ইপেপার । আজ রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

দত্তনগর পাথিলা কৃষি খামারের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্ত্রীর গাড়ি চালককে খামারের কর্মী সাজিয়ে বেতন উত্তোলন

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৪:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৯৯ বার পড়া হয়েছে

লুটপাটের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এশিয়ার বৃহত্তম ঝিনাইদহের দত্তনগর কৃষি খামারটি। যে যেমন পাচ্ছে লুটেপুটে খেয়ে আখের গুছিয়ে চলে যাচ্ছেন। এবার পাথিলা ফার্মের উপ-পরিচালক কামাল উদ্দীনের স্ত্রীর ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভারকে খামারের কর্মী হিসেবে সরকারি বেতন প্রদানের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

তথ্য বলছে, দুই বছর আগে এই ফার্মের উপ-পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন মো. কামাল উদ্দিন। তাঁর নামে আগেও অনেক অনিয়মের অভিযোগ ছিল। কামাল উদ্দিন এবার তার স্ত্রীর ব্যবহৃত গাড়ির ড্রাইভার রিপন বিশ্বাসকে পাথিলা ফার্মের শ্রমিক হিসেবে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ মাস ধরে বেতন দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফার্মের উপ-পরিচালক পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের ঝিনুক টাওয়ারে বসবাস করেন। তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৫০০৪) রয়েছে। এই গাড়ি চালানোর জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় ঝিনাইদহ পৌরসভার উদয়পুর গ্রামের মো. ইনতাজ বিশ্বাসের ছেলে মো. রিপন বিশ্বাসকে। রিপন পেশাদার গাড়িচালক। তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। গত ৫ মাস রিপন বিশ্বাসকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর শাখা সোনালী ব্যাংকের একটি হিসাবে বেতন দেওয়া হচ্ছে। এর আগে দত্তনগরের পাথিলা ফার্মের শ্রমিক হিসেবে রিপন বিশ্বাসের একটি স্যালারি অ্যাকাউন্ট খোলা হয় জীবননগর সোনালী ব্যাংক শাখায়।

গত মাসের শেষের দিকে রিপন বিশ্বাসের অ্যাকাউন্টে ৩ লাখ ১২ হাজার টাকার একটি ট্রানজেকশন হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় ভুলের কারণে এটি হয়েছে। এরমধ্যে রিপন বিশ্বাস আবার এই টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করে খরচ করে ফেলেন। যে কারণে বাধ্য হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ঝিনাইদহ শহরে টাকা উদ্ধারের জন্য আসতে হয়। তখন রিপন বিশ্বাস মূলত পাথিলা ফার্মের উপ-পরিচালক মো. কামাল উদ্দিনের স্ত্রীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক হলেও ফার্মের শ্রমিক দেখিয়ে তার বেতন পরিশোধের বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগ উঠেছে, এমন অনেক নামে-বেনামে শ্রমিক সাজিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন দত্তনগরের ৫টি ফার্মের উপ-পরিচালকেরা।

ড্রাইভার রিপন বিশ্বাস খবর নিশ্চিত করে জানান, ‘কামাল স্যার আমাকে জীবননগর শাখা সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করতে বলেছিল। তবে আমি খামারে কাজ করি না। কামাল স্যারের পরিবার থাকে ঝিনাইদহ শহরের ঝিনুক টাওয়ারে। আমি তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চালায়।’

এ বিষয়ে কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে তাকে নিয়োগ দিয়েছি। আমার ফার্মে দুই শতাধিক কর্মী কাজ করেন। রিপন বিশ্বাসও তেমনি হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে আমার বাঁচ্চাদের আনা নেওয়ার কাজ করেন। সরকারিভাবেই তার বেতন দেওয়া হয় সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে। তিনি বলেন, এতে কোনো অনিয়ম নেই।

এ বিষয়ে জানতে অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম কামরুজ্জামানের মোবাইলে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দত্তনগর পাথিলা কৃষি খামারের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্ত্রীর গাড়ি চালককে খামারের কর্মী সাজিয়ে বেতন উত্তোলন

আপলোড টাইম : ০৮:৪৪:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লুটপাটের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এশিয়ার বৃহত্তম ঝিনাইদহের দত্তনগর কৃষি খামারটি। যে যেমন পাচ্ছে লুটেপুটে খেয়ে আখের গুছিয়ে চলে যাচ্ছেন। এবার পাথিলা ফার্মের উপ-পরিচালক কামাল উদ্দীনের স্ত্রীর ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভারকে খামারের কর্মী হিসেবে সরকারি বেতন প্রদানের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

তথ্য বলছে, দুই বছর আগে এই ফার্মের উপ-পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন মো. কামাল উদ্দিন। তাঁর নামে আগেও অনেক অনিয়মের অভিযোগ ছিল। কামাল উদ্দিন এবার তার স্ত্রীর ব্যবহৃত গাড়ির ড্রাইভার রিপন বিশ্বাসকে পাথিলা ফার্মের শ্রমিক হিসেবে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ মাস ধরে বেতন দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফার্মের উপ-পরিচালক পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের ঝিনুক টাওয়ারে বসবাস করেন। তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৫০০৪) রয়েছে। এই গাড়ি চালানোর জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় ঝিনাইদহ পৌরসভার উদয়পুর গ্রামের মো. ইনতাজ বিশ্বাসের ছেলে মো. রিপন বিশ্বাসকে। রিপন পেশাদার গাড়িচালক। তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। গত ৫ মাস রিপন বিশ্বাসকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর শাখা সোনালী ব্যাংকের একটি হিসাবে বেতন দেওয়া হচ্ছে। এর আগে দত্তনগরের পাথিলা ফার্মের শ্রমিক হিসেবে রিপন বিশ্বাসের একটি স্যালারি অ্যাকাউন্ট খোলা হয় জীবননগর সোনালী ব্যাংক শাখায়।

গত মাসের শেষের দিকে রিপন বিশ্বাসের অ্যাকাউন্টে ৩ লাখ ১২ হাজার টাকার একটি ট্রানজেকশন হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় ভুলের কারণে এটি হয়েছে। এরমধ্যে রিপন বিশ্বাস আবার এই টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করে খরচ করে ফেলেন। যে কারণে বাধ্য হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ঝিনাইদহ শহরে টাকা উদ্ধারের জন্য আসতে হয়। তখন রিপন বিশ্বাস মূলত পাথিলা ফার্মের উপ-পরিচালক মো. কামাল উদ্দিনের স্ত্রীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক হলেও ফার্মের শ্রমিক দেখিয়ে তার বেতন পরিশোধের বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগ উঠেছে, এমন অনেক নামে-বেনামে শ্রমিক সাজিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন দত্তনগরের ৫টি ফার্মের উপ-পরিচালকেরা।

ড্রাইভার রিপন বিশ্বাস খবর নিশ্চিত করে জানান, ‘কামাল স্যার আমাকে জীবননগর শাখা সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করতে বলেছিল। তবে আমি খামারে কাজ করি না। কামাল স্যারের পরিবার থাকে ঝিনাইদহ শহরের ঝিনুক টাওয়ারে। আমি তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি চালায়।’

এ বিষয়ে কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে তাকে নিয়োগ দিয়েছি। আমার ফার্মে দুই শতাধিক কর্মী কাজ করেন। রিপন বিশ্বাসও তেমনি হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে আমার বাঁচ্চাদের আনা নেওয়ার কাজ করেন। সরকারিভাবেই তার বেতন দেওয়া হয় সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে। তিনি বলেন, এতে কোনো অনিয়ম নেই।

এ বিষয়ে জানতে অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম কামরুজ্জামানের মোবাইলে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।