বিএনপি-জামায়াতের ‘সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে আ.লীগের শান্তি সমাবেশ

রাজপথে নৈরাজ্য প্রতিহতের প্রত্যয়
সমীকরণ প্রতিবেদন:
বিএনপি-জামায়াতের ‘দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপপ্রচারের’ প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার পৃথক আয়োজনে এ শান্তি সমাবেশ করে দলটির নেতা-কর্মীরা।
চুয়াডাঙ্গা:
বিএনপি-জামায়াতের ‘রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সকল উন্নয়ন ধ্বংস করার অপতৎপরতার’ বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গায় শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা শহরের শহিদ হাসান চত্বরের মুক্তমঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শান্তি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকে। আগামী দিনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। বিএনপি-জামায়াতকে বলব, জ্বালাও পোড়াও বাদ দিয়ে সুষ্ঠু রাজনীতি করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি দেশবাসী আমাদের চাই। এই দেশ গত ১৪ বছর যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আছে, দেশ যেভাবে উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে, এই দেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশের আজ পরিচিতি হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত এসব উন্নয়ন চায় না।’ এসময় তিনি বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পাড়া-মহল্লায় সকল নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস। তিনি বলেন বলেন, ‘এই সরকার যে উন্নয়ন করেছে, যে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, বাড়ির পাশে পাকা রাস্তা হয়ে গেছে, হাজার বছরের অন্ধকার এলাকার ঘরে ঘরে বিদ্যুতের বাতি গেছে। প্রত্যেক গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়েছে। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশে আছি আমরা। আজকে বিএনপি-জামায়াত আপনারা যায় মনে করেন, আমাদের নেত্রী বারবার বলেছে শান্ত পরিবেশকে আমরা অশান্ত করতে দেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যা করেছে, এই বাংলায় আর কোনো সরকার তা পারেনি। বিএনপি-জামায়াত আপনারা ষড়যন্ত্র করবেন না। দেশের মানুষ সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি ও দেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপি-জামায়াত পাগলের প্রলাপ করছে। ইউনিয়নে ইউনিয়নে রাজনৈনিতক কর্মসূচির নামে পদযাত্রার ডাক দিয়ে তামাশা করছে বিএনপি। তাদের মাঠে কোনো অস্তিত্ব নেই। আন্দোলন-কর্মসূচি ঘোষণার নামে জণগনের সাথে ঠাট্টা করা হচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।’
শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরি জিপু। তিনি বলেন, সকল সড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হলে, সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে। এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় ছিল, আমরা তখন বিরোধী দল ছিলাম। সেই মুহূর্তে আপনাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলাম। যখন আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছি, সেই মুহূর্তে আপনারা কী করেছেন? সেই সময় আমরা ভুলিনি, এই চুয়াডাঙ্গা জেলার জনগণও ভোলেনি। আমাদের মুখ বন্ধ করার জন্য, আমাদের পঙ্গু করার জন্য, হত্যা করার জন্য আপনারা আমাদের ওপর বিভিন্নভাবে হামলা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যখন বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে হাঁটছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্র হতে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ওই সব সন্ত্রাসীরা, আবার দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাই পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, চুয়াডাঙ্গা জেলার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করা হবে।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফির পরিচালনায় শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. আব্দুল মালেক, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য জুবায়ের আহমেদ সাব্বির, জেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান মতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি আক্তারুজ্জামান, আইনবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালেক, দপ্তর সম্পাদক জনি আহমেদ, জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন মিলন, সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক আব্দুল মতিন দুদু, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জুয়েল রানা, সদর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মাফিজুর রহমান মাফি, চুয়াডাঙ্গা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল হালিম ভুলন, সাধারণ সম্পাদক শেখ সামি তাপু, ১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ওয়াসিম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য গাজী ইমদাদুল হক সজল প্রমুখ। এসময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের কর্মসূচি:
‘দেশবিরোধী’ বিএনপি-জামায়াতের ‘সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে কেন্দ্র নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী যুবলীগের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল চারটায় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্বে জেলা যুবলীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহিদ হাসান চত্বরসহ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ হাসান চত্বরে শান্তি সমাবেশে অংশ নেয়।
মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, সিনিয়র সদস্য সাজেদুল ইসলাম লাভলু, সদস্য হাফিজুর রহমান হাপু, আবু বক্কর সিদ্দিক আরিফ ও আলমগীর আজম খোকা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা পিরু মিয়া, হাসানুল ইসলাম পলেন, কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল ইমরান শুভ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রামীম হোসেন সৈকত, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সামিউল শেখ সুইট, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য খালিদ মন্ডল, দিপু বিশ্বাস, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি রানা, সাধারণ সম্পাদক খান জাহান, ৫ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আলিম, সাধারণ সম্পাদক মিঠুন, ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আসাদ, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব, আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগ সদস্য সালাউদ্দিন, মমিনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমিন, পদ্মবিলা ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি বিপ্লব হোসেন, জেহালা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বকুল হোসেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন লোকমান, মোনাজাত, জাকির, সুমন, ইমরান, সোহাগ, রুবেল, সঞ্জু, জনি, জুয়েল, ইব্রাহিম, জিসান, সজীব, ছাত্রলীগ নেতা সিয়াদ, বিপুল, ওয়াসিম, সুজন, আলী প্রমুখ।
মেহেরপুর:
আওয়ামী লীগের জন্ম রাজপথে। আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে, রাজপথে থাকবে। বিএনপি-জামায়াত যদি রাজপথে কোনো সহিংসতা করে, তাহলে রাজপথেই প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপি। গতকাল শনিবার মেহেরপুর নগর উদ্যানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আন্দোলনের নামে দেশে বিএনপি যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল, জনগণ সেটা জানে। গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর, পেট্টল বোমা নিক্ষেপ, মানুষকে পুড়িয়ে মারা সবই ছিল সেই আন্দোলনে। সেই বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে। পেট্টল বোমা মেরে মানুষ হত্যাই হলো বিএনপির গণতন্ত্র।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহিনের সঞ্চালনায় শান্তি সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ খালেক, মেহেরপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বারাদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম মোমিন, বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা আইয়ুব হোসেন, বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ জামান, মেহেরপুর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মাহাবুবুল আলম শান্তি, মেহেরপুর মহিলা যুবলীগের আহ্বায়ক সামিরা বশিরা পলি এবং জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন।