চুয়াডাঙ্গায় এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড
চলছে মাঝারি ধরণের তাপপ্রবাহ ; প্রচণ্ড গরমে পশু-পাখির অবস্থাও হাঁসফাঁস
রুদ্র রাসেল:
চুয়াডাঙ্গায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা আগের দিনের চেয়ে বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) এ জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে রোজাদারেরাসহ এ জেলার মানুষের জনজীবন। আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সব জিনিসপত্রই তেঁতে উঠেছে। ঘরের ট্যাপ দিয়ে বের হচ্ছে ফুটন্ত পানি। বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় মাথার ওপরে ফ্যানটাও দিচ্ছে গরম বাতাস। আবহাওয়া অফিস বলছে, এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে মাঝারি ধরণের তাপপ্রবাহ।
সাধারণত দিনের তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ভেতর থাকলে তাকে মাঝারি তাপদাহ হিসেবে ধরা হয়। আর ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বলে মৃদু তাপদাহ। আর ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপদাহ হিসেবে ধরা হয়। এর ওপরে উঠলে অতি উচ্চ তাপপ্রবাহ বলা হয় বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
আগুন ঝরা আবহাওয়ায় হাঁসফাঁস করছে চুয়াডাঙ্গার মানুষ। স্বস্তিতে নেই পশু-পাখিও। তীব্র গরম থেকে মুক্তির কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না! কাঠফাঁটা গরমে সবার যেন নাভিশ্বাস উঠেছে। এতে অস্থির হয়ে পড়ছে জনজীবন, বিশেষ করে শহুরে মানুষরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় মানুষ মাত্রাতিরিক্ত ঘামছেন। তাই বাইরে বের হলেই রোজাদাররাও কাহিল হয়ে পড়ছেন। গরমের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছের ছায়ায় অনেকেই বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। আর পথচারীরা ইফতারের আগে ভিড় করছেন ফুটপাতের শরবত এবং ডাব বিক্রেতাদের কাছে।
একটু বৃষ্টি ও শীতল হাওয়ার পরশ পেতে সাধারণ মানুষ যেন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্র ক্রমশ বেড়েই চলেছে। গত সোমবার (১৯ এপ্রিল) এ জেলার তাপমাত্র ছিল ৩৯ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রোববার (১৮ এপ্রিল) তাপমাত্র ছিলো ৩৯ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মজিবুল হক নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘গরমের কারণে ছাতা ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ার উপায় নেই। গরমে ঘরেও থাকা যায় না, আবার বাইরেও প্রচণ্ড তাপ। রোজার ুমাসে এমন গরম আগে দেখিনি। একটু কাজ করতে গেলে মনে হয় কলিজাটা শুকিয়ে যাচ্ছে। বেশিক্ষণ কাজ করা যাচ্ছে না।’
চুয়াডাঙ্গা কোর্ট মোড় এলাকার এক তরমুজ ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকাও কঠিন হয়ে পড়েছে। একটা পাখিও উড়তে দেখছি না। লকডাউনে মানুষের চলাচল কম তার ওপরে প্রখর রোদ। বেচা-কেনা একে বারেই হচ্ছে না।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, ‘এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে মাঝারি ধরণের তাপপ্রবাহ। এর আগে চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল গত সোমবার (১৯ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সুতরাং এটাই এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। গত কয়েকদিন ধরে এ জেলার তামপাত্রা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্র কমতে পারে।
