দর্শনা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলার পাকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের ঝাঁঝাডাঙ্গা গ্রামের মৃত আজিজুল মন্ডলের ছেলে এবং কার্পাসডাঙ্গার বাঘাডাঙ্গায় আলোচিত খৃষ্টান পল্লীর ডাকাতি মামলার আসামী আনসারের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে দামুড়হুদা থানা পুলিশ। পুলিশের দাবী ডাকাতদলের আভ্যন্তরীন কোন্দলে আনসারের মৃত্যু হতে পারে। ২২সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে সাদা পোষাকে পুলিশ পরিচয়ে একদল লোক তাকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। গতকাল তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের পর এইটিকে ক্রস ফায়ার বলে নিহত আনসারের পরিবারের সদস্যরা দাবী করলেও পুলিশ তা অস্বীকার করে। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের মোক্তারপুর-কোমরপুর গ্রামের নলডাঙ্গা মাঠ থেকে গত শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে অজ্ঞাত হিসেবে দামুড়হুদা থানা পুলিশ আনসারের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। পুলিশের ধারণা বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১টা বা তার কিছু আগে-পরে কে বা কারা তাকে গুলি করে হত্যা করে লাশ মাঠে ফেলে রেখে যায়।
এবিষয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, খালি গায়ে চেক লুঙ্গি পরিহিত পিঠে ও বাম কানের উপরে মাথায় গুলিবিদ্ধ আনুমানিক ৫৫ বছর বয়স্ক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশটি ঘটনাস্থলে উপুড় হয়ে পড়ে ছিল বলে জানায়। পরে নিহতের ভগ্নিপতি একই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের নিজাম উদ্দীন উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত লাশটি তার শ্যালক আনসার আলীর বলে শনাক্ত করেন। সাদা পোষাকে পুলিশ পরিচয়ে একদল ব্যক্তি আনসারকে ২২সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় বলেও নিজাম উদ্দীন সাংবাদিকদের জানান। এদিকে নিহত আনছার আলীর চাচা জানায়, সে চাষাবাদ করে সংসার চালাতো, কিন্তু ৪/৫ দিন আগে আনছার আলীকে বাড়ি থেকে পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার ৫দিন পর সে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে এলো।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ মোঃ ফকরুল আলম জানান, নিহত আনসার একজন দূর্ধর্ষ ডাকাত। সম্প্রতি কার্পাসডাঙ্গার বাগাডাঙ্গা খ্রিষ্টান পল্লীতে সংঘঠিত ডাকাতি মামলাসহ সে ৭টি ডাকাতি মামলার আসামী। এছাড়া সে একটি বোমা হামলা মামলায় ১০ বছর সাজাভোগ শেষে ২০১৪ সালে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে আবারও ডাকাতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও জানান ডাকাতদলের নিজেদের অভ্যান্তরীন কোন্দলে সে নিহত হয়ে থাকতে পারে। আনসারের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় অস্ত্র, বোমা হামলা ও ডাকাতিসহ অর্ধ ডজন মামলা রয়েছে বলেও ওসি জানান। এদিকে নিহত আনসারের লাশ তার গ্রামে বাড়ী পৌছাঁলে সেখানে লাশ দেখতে উৎসুক জনতা ভীড় জমায়। এসময় নিহতের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ফরিদা, ৩ছেলেসহ আত্মীয় স্বজনকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়।