রাজধানীর উত্তরায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে নাটকীয়ভাবে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২০ লাখ টাকার ছিনতাইয়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৯ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে একটি মাইক্রোবাসসহ ওই টাকা উদ্ধার করে। এ সময় টাকা বহনকারী সিকিউরিটি কোম্পানি মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের দুই পরিচালকসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। ডিবি বলছে, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার হোটেল লা মেরিডিয়ানের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে গাড়িটি মিরপুর-১২ নম্বর থেকে রওনা দেয়। উত্তরায় যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীরা গাড়িটি থামায়। ওই গাড়িতে টাকা নিয়ে যাওয়ার কাজে নিয়োজিত ছিলেন মোট ছয়জন। ছিনতাইকারীরা তাদের মারধর করে গাড়ি ও টাকার চারটি বক্স নিয়ে পালিয়ে যায়। চার বক্সে মোট ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা ছিল। খবর পেয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের টিম সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যায়। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় টহল বসানো হয়। বিভিন্ন থানা পুলিশের সহযোগিতায় ডিবির সদস্যরা টাকা উদ্ধার ও ছিনতাইকারীদের ধরতে কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে উত্তরা এলাকা থেকে পালানোর সময় তিনটি বক্সসহ সাতজকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, এর পেছনে কাদের ইন্ধন রয়েছে, কে কে জড়িত তা তদন্ত করে বের করা হবে।
এর আগে উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের ঢাকা মেট্রো-চ-৫১-৬৫৭৯ সিরিয়ালের একটা নোয়া গাড়ি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে বের হয়ে রওনা দেয় সাভার ইপিজেডের উদ্দেশে। কোম্পানির ভাষ্য মতে, গাড়িটিতে ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিল। গাড়িটি মিরপুর ডিওএইচএস পার হয়ে মেট্রো রেলের নিচ দিয়ে ১১ নম্বর ব্রিজ হয়ে যখন সামনের দিকে যাচ্ছিল, তখন পেছন থেকে একটি কালো কালারের মাইক্রোবাস এসে ডান থেকে বামে চাপ দিয়ে হর্ন দেয় ও গাড়িটির গতি রোধ করে।
প্রথমে তারা হর্ন দেয়া নিয়ে কোম্পানির গাড়ির চালকের সঙ্গে ঝগড়া করে। এরপর চালক এবং কোম্পানির সুপারভাইজারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে আনে। ছিনতাইকারী দলের একজন ওই গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে সামনে নিয়ে দাঁড় করায়। গাড়িতে থাকা কোম্পানির ম্যানেজারকে নামিয়ে টাকা ভর্তি চারটি ট্রাঙ্ক নামিয়ে কালো রংয়ের আরো একটি হায়েস মাইক্রোবাসে তুলে চলে যায়। ওই গাড়িটি রাজউকের ভবনের পাশ দিয়ে ১৮ নম্বর সেক্টরের রাস্তা হয়ে ইউটার্ন করে ১০ নং সড়ক হয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। এর পর ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশকে তথ্য দেয়া হয়। ঘটনার পর থানা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা মাঠে নামে। ছিনতাইকারীদের হাতে অস্ত্র ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ছিনতাই করতে আসা গাড়িতে ১০ থেকে ১২ জন ছিল বলে ভুক্তভোগীরা আমাদের জানিয়েছেন। তবে তাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। ছিনতাইকারীরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়েছে।