ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

দর্শনা পৌরসভায় ভিজিএফ এর চাউল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে

২০ কেজি বরাদ্দ থাকলেও ভাতাভোগীরা পাচ্ছেন ৯ কেজি!
দর্শনা অফিস: দর্শনা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডে ভিজিএফ এর চাউল বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে এসে চাউল বিতরন বন্ধ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার দায় স্বীকার করেছে। জানা গেছে, সরকার কর্তৃক ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে গরীব ও দুস্থদের জন্য প্রত্যেক ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিনামূল্যে চাউল বিতরন কার্যক্রম চালু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে দর্শনা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ভাতাভোগীদের মাঝে চাউল বিতরন শুরু করে পৌর কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার। এসময় সঠিকভাবে চাউল বিতরনের জন্য দায়িত্ব পালনের কথা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ট্যাগ অফিসার ডা. মশিউর রহমান।
চাউল বিতরণে প্রত্যেক সুবিধাবোগীদের ২০ কেজি চাউল বরাদ্দ থাকলেও ভাতাভোগীরা অভিযোগ করে তারা কেউ ৯ কেজি কেউ ১১ কেজি ৩শ’ গ্রাম আবার কেউ ১৩ কেজি চাউল পেয়েছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সুধীমহল ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতার প্রমাণ পায়। তাৎক্ষনিক বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। অভিযোগ অনুযায়ী জয়নগর ক্যাম্পপাড়ার বিশ্বনাথ অধিকারীর স্ত্রী নমীতা রানী দেওয়া চাউল ওজন করলে দেখা যায় ২০ কেজি চাউলের পরিবর্তে ১৩ কেজি চাউল দেওয়া হয়েছে। আরও একজন ভাতাভোগী জয়নগর গ্রামের হীমচাঁদের স্ত্রী কুলসম খাতুনের চাউলের ব্যাগ ওজন করলে ২০ কেজি চাউলের পরিবর্তে ৯ কেজি ৩শ’ গ্রাম চাউল দেওয়া হয়েছে। এভাবে ৫জন ভাতাভোগীর চাউল ওজন দিলে দেখা যায় কারও ১৩ কেজি উপরে চাউল দেওয়া হয়নি। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাউল বিতরন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ততোক্ষনে ৮নং ওয়ার্ডের ৩৩৫ জন ভাতা ভোগীদের মধ্যে ২৭০জন ভাতাভোগীর চাউল বিতরন সমাপ্ত হয়েছে।
এসময় কর্তৃপক্ষের জবাবে কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার নিজের মুখে দায় স্বীকার করে বলেন, যেহেতু পৌরসভায় চাউল বিতরন করা হয়েছে সেহেতু এখান থেকে চাউল নেওয়ার কারও সুযোগ নেই। এ অনিয়মের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে গরীব ও দুস্থ মানুষের সংখ্যা বেশি। তাই সকল দুস্থব্যক্তি যাতে সরকারের এ সুবিধা থেকে বাদ না পড়ে সেজন্য সকলের বরাদ্দকৃত চাউলের থেকে কিছু নেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে দর্শনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র রবিউল হক সুমন জানায়, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। সে এ ধরনের ব্যক্তি নয়। সে একজন প্রতিবন্ধী। তার বিরুদ্ধে বিগত দিনে কোন অভিযোগ নেয়। তাছাড়া কারও এখান থেকে চাউল নিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। হয়তো তার ওয়ার্ডের তালিকার বাইরের দুস্থ ও গরীবদের দেওয়ার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এবিষয়ে ট্যাগ অফিসারের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ ওঠে। দেকভালের জন্য তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন এ ঘটনা ঘটেছে। এবিষয়ে প্রাণী সম্পদ অফিসার বলেন, আমি থাকাকালীন এ ধরনের কোন অনিয়ম হয়নি। দুপুরের সময় আামি খেতে গিয়েছিলাম তখন এ সমস্যা হয়েছে বলে জানায় ডা. মশিউর রহমান। এবিষয়ে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অফিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে এবং তিনি এ ঘটনা শুনার পর ওই ওয়ার্ডের চাউল বিতরন বন্ধ করে দিতে বলেছেন। পরবর্তীতে তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনা পৌরসভায় ভিজিএফ এর চাউল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

