বিভাজন সৃষ্টি মুমিনের কাজ নয়
- আপলোড টাইম : ০৮:২২:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৮
- / ৩৭৪ বার পড়া হয়েছে
ধর্ম ডেস্ক: মানুষের মাঝে পরস্পরে হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ঘৃণার উদ্রেক ঘটায়, একজনকে আরেকজন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়-এসব কাজ থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষেরই দূরে থাকা দরকার। যারা ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ায়, পরস্পরে বিভাজন সৃষ্টি করে সমাজে বিশৃঙ্খলা করে তাদের ব্যাপারে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কঠোর হুঁশিয়ারি বাণী উচ্চারণ করে বলেন, ‘হে লোক সকল, নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে কিছু মানুষ রয়েছে, যারা মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়।’ -সহিহ বোখারি এসব কাজ মানুষকে ইসলাম থেকে, ইসলামি আদর্শ চর্চা থেকে দূরে ঠেলে দেয়। পবিত্র ধর্ম ইসলাম এমন কাজের কোনো অনুমতি দেয়নি। ইসলাম মনে করে আল্লাহর প্রতি নিরঙ্কুশ বিশ্বাস পোষণই হলো সমাজ থেকে এমন অহেতুক বিভাজন, বিশৃঙ্খলা মুছে পরস্পরে একসঙ্গে থাকার মাধ্যম। একসঙ্গে থাকা, ঐক্যবদ্ধভাবে পথচলা ইমানের দাবি ও মুসলমানের কাজ। ইসলামের ইতিহাসে এমন ঘটনার অনেক নজিরও রয়েছে। যেমন পবিত্র কোরানে কারিমে বর্ণিত ‘আসহাবে কাহাফ’র সদস্যরা শুধু বিশ্বাসগত কারণে পরস্পরে একসঙ্গে থেকেছেন। তারা সে সময়ের অত্যাচারী বাদশাহর নির্যাতন থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য যুগপৎভাবে গুহায় আশ্রয় নিয়েছেন। এভাবে হজরত মূসার (আ.) জীবনের একটি ঘটনা পবিত্র কোরানে বর্ণিত হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘আর শহরের দূরপ্রান্ত থেকে একজন লোক ছুটে আসল। সে বলল, হে মূসা! নিশ্চয় পরিষদবর্গ (ফেরাউনের মন্ত্রিসভা) তোমাকে হত্যার পরামর্শ করছে, তাই তুমি বেরিয়ে যাও, নিশ্চয় আমি তোমার জন্য কল্যাণকামীদের একজন। তখন সে ভীত প্রতীক্ষারত অবস্থায় শহর থেকে বেরিয়ে পড়ল। বলল, হে আমার রব! আপনি অত্যাচারী সম্প্রদায় থেকে আমাকে রক্ষা করুন (সূরা কাসাস: ২০-২১)।’ বর্ণিত ঘটনাতে দেখা যাচ্ছে যে, হজরত মূসাকে (আ.) সতর্ককারী লোকটি শুধু বিশ্বাসগত কারণে ছুটে এসে হজরত মূসাকে (আ.) ফেরাউনের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক করছে। এই আয়াতের আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় হলো, একজন মুমিনের ইতিবাচক ব্যক্তিত্ব। অর্থাৎ মুমিনের একটি গুণ হলো ক্রিয়াশীলতা। ব্যক্তিকেন্দি কতা পরিত্যাগ করে অন্যের উপকারে দৌড়ে যাওয়া, অন্যের উপকারে মনোনিবেশ করা মুমিনের কাজ। শুধু নিজের কল্যাণ নয়; বরং অন্যের কল্যাণের প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে আসা। এর অন্যথা হলে একজন মুমিনকে ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের অধিকারী বলা যাবে না; বরং সে হবে নেতিবাচক ব্যক্তিত্বের অধিকারী, যে দীনের ও সমাজের জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারে না। তার এই ব্যর্থতা সামান্য কোনো ব্যর্থতা নয়, এটা ইমানেরও দুর্বলতা।