ইপেপার । আজ সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

নির্বাচনের উতল হাওয়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৮:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩৮৭ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের রাজনীতিতে চলছে নির্বাচনের উতল হাওয়া। পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিন চারিদিকেই ঘুর্ণিপাকে ঘুরছে এই হাওয়া। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী ২০১৯ জানুয়ারীর প্রথমার্ধের মধ্যেই নির্বাচন বার্ধতামূলক। নির্বাচন কমিশন আসছে অক্টোবরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘তফসিল’ ঘোষণা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একাধিক বক্তব্যে ডিসেম্বরে শেষ সাপ্তাহে ‘নির্বাচন’ এর বার্তা দেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের গণতন্ত্র চর্চার ওপর রাখছে সজাগ দৃষ্টি। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও দিল্লি ‘ছাতা তুলে নেয়ায়’ এবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর মতো নির্বাচনের নামে জনগণকে ‘বায়স্কোপ’ দেখানো, ‘প্রার্থী ভোটার বিহীন পাতানো নির্বাচন’ বা সিটি কর্পোরেশনের মতো ‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন’ সম্ভব নয়। অথচ নির্বাচনের ইশান কোণে এখনো কালো মেঘের ঘনঘটা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ অবস্থায় সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে সব পক্ষ্যের উচিত কমন গ্রাউন্ডে আসা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারীর মতে ‘সুযোগ থাকতেই আওয়ামী লীগের উচিত সংলাপের সুযোগ নেয়া। ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলো যদি মাঠে নামে তাহলে ২০০৭ সালে বিএনপির মতোই আওয়ামী লীগকে আমছালা দুটোই হারাতে হবে।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় আসার বিকল্প পথ খোলা নেই এই বাস্তবতা বুঝেই ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে ‘নির্বাচনে এবার জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় আসতে হবে’। দেশি-বিদেশী সব মহলেই নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। নির্বাচনী প্রচারণাও চলছে একপক্ষীয়। এ অবস্থায় ‘ষড়যন্ত্রতত্ত্ব’ আবিস্কার, সিইসির ‘কান্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুড়ির প্রতিযোগিতা চলছে। আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে ‘ক্ষমতা তো গেল, বেরোবেন কোন দিক দিয়ে’ হুমকি দেয়া হয়েছে। বিএনপি বলছে অক্টোরবকে কেন্দ্র করে তারা দল গুছিয়ে আনছেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন-এ দুই ইসু্যুতে আন্দোলনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করছে দলটি। তৃণমূল নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই এ রোডম্যাপ করা হয়। দলটি মাঠে নামার টার্গেট অক্টোবর করলেও পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে রাজপথে নামবে দলটি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই অবস্থায় সবার উচিত মাথা ঠান্ডা রেখে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির উচিত একগুঁয়েমি, গোয়ার্তুমির বদলে দায়িত্বশীল কথাবার্তা এবং আচরণ করা; যাতে সংলাপে জনগণের ভোট দেয়া নিশ্চিত করার পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব হয়।
দেশের বুদ্ধিজীবী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, ঢাকায় কর্মরত বিদেশী কূটনীতিক, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল সব সময় বলছেন, সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ সৃস্টি করা হোক। তাদের কথায় ভ্রুক্ষেপই করছে না ক্ষমতাসীন দল। অথচ বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন ইস্যুতে এই মূহুর্তে সংলাপ অপরিহার্য। কয়েকটি দলের নেতার সঙ্গে বৈঠকের জন্য গত সাপ্তাহে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দৌঁড়ঝাপের প্রেক্ষিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘টেলিফোন পেলেই আলোচনার ব্যাপারে সাড়া দেব। আমরা আলোচনার জন্য মুখিয়ে রয়েছি’। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শর্ত দিয়ে কোনো আলোচনা হবে না’। পরবর্তীতে তিনি বলেন, ‘স্বচ্ছ মন নিয়ে বিএনপি আলোচনার জন্য আসুক তাহলে আমরা সেই আলোচনার জন্য সব সময় প্রস্তুত। শর্তছাড়া রাজী হলে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে’। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘শুন্য টেবিলে তো আর আলোচনা হয় না। এ জন্য সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু থাকতে হবে। একটা সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে আলোচনা হওয়া দরকার সেই আলোচনার জন্য বিএনপি সব সময় প্রস্তুত।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

নির্বাচনের উতল হাওয়া

আপলোড টাইম : ০৮:৪৮:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের রাজনীতিতে চলছে নির্বাচনের উতল হাওয়া। পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিন চারিদিকেই ঘুর্ণিপাকে ঘুরছে এই হাওয়া। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী ২০১৯ জানুয়ারীর প্রথমার্ধের মধ্যেই নির্বাচন বার্ধতামূলক। নির্বাচন কমিশন আসছে অক্টোবরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘তফসিল’ ঘোষণা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একাধিক বক্তব্যে ডিসেম্বরে শেষ সাপ্তাহে ‘নির্বাচন’ এর বার্তা দেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের গণতন্ত্র চর্চার ওপর রাখছে সজাগ দৃষ্টি। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও দিল্লি ‘ছাতা তুলে নেয়ায়’ এবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর মতো নির্বাচনের নামে জনগণকে ‘বায়স্কোপ’ দেখানো, ‘প্রার্থী ভোটার বিহীন পাতানো নির্বাচন’ বা সিটি কর্পোরেশনের মতো ‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন’ সম্ভব নয়। অথচ নির্বাচনের ইশান কোণে এখনো কালো মেঘের ঘনঘটা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ অবস্থায় সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে সব পক্ষ্যের উচিত কমন গ্রাউন্ডে আসা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারীর মতে ‘সুযোগ থাকতেই আওয়ামী লীগের উচিত সংলাপের সুযোগ নেয়া। ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলো যদি মাঠে নামে তাহলে ২০০৭ সালে বিএনপির মতোই আওয়ামী লীগকে আমছালা দুটোই হারাতে হবে।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় আসার বিকল্প পথ খোলা নেই এই বাস্তবতা বুঝেই ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে ‘নির্বাচনে এবার জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় আসতে হবে’। দেশি-বিদেশী সব মহলেই নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। নির্বাচনী প্রচারণাও চলছে একপক্ষীয়। এ অবস্থায় ‘ষড়যন্ত্রতত্ত্ব’ আবিস্কার, সিইসির ‘কান্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুড়ির প্রতিযোগিতা চলছে। আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে ‘ক্ষমতা তো গেল, বেরোবেন কোন দিক দিয়ে’ হুমকি দেয়া হয়েছে। বিএনপি বলছে অক্টোরবকে কেন্দ্র করে তারা দল গুছিয়ে আনছেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন-এ দুই ইসু্যুতে আন্দোলনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করছে দলটি। তৃণমূল নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই এ রোডম্যাপ করা হয়। দলটি মাঠে নামার টার্গেট অক্টোবর করলেও পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে রাজপথে নামবে দলটি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই অবস্থায় সবার উচিত মাথা ঠান্ডা রেখে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির উচিত একগুঁয়েমি, গোয়ার্তুমির বদলে দায়িত্বশীল কথাবার্তা এবং আচরণ করা; যাতে সংলাপে জনগণের ভোট দেয়া নিশ্চিত করার পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব হয়।
দেশের বুদ্ধিজীবী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, ঢাকায় কর্মরত বিদেশী কূটনীতিক, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল সব সময় বলছেন, সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ সৃস্টি করা হোক। তাদের কথায় ভ্রুক্ষেপই করছে না ক্ষমতাসীন দল। অথচ বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন ইস্যুতে এই মূহুর্তে সংলাপ অপরিহার্য। কয়েকটি দলের নেতার সঙ্গে বৈঠকের জন্য গত সাপ্তাহে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দৌঁড়ঝাপের প্রেক্ষিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘টেলিফোন পেলেই আলোচনার ব্যাপারে সাড়া দেব। আমরা আলোচনার জন্য মুখিয়ে রয়েছি’। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শর্ত দিয়ে কোনো আলোচনা হবে না’। পরবর্তীতে তিনি বলেন, ‘স্বচ্ছ মন নিয়ে বিএনপি আলোচনার জন্য আসুক তাহলে আমরা সেই আলোচনার জন্য সব সময় প্রস্তুত। শর্তছাড়া রাজী হলে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে’। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘শুন্য টেবিলে তো আর আলোচনা হয় না। এ জন্য সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু থাকতে হবে। একটা সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে আলোচনা হওয়া দরকার সেই আলোচনার জন্য বিএনপি সব সময় প্রস্তুত।