দর্শনায় সমবায় সমিতির নামে চলছে প্রতারণা: তদন্তের দাবি
- আপলোড টাইম : ১১:১৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুলাই ২০১৮
- / ৭৪০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় নামে বেনামে গড়ে উঠেছে কয়েক ডজন সমবায় সমিতি। আর এসব নামে বেনামে গড়ে ওঠা সমবায় সমিতিগুলো সরকারী নিয়মনীতি না মেনে প্রতিনিয়ত প্রতারনা করে আসছে। যা দেখে হতবাক অনেকেই।
বিশেষ সুত্রে জানা গেছে, দর্শনায় চোখে পড়ার মতো শুধুমাত্র দর্শনা সোসাইটি লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটি নানা দিক থেকে এগিয়ে। এ প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ সরকারী নিয়মনীতি মেনে তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলেও বাকি যেসব সমবায় নামক সমিতি রয়েছে এদের অধিকাংশই সমবায় সমিতি ও সরকারী নিয়মনীতি মানছে না। দর্শনায় যত্রতত্র গড়ে ওঠা সমবায় সমিতির মধ্যে আলোকিত সঞ্চয় ও ঋনদান সমবায় সমিতি নামক প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত সমবায় সমিতির নিয়মনীতি না মেনে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে। যা দেখে দর্শনার সচেতন ব্যক্তিবর্গ হাস্ব্যেজ্জল কন্ঠে বলেন, আর কত সমবায় সমিতি দেখবো আজ এ সমিতি কাল ও সমিতি এসব ধান্দা। শুধু তাই নয় দেখা গেছে, আলোকিত সঞ্চয় ও ঋণদান নামক সমবায় সমিতি সংস্থাটি কিছুদিন আগে সাইনবোর্ড বিহীন তাদরে কার্যালয় করে ছিলো দর্শনা পুরাতন বাজার হাটের মধ্যে একটি বাশের চট দিয়ে বানানো ঘড়ে আবার এখন দেখা যাচ্ছে যে, এ সংস্থাটি ওখান থেকে সটকে পড়ে তাদের সাইনবোর্ড বিহীন কার্যালয় খুলেছে দর্শনা পুরাতন বাজার রাবেয়া সুপার মার্কেটের নিচ তলায়।
অনেকে বলে এটা সমিতি নাকি অন্য কিছু আজ হাটের ভিতর কাল ওখানে আবার কিছুদিন পরে দেখা যেতে পারে যে, তাদের কার্যালয়ই উধাও “তখন ধর তক্তা মারপিট”। এছাড়াও আমরা সাধারনত জানি যে সমিতি মানে বড় হিসেব নিকেসের কাজ। এর জন্য যে সমিতির লেনদেনসহ টাকা পয়সার হিসেব রাখবে তাকে মোটামুটি শিক্ষিত হতে হবে কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, উক্ত প্রতিষ্ঠানটির ফিল্ডে কাজ করে একজন ব্যক্তি তিনি তেমন কোনো শিক্ষিত না। আরও দেখা গেছে, তাদের ঋণের পাশ বইয়ের শেষ পাতায় স্পষ্ট লেখা আছে ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত কোনো গ্রাহক সঞ্চয়ের টাকা উত্তলন করতে পারবে না, অথচ উক্ত প্রতিষ্ঠানের একজন গ্রাহকের পাশ বই যাচাই করার সময় দেখা গেছে যে, তিনি ঋণ পরিশোধ না করে সঞ্চয় উত্তলন করেছে পরে ঋণ পরিশোধ করেছে তাদের কাছে নতুন ঋণ নিয়ে। উপরোক্ত বিষয়ে আলোকিত সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি পাশ বইয়ের শেষ পাতায় অফিস/প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য যে মোবাইল নাম্বার দেওয়া রয়েছে তাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের কে তা জানতে চাইলে পরিচয় দিতে গড়িমিসি করে।
এছাড়াও আর এক প্রশ্ন করা হয় যে, সাইনবোর্ড ছাড়া আপনারা কিভাবে প্রতিষ্ঠানের অফিস কার্যালয় চালু করেছেন জবাবে বলেন, সাইনবোর্ড তৈরী করতে দেওয়া হয়েছে। তবে সচেতন ব্যক্তিদের কাছে প্রশ্ন যে, প্রতিষ্ঠান অর্ধবছর ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে তার সাইনবোর্ড বানাতে কি বছর শেষ হয়ে যাবে। পরে আরও প্রশ্ন করা হলে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেয়। সমবায়ের নিবন্ধন সংক্রান্ত নিতীমালায় দেখা গেছে, সরকারি তহবিলে মাত্র ৩০০ টাকা জামানত ফি দিয়েই যে কেউ নিতে পারেন এ ধরনের সমবায় সমিতি চালুর সনদ। সমবায় সমিতি খোলার এই সহজ নিয়মের কারণে দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে। এ ধরনের সমবায় নামে বিভিন্ন হায় হায় কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণামূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছে সমিতি। আর এভাবেই বিস্তৃত হচ্ছে প্রতারণার জাল। এ অবস্থায় সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠার বিদ্যমান বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রতারণা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্বভাবতই সমবায় সমিতির ব্যাপারে জনমনে বিভ্রান্তি ও অনাস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ সমবায় একটি ভালো আর্থিক কার্যক্রম। সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত সমবায়ের মাধ্যমে দেশে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশের বিপর্যয় মোকাবেলা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সমবায়ী উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কাজেই এ খাতকে প্রতারক চক্রের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে অবিলম্বে।