পাল্টে গেল দৃশ্যপট, স্বস্তিতে যানবাহন চালকেরা

ডুগডুগি পশুর হাট : মহাসড়কে যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসনের কতিপয় নির্দেশনা
মোজাম্মেল শিশির:
দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি পশুর হাট বৃহত্তর হাটগুলোর মধ্যে একটি। প্রতি সপ্তাহের সোমবার এথানে হাট বসে। আর এই সোমবার দিনটি শুরু হলে যানবাহন চালকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়তেন। কারণ পশুর হাটটি প্রধান সড়করে পাশে হওয়ায় পশু ও পশু বহনকারী গাড়ি রাস্তার ওপর পার্কিং করা থাকত। ফলে সারা দিন যাজট লেগে থাকত। এ সমস্যা দূরীকরণে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন মানুষের যাতে ভোগান্তিতে না পড়তে হয়, সে জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ ধারাবাহিকতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার যানজট নিরসনে কতিপয় নির্দেশনা জারি করেন।
নির্দেশনাগুলো হলো- ডুগডুগি পশুর হাট চালাতে হলে পশুহাট সংলগ্ন মহাসড়কের উভয় পাশে বাঁশের বেড়া দিতে হবে, বাঁশের বেড়ার বাইরে গরু রাখা যাবে না। গরু বহন করা গাড়ি নসিমন, করিমন, ভটভটি, আলমসাধু ইত্যাদি হাটের মধ্যে প্রবেশ করানো যাবে না। স্বাস্থ্যবিধিসহ এসব বিষয় নিয়মিত মাইকের মাধ্যমে প্রচার করতে হবে। হাট ব্যবস্থাপনা কাজে সহযোগিতা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক/নিজস্ব বাহিনী রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক টিমকে নিজস্ব পোশাক, বাঁশি ও লাঠি সরবরাহ করতে হবে এবং তাদেরকে সার্বক্ষণিক কর্মঠ থাকতে হবে। সন্ধ্যা ৬টার পূর্বে গাড়ি ভিড়িয়ে হাট থেকে গরু ওঠানো নামানো করা যাবে না। মহাসড়কে যানযট হয়, কোনোভাবেই এ ধরণের কাজ করা যাবে না। মহাসড়ক ছেড়ে বাঁশের আড়া দিতে হবে লাল দড়ি দিয়ে।
উক্ত নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে কি না তা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহিউদ্দিন। তিনি এ হাট পরিদর্শনকালে পশুর হাটের পাশে মহাসড়কটি ছিল একেবারেই যানজটহীন রাস্তা। যা বোঝার কোনো উপায় ছিল না যে সোমবার ডুগডুগি পশুর হাট। দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ স্বেচ্ছসেবক টিমকে সহযেগিতা করে।
এদিকে, ডুগডুগি পশুর হাটের এমন দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান যানবাহন চালকেরা। এ বিষয়ে একজন বাসচালক বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে এই রোড়ে গাড়ি চালাচ্ছি। আজ রাস্তা ফাকা দেখে আমি অবাক হয়েছি। আজ কি হাটবার? পরে হাটের কাছাকাছি এসে দেখি সত্যিই তো আজ হাটবার। খুব ভালো লাগছে যে যানজট ছাড়ায় আমি গাড়ি চালিয়ে যেতে পারছি। আসলে আমাদের অনেক যাত্রী থাকে, কেউ কোর্টের কাজে কেউ অফিসে যায় আবার কেউ রোগীও থাকে। যানজটের কারণে আমাদের অনেক ভোগন্তিতে পড়তে হতো। এখন আর ভোগান্তি হবে না।’
এ বিষয়ে হাট মালিক জাহিদুল ইসলাম জনি বলেন, এই অঞ্চলের ডুগডুগি পশুর হাট একটি বৃহত্তম হাট। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহিউদ্দিন মহোদয় হাট চালানোর যে নিদের্শনাগুলো দিয়েছিলেন, আমরা যথাযথভাবে চেষ্টা করেছি নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করার। আমরা ৩২ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছি। তারা সঠিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে রাস্তায় কোনো যানজট নেই। নির্বিঘ্নে মানুষ চলাচল করছে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছি এবং মাস্ক ব্যবহার করার প্রাকটিস করাচ্ছি। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’
এদিকে, হাট পরিদর্শনকালে দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহিউদ্দিন বলেন, বহু দিনের একটি সমস্যার কারণে মানুষের ভোগান্তি পেতে হতো, তা নিরসন করায় আপনারা যেমন খুশি হয়েছেন, আমিও খুশি হয়েছি। সেই সঙ্গে পুলিশ বাহিনী, গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক, হাট ইজারাদার, সাংবাদিকসহ সংশ্লি¬ষ্ট সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে থাকার জন্য।’