আপলোড টাইম : ০৯:২৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৮

২০ কেজি বরাদ্দ থাকলেও ভাতাভোগীরা পাচ্ছেন ৯ কেজি!
দর্শনা অফিস: দর্শনা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডে ভিজিএফ এর চাউল বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে এসে চাউল বিতরন বন্ধ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার দায় স্বীকার করেছে। জানা গেছে, সরকার কর্তৃক ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে গরীব ও দুস্থদের জন্য প্রত্যেক ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিনামূল্যে চাউল বিতরন কার্যক্রম চালু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে দর্শনা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ভাতাভোগীদের মাঝে চাউল বিতরন শুরু করে পৌর কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার। এসময় সঠিকভাবে চাউল বিতরনের জন্য দায়িত্ব পালনের কথা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ট্যাগ অফিসার ডা. মশিউর রহমান।
চাউল বিতরণে প্রত্যেক সুবিধাবোগীদের ২০ কেজি চাউল বরাদ্দ থাকলেও ভাতাভোগীরা অভিযোগ করে তারা কেউ ৯ কেজি কেউ ১১ কেজি ৩শ’ গ্রাম আবার কেউ ১৩ কেজি চাউল পেয়েছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সুধীমহল ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতার প্রমাণ পায়। তাৎক্ষনিক বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। অভিযোগ অনুযায়ী জয়নগর ক্যাম্পপাড়ার বিশ্বনাথ অধিকারীর স্ত্রী নমীতা রানী দেওয়া চাউল ওজন করলে দেখা যায় ২০ কেজি চাউলের পরিবর্তে ১৩ কেজি চাউল দেওয়া হয়েছে। আরও একজন ভাতাভোগী জয়নগর গ্রামের হীমচাঁদের স্ত্রী কুলসম খাতুনের চাউলের ব্যাগ ওজন করলে ২০ কেজি চাউলের পরিবর্তে ৯ কেজি ৩শ’ গ্রাম চাউল দেওয়া হয়েছে। এভাবে ৫জন ভাতাভোগীর চাউল ওজন দিলে দেখা যায় কারও ১৩ কেজি উপরে চাউল দেওয়া হয়নি। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাউল বিতরন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ততোক্ষনে ৮নং ওয়ার্ডের ৩৩৫ জন ভাতা ভোগীদের মধ্যে ২৭০জন ভাতাভোগীর চাউল বিতরন সমাপ্ত হয়েছে।
এসময় কর্তৃপক্ষের জবাবে কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার নিজের মুখে দায় স্বীকার করে বলেন, যেহেতু পৌরসভায় চাউল বিতরন করা হয়েছে সেহেতু এখান থেকে চাউল নেওয়ার কারও সুযোগ নেই। এ অনিয়মের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে গরীব ও দুস্থ মানুষের সংখ্যা বেশি। তাই সকল দুস্থব্যক্তি যাতে সরকারের এ সুবিধা থেকে বাদ না পড়ে সেজন্য সকলের বরাদ্দকৃত চাউলের থেকে কিছু নেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে দর্শনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র রবিউল হক সুমন জানায়, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চান্দু মাস্টার আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। সে এ ধরনের ব্যক্তি নয়। সে একজন প্রতিবন্ধী। তার বিরুদ্ধে বিগত দিনে কোন অভিযোগ নেয়। তাছাড়া কারও এখান থেকে চাউল নিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। হয়তো তার ওয়ার্ডের তালিকার বাইরের দুস্থ ও গরীবদের দেওয়ার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এবিষয়ে ট্যাগ অফিসারের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ ওঠে। দেকভালের জন্য তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন এ ঘটনা ঘটেছে। এবিষয়ে প্রাণী সম্পদ অফিসার বলেন, আমি থাকাকালীন এ ধরনের কোন অনিয়ম হয়নি। দুপুরের সময় আামি খেতে গিয়েছিলাম তখন এ সমস্যা হয়েছে বলে জানায় ডা. মশিউর রহমান। এবিষয়ে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অফিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে এবং তিনি এ ঘটনা শুনার পর ওই ওয়ার্ডের চাউল বিতরন বন্ধ করে দিতে বলেছেন। পরবর্তীতে তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।