরগির দাম কারসাজি করে। শুধু গত এক মাসে অসাধু ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগিতে এক হাজার কোটি টাকা কারসাজি করেছে, লুণ্ঠন করেছে। শুধু ব্রয়লার মুরগিতেই যদি এক হাজার কোটি টাকা কারসাজি হয়, তাহলে অন্যান্য পণ্যে কত টাকা কারসাজি হয়েছে- লুটপাট হয়েছে। আমাদের কথাগুলো সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আজকে (বৃহস্পতিবার) এখানে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে এসব কারসাজিকারী ব্যবসায়ী এবং নেপথ্যে থাকার গংদের খুঁজে বের করে শাস্তি আওতায় আনুন। যদিও এখন পর্যন্ত কারসাজির দায়ে কোনো ব্যবসায়ীর শাস্তির নজির নেই। প্রতিযোগিতা কমিশন থেকে একটি মামলা করা হয়েছিল সেটিও আলোর মুখ দেখছে না। নাজের হোসেন বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনকে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকর করতে হবে। এই কারসাজির সঙ্গে করা যুক্তদের চিহ্নিত করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইতোমধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছে। অবিলম্বে এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ দুষ্টচক্রকে ভেঙে দিতে হবে। না হয় কখনো বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন না। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, করপোরেট ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে করে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়েছে। এবার সরকারি প্রতিষ্ঠান তদন্ত করে সামনে নিয়ে এসেছেন। তার মানে এটা প্রমাণিত সরকার কতিপয় ব্যবসায়ীরা এই কারসাজিতে দায়ী। এসব ব্যবসায়ী নতুন পদ্ধতি চালু করেছে, যে পণ্যে ধরবে সেখানে হাজার কোটি টাকা কারসাজি করবে।প্রিন্স বলেন, এজন্য ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় দেখতে হবে। তেল, গম, ডিম, মুরগি সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সাবজনিন রেশন ব্যবস্থা চালুসহ সরকারি উদ্যোগ বিকল্প বাজার ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিতে হবে। এই মুহূর্তে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কতিপয় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীর পক্ষ নেবে, নাকি জনগণের পক্ষে থাকবে। মানববন্ধনে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় তরুণ সংঘে চেয়ারম্যান ফজলুল হক ও ন্যাপের সাংগঠনিক সম্পাদক মিতা রহমান সাধারণ ভোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।