ধর্ম ডেস্ক:নামাজের একটি অপরিহার্য বিষয় কেরাত পাঠ করা। ফজর, মাগরিব ও এশার নামাজে ইমাম উচ্চৈঃস্বরে কেরাত পাঠ করেন। আর জোহর ও আসরের নামাজে অনুচ্চৈঃস্বরে কেরাত পাঠ করেন। ইমাম যখন কেরাত পাঠ করেন তখন মুক্তাদিদের চুপ থাকতে হয়। হানাফি মাজহাব অনুযায়ী ইমামের পেছনে কোনোক্রমেই মুক্তাদি কেরাত পড়তে পারবে না। জুমা ও ঈদের নামাজেও উচ্চৈঃস্বরে কেরাত পাঠ করা হয়। একা একা নামাজের সময় অনুচ্চৈঃস্বরেই কেরাত পাঠ করতে হবে। নামাজে সূরা ফাতেহা ও অন্য কোনো সূরা বা এর অংশ তেলাওয়াত করতে হয়। বড় হলে কমপক্ষে এক আয়াত এবং ছোট হলে কমপক্ষে তিন আয়াত পাঠ করতে হয়। এছাড়া প্রত্যেক নামাজে কোরানের কোন অংশ থেকে তেলাওয়াত করবে এর একটি সুনির্দিষ্ট ভাগ আছে। ফজর ও জোহরের নামাজে দীর্ঘ সূরা পাঠের কথা বলা হয়েছে। ফজর ও জোহরের নামাজে তিওয়ালে মুফাসসাল অর্থাৎ ২৬ পারা সূরা হুজুরাত থেকে সূরা বুরুজ পর্যন্ত পড়ার কথা বলা হয়েছে। আসর ও এশার নামাজে আওসাতে মুফাসসাল অর্থাৎ সূরা বুরুজ থেকে সূরা লামইয়াকুন পর্যন্ত পড়ার কথা বলা হয়েছে। আর মাগরিবের নামাজে কিসারে মুফাসসাল অর্থাৎ সূরা জিলজাল থেকে নাস পর্যন্ত পড়ার কথা হাদিসে উল্লেখ আছে। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম সাধারণ এই নিয়ম মেনে কেরাত পাঠ করতেন। এর বাইরে যে কোনো নামাজে কোরানের যে কোনো স্থান থেকে তেলাওয়াত করলে নামাজ হয়ে যাবে এবং সওয়াবেও কোনো ঘাটতি আসবে না। ফজরের নামাজে ষাট থেকে একশ’ আয়াত তেলাওয়াতের কথা হাদিসে উল্লেখ আছে। রাসুল (সা.) জোহরের নামাজে সাধারণত দুই রাকাতে ত্রিশ আয়াত পরিমাণ পড়তেন। আসরের নামাজে দুই রাকাতে পনেরো আয়াত পরিমাণ পড়তেন। সফরের অবস্থায় এশার নামাজে ছোট সূরা পড়তেন। আর মুকিম অবস্থায় একটু দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। আর মাগরিবের নামাজে রাসুল (সা.) সবসময়ই ছোট ছোট সূরা তেলাওয়াত করতেন। মূলত কোন নামাজে কেরাত কতটুকু দীর্ঘ বা হ্রস করা হবে এটা নির্ধারিত হয় পরিস্থিতির ওপর এবং নামাজিদের দিকে লক্ষ্য করে। এমন দীর্ঘ কেরাত পড়তে নিষেধ করা হয়েছে যাতে অসুস্থ ও দুর্বল মানুষদের কষ্ট হয়। ইমাম সাহেব সবার দিকে লক্ষ্য করে পরিমিত কেরাত পাঠ করবেন সেটাই হলো হাদিসের নির্দেশনা।