সমীকরণ প্রতিবেদন:
দেশে করোনাভাইরাসের আরেকটি নতুন ধরন শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ ধরনটির নাম বি.১.৫২৫। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে এটি প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয়। একই মাসে নাইজেরিয়াতেও পাওয়া যায় ধরনটি। গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটার (জিআইএসএআইডি) তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একাধিক গবেষণাগারে এ ধরনের আটটি নমুনা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়টি শনাক্ত করেছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের বিজ্ঞানীরা। বাকি দুটির একটি ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স এ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভের এবং একটি শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করেছেন।
এ গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের একজন বলেন, আমাদের ইউরোপের সহকর্মীরা এখন পর্যন্ত এ ধরন নিয়ে যেসব তথ্য দিয়েছেন, তা কিছুটা উদ্বেগজনক। তবে এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সময় আসেনি। নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সে করে নতুন ধরন পাওয়ার ওই ফল গত ৮-১৯ এপ্রিলের মধ্যে জিআইএসএআইডির ডাটাবেজে প্রকাশ করা হয়েছে। ডাটাবেজের তথ্য অনুসারে, যেসব নমুনায় এটি শনাক্ত হয়েছে, সেগুলো ১১ মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। যে রোগীদের নমুনায় এই ধরন পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে একজন সুনামগঞ্জের। বাকি সবাই ঢাকার বিভিন্ন এলাকার। তাদের বয়স ২৩-৫৮ বছরের মধ্যে। এর আগে বাংলাদেশে বি.১.৩৫১ বা ৫০১.ভি২ নামে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন শনাক্ত হয়। এছাড়াও গত জানুয়ারিতে বি.১.১.৭ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাজ্যের আরেকটি ধরন শনাক্ত হয়। বি.১.৫২৫ নামের নতুন ধরন এখন পর্যন্ত ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াসহ ২৪টি দেশে পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটিরও কয়েকটি মিউটেশন হয়েছে। এর মধ্যে একটির নাম ই৪৮৪কে। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, এই মিউটেশনটি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের ধরনও পাওয়া গেছে। এটি এ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে ভাইরাসকে সাহায্য করে বলে ধারণা করছেন তারা। এছাড়া যুক্তরাজ্যের শনাক্ত হওয়া অতিমাত্রায় সংক্রামক ধরন বি.১.১.৭’র সঙ্গে নতুন বি.১.৫২৫ ধরনের সাদৃশ্য আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত মঙ্গলবার তাদের মহামারী সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেটে এ ধরনকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনের কারণেই তৈরি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফার্মাকোলজির অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ভাইরাসের মিউটেশন হওয়া খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ থাকলেও, মাস্কের সঠিক ব্যবহার কিন্তু আমাদের যেকোন মিউটেটেড ভাইরাস থেকেই সুরক্ষা দিতে পারে।
