আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গায় নাতি ও ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে রাহেলা খাতুন (৯০) নামের এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে বৃদ্ধা রাহেলা খাতুনতে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তাঁর নাতি সম্রাট (২৫) ও ছেলে সেলিম মিয়ার স্ত্রী রিনা খাতুন (৩৮)। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে নিজ বাড়ির কুঁড়েঘরে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। নিহত রাহেলা খাতুন আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়া গ্রামের ফেরিঘাটপাড়ার মৃত হুর আলীর স্ত্রী। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গতকালই বৃদ্ধার ছেলে সেলিম মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী রিনা খাতুন ও ছেলে সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বার্ধক্যজনিত কারণে বৃদ্ধা রাহেলা দীর্ঘদিন যাবত বিছানাগত অবস্থায় রয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে তিনি মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য বাইরে যেতে চেয়েছিলেন, তাই ছেলে সেলিমকে ডাকাডাকি করে। মধ্যরাতে বৃদ্ধার ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙনোর কারণে নাতি ও ছেলের বউ মিলে তাকে মারধর করে। এসময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সম্রাট ও তার মা বৃদ্ধাকে ওই ঘরে রেখেই তাদের নিজ কক্ষে চলে যায়। এরই মধ্যে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে এবং সেলিম মিয়া, তার স্ত্রী রিনা খাতুন ও ছেলে সম্রাটকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেয়।

ভাংবাড়ীয়ার বৃদ্ধ খুনের ঘটনায় আটক কৃত আসামী
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী নাসিমা খাতুন নামের এক নারী জানান, ‘বুধবার সকালে গিয়ে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখি। বৃদ্ধার কাছে তাঁর শরীরে জখমের বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায় তার নাতি সম্রাট তাকে মেরেছে। এর কিছুক্ষণ পড়ে চিৎকার-চেঁচামেচিতে জানতে পারি সে মারা গেছে।’ তিনি আরও জানান, ‘রাতে বাড়ির বাইরে যাবার জন্য বৃদ্ধা রাহেলা খাতুন তার ছেলে সেলিমকে ডাক দেয়। তখন ছেলের বউ ও নাতি ছেলে বাইরে বেরিয়ে এসে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃদ্ধাকে বেধড়ক মারপিট করে গুরুত্বর আহত করে।’
এ ঘটনায় নিহত বৃদ্ধার ছেলে সেলিম জানায়, রাতে তাঁর মা বাইরে যাবে বলে তাঁকে ডাকেন। তিনি ঘুম থেকে না উঠে বউ ও ছেলেকে পাঠান। ছেলে সম্রাট তার দাদীকে মেরে আহত করে।’
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে বৃদ্ধার শরীরে মারপিটের আলামত পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। একটি মামলাও হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। অভিযোগ ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
