সমীকরণ প্রতিবেদন:
তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লিদের ঢল এখন টঙ্গীর তুরাগ তীরে। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর ইজতেমা বন্ধ থাকার পর এ বছর ইজতেমায় বেশিসংখ্যক মুসল্লি যোগ দেবেন বলে আশা করছেন ইজতেমার আয়োজকরা। ইতিমধ্যে ইজতেমার ময়দান মুসল্লিদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। তার পরও মুসল্লিদের ঢল থেমে নেই। প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, ট্রাক, ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসছেন। রাজধানী ঢাকাসহ টঙ্গীর চার পাশ থেকে সব মানুষের স্রোত মিশে যাচ্ছে তুরাগ তীরে। আজ শুক্রবার বাদ ফজর থেকে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আম বয়ান করবেন তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বি পাকিস্তানের হজরত মাওলানা জিয়াউল হক। তবে বৃহস্পতিবার বাদ আসর থেকে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতিমূলক বয়ান দেওয়া হয়। এতে ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের তিন দিন অবস্থানের নিয়মকানুন সম্পর্কে বলা হয়। আজ শুক্রবার প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি এক জামাতে শরিক হয়ে জুমার নামাজ আদায় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রবিবার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ২০ জানুয়ারি। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমায় সর্বাত্মক নিরাপত্তায় থাকবে পুলিশ। দায়িত্বে কোনো পুলিশ সদস্যের গফিলতি সহ্য করা হবে না। অন্য দিকে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন বলেছেন, ইজতেমা চলাকালে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মুসল্লিদের বহনকারী যানবাহনের জন্য ১৪টি পার্কিং পয়েন্ট রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গাজীপুরের ইজতেমায