মিঠুন মাহমুদ, জীবননগর:
জীবননগরে এবার নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশীসহ নানা জাতের আমগাছে উঁকি দিচ্ছে মুকুল। বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। উপজেলার নতুনপাড়া, রায়পুর, আন্দুলবাড়ীয়া, সদরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এবার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমচাষ করা হয়েছে। মাঘ মাসেই গাছে গাছে মুকুলের সুবাসে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আম চাষীদের মাঝেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভিন্ন আমেজ। মুকুল আসার আগে ঘন কুয়াশা না থাকার কারণে মৌসুমের আগেই আমগাছে মুকুল দেখা দিয়েছে। এ উপজেলাতে উল্লেখযোগ্য আমের জাতের মধ্যে রয়েছে বারি-৪, বারি-১১, আম্রপালি, আশ্বিনা ও ল্যাংড়া।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর বলছে, এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আমের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর আম চাষীরা অনেক আগে থেকে গাছের পরিচর্যা শুরু করেছেন। ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ থেকে আমের মুকুলকে সুরক্ষিত রাখতে কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হচ্ছে। বাগান মালিকেরা আশা করছেন ফাগুনের দুই সপ্তাহের মধ্যে জীবননগর উপজেলার প্রতিটি আমবাগানের গাছে গাছে মুকুলে ভরে যাবে।
গতকাল রোববার সকালে সরেজমিনে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকার বিভিন্ন বাগানে ঘুরে এসব দৃশ্য চোখে পড়ে। কথা হয় বাগান মালিকদের সঙ্গে। বাগান মালিকেরা জানান, মাঘের শুরুতে আমগাছের ডালে ডালে মুকুল ফুটতে শুরু করায় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা মুকুলের পরিচর্যা শুরু করেছেন। এ মাসের মধ্যেই সব গাছেই মুকুল ফুটবে বলে আশা করছেন তারা।
আমচাষী আদম আলী বলেন, গত বছর গাছে মুকুল এলেও তা ধরে রাখতে পারেনি। তাই এবার আগে থেকে মুকুলে ভিটামিন স্প্রে ও গাছের গোড়ায় সার দিয়ে পরিচর্যা করা শুরু করেছি। ফলে আম আসার সময় মুকুলের গোড়া শক্ত হবে। আবাহাওয়া ভালো থাকলে আমার বাগানের প্রতিটি গাছে ভালো ফলন হবে।’ আম ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমের মুকুল যেন নষ্ট না হয়, সে জন্য এন্টাকল, কনসিডর ও বেসিস নামের কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে গাছে হপার পোকার আক্রমণ, পাতা কাটা রোগ প্রতিরোধ হবে।’
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন আলী বলেন, ‘আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। কৃষকরা নিজ নিজ আমবাগানের পরিচর্যা শুরু করেছেন। কিছু কিছু গাছে সবেমাত্র মুকুল দেখা দিতে শুরু করেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ এবার আগে থেকেই চাষিদের সচেতন করেছে। বাগান মালিকেরা সারা বছর ধরে সার ও নিয়মিত সেচ দিয়ে গাছের পরিচর্যা করে আসছে।’
জীবননগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন জানান, এবার মাঘ মাসে বিভিন্ন গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। মূলত আবহাওয়াগত কারণে দেশীয় জাতের আমগাছে এই আগাম মুকুল দেখা যাচ্ছে। আবহওয়ার বিরূপ প্রভাব না পড়লে এবার বাম্পার ফলন হবে, যা বর্তমান গাছে গাছে মুকুলের অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।