দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত ১০

দামুড়হুদার গোবিন্দহুদায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় বাগবিতণ্ডা
প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদায় পরষ্পর বিরোধি বক্তব্য দেওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এক পক্ষের আহত ব্যক্তিরা হলেন- তানসার (৪৫), রনি (২৮), হানেফ (৫২), কুদ্দুস (৫৫), জলি খাতুন (৪০) ও ফিরোজা খাতুন (৭০)। এদেরকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর পক্ষের আহতরা হলেন- রনি (২৫), আশাদুল (৪০), শাহাবুল (৩০) ও রিনা খাতুন (৫০)। এদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামের নারী-সংক্রান্ত বিষয়ে তানসারের ছেলে রনির সঙ্গে একই গ্রামের আকালের ছেলে খোকনের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মারামারিতে রূপ নেয়। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা ও দেশিয় অস্ত্র হাসুয়া নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের গোবিন্দহুদা গ্রামের আশকারের ছেলে তানসার, তানসারের ছেলে রনি, ফয়েজ উদ্দীনের ছেলে হানেফ, রমজানের ছেলে কুদ্দুস, হানেফের স্ত্রী জলি, ফয়েজ উদ্দীনের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন, শহিদুলের ছেলে রনি, মুকবুল সর্দারের ছেলে আশাদুল ইসলাম, আকালে সর্দারের ছেলে শাহাবুল ও শহিদুলের স্ত্রী রিনা খাতুন রক্তাক্ত জখম হলে স্থানীরা তাঁদেরকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় হাসপাতাল চত্বরে আহত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় জনগণ ভিড় জমান। এতে করে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে দামুড়হুদা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই বাকি বিল্লাহ ও এসআই তৈহিদুর রহমান শেখ খবর পেয়ে হাসপাতাল চত্বরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আহত রনি জানান, ‘আমাদের গ্রামের খোকন আমার বলে, তোর স্ত্রীর সঙ্গে তোর চাচাতো ভায়ের খারাপ সর্ম্পক আছে। আমি বলি এসব বাজে কথার কী প্রমাণ আছে। সে বলে আমার কাছে সাক্ষী আছে। তখন সে সাক্ষী নিয়ে আসে। কিন্তু সাক্ষীরা বলে এ বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। আমার বউ খুব ভালো মানুষ। তার সম্পর্কে যদি কেউ খারাপ কথা বলে, তাহলে সহ্য করা যায়। তখন তর্কবির্তক হলে তার আত্মীয়রা এসে আমাদের হাসুয়া দিয়ে কোপ মারতে থাকে।’
চায়না খাতুনের মা জানান, ‘আমার স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে চায়না খাতুন রাতে দোকান থেকে বাড়ি আসছিল। এমন সময় জুড়নের ছেলে শাহাবুল বলে তোর প্রতিদিন বলি কথা শুনতে পাসনে। তখন আমার মেয়ে বলে তোর কথা কী শুনব। পাশে আমার নাতি ছেলের সঙ্গে সাদেকুলের মারামারি হলে রনি-জনি মিলে সবাই দা লাঠি লিয়ে এসে আামার নাতি ছেলে দেবরের মারতে থাকে।’
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ছয়জন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক জানান, রনির স্ত্রীর নিয়ে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো মামলা করেনি। মামলা করলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।