
সমীকরণ প্রতিবেদন:
শুরু হয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। একই সাথে বজ্র ঝড়সহ কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি পড়েছে। তবে তা দেশের সর্বত্র হয়নি। কোনো কোনো অঞ্চলে হয়েছে। গতকাল কোথাও মেঘলা আকাশ থাকলেও কোথাও কোথাও ছিল খা খা রোদ। শীত অবসানের পর এটা ছিল দেশে প্রথম বজ্রসহ শিলা বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টি হলেও দেশের অধিকাংশ স্থানে তা মিলিমিটার স্কেলে মাপার মতো হয়নি। গতকাল বুধবার সকাল ৬টার পর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাদারীপুরে ৩ মিলিমিটার, ঢাকা, চাঁদপুর ও যশোরে সর্বোচ্চ ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল বুধবার উল্লেখ করার মতো তেমন বৃষ্টি না হলেও আগের দিন মঙ্গলবার সিলেটে বেশ ভালো বৃষ্টিই হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুসারে, সিলেটে গতকাল বুধবার সকাল ৬টার পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ের কারণে আমের মুকুল পড়ে গেছে এবং এ মৌসুমের ফসলেরও কিছু ক্ষতি হয়েছে। ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে কোথাও কোথাও। ভেঙে গেছে কলা ও পেপে গাছ। আবহাওয়া অফিস বলেছে, দেশে সকাল থেকেই ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে গেছে। তবে যেখানে যেখানে বেশি বাতাস প্রবাহিত হয়েছে সেখানে বাতাসের গতিবেগ ৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছে। এই কালবৈশাখী মূলত স্থানীয় বৃষ্টিপাত ও বজ্রঝড়। বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অঞ্চলে সাধারণত এপ্রিল থেকে মে মাসে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে এই বজ্রঝড় বেশি হতে দেখা যায়। বৈশাখে কালবৈশাখী হলেও বৈশাখ শুরুর আগে যে ঝড় হয় আবহাওয়া দফতর এটাকে কালবৈশাখী না বললেও গ্রামেগঞ্জে সাধারণ মানুষ এ সময়ের ঝড়কে কালবৈশাখী ঝড়ই বলে থাকে। কালবৈশাখী ঝড়ের স্থায়িত্বকাল খুবই স্বল্প। হঠাৎ করে প্রবল বেগে ঝড়টি আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। কালবৈশাখী ঝড়ের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার হয়ে থাকে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘণ্টায় এক শ’ কিলোমিটারের বেশিও হতে পারে। গতকাল ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- মহাখালী, গুলশান, বাড্ডা, বারিধারা, আগাওগাঁও, কল্যাণপুর, মিরপুর, রামপুরা-বনশ্রী, খিলগাঁও ইত্যাদি স্থানে। রাজধানী ঢাকার বাইরে সাভারে, গাজীপুর জেলার বিভিন্ন অংশে। এর মধ্যে টঙ্গী, কামারপাড়ায় বৃষ্টিটা হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি থেকে জানা গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে নয়া দিগন্তের সংবাদদাতা ও ব্যক্তিগত সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জে সকালে কিছুক্ষণ হালকা বৃষ্টি হয়েছে। মানিকগঞ্জে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে, মধুপুরে, ধানবাড়িতে, নেত্রকোনার বিভিন্ন স্থানে, ফরিদপুরের মধুখালিতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, নরসিংদীতে কিছুটা হয়েছে। এ ছাড়া গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসংিহ, কুমিল্লা, চুয়াডাঙ্গা ও ভোলায়। ঝড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমের মুকুল ঝড়ে গেছে, গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে এবং পত্রঝরা গাছের পাতা পড়ে কোথাও কোথাও শুণ্য হয়ে গেছে। আমের মুকুল ঝড়ে গেলেও কৃষকরা জানিয়েছেন, আরও কিছুটা বৃষ্টি হলে তা আমের ফলনের জন্য ভালোই হতো। কারণ খরায় আমের মুকুল পুড়ে গিয়ে ঝরে পড়ছিল।