দেশে ফিরেছে ইরাকে দালালের হাতে বন্দি জগন্নাথপুরের যুবক মনিরুল

দামুড়হুদা প্রতিনিধি : দামুড়হুদা থানা পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইরাকে দালালের হাতে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে জগন্নাথপুরের যুবক মনিরুল গতকাল মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ যুবক মনিরুলের দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন সে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে ঢাকায় পৌছেছে। আজ বুধবার যে কোন সময় সে দামুড়হুদায় পৌছুবে। এ দিকে মনিরুলের বাড়ি ফেরার অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তার পরিবারসহ স্বজনরা।
উল্লেখ্য, দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত ভিকু শেখের ছেলে দিনমজুর মনিরুল ইসলাম মনিকে মাসে ৪০ হাজার টাকা বেতনের কথা বলে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে মাস দুয়েক আগে ইরাকে নিয়ে যায় জগন্নাথপুরের আদম ব্যাপারি সবুর। ইরাকে পৌছে আদম ব্যাপারি সবুর ইরাকে অবস্থানরত জসিম ও হাসান নামের এক দালাল চক্রের কাছে মনিকে জিম্মায় রেখে কৌশলে দেশে ফেরে সবুর। সবুরের কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য ওই দালালচক্র মনিরুলের উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। ভেঙ্গে দেয়া হয় মুখের বেশ কয়েকটি দাঁত। উপড়ে নেয়া হয় হাতের নখ। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মনিরুল বিষয়টি তার ভাইদের জানায়। তাকে দেশে ফেরাতে পরিবারের লোকজন সহায় সম্বল বিক্রি করে ইরাকে অবস্থানরত দালাল চক্রের মূলহোতা হাসানের মামা মাগুরার হুণ্ডি ব্যবসায়ী ওলিয়ারের হাতে ৭ লাখ টাকা তুলে দেয়। এরপর ওই দালালচক্র মনিরের পরিবারের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মনিরুলকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তারা। এ ঘটনায় ইরাকে দালালের হাতে বন্দি মনিরের ভাই বুলবুল বাদি হয়ে জগন্নাথপুরের আদম ব্যাপারি সবুর, তার ভাই সুরাতসহ মোট ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলার মূল আসামি আদম ব্যাপারি সবুর ও তার ভাই সুরাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপরও বন্দিদশা থেকে মুক্তি মেলেনি মনিরুলের। এরপর শুরু হয় পুলিশি নাটক। গত বুধবার গভীর রাতে মাগুরার রাজপাট গ্রাম থেকে আটক করা হয় ইরাকে অবস্থানরত দালাল চক্রের মূলহোতা হাসানের মামা মাগুরার হুণ্ডি ব্যবসায়ী ওলিয়ারকে। তাকে আটকের পরই ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। মনিরুলকে দাও-ওলিয়ারকে নাও এ প্রস্তাবের পর ওলিয়ার মনিরুলকে ফেরত দিতে তার ভাগ্নে হাসানের উপর চাপ সৃষ্টি করে। ইরাকে অবস্থানরত দালালচক্রের মূলহোতা হাসান তার মামা ওলিয়ারকে মুক্ত করতে বন্দিদশা থেকে শেষমেষ মুক্তি দেয় মনিরুলকে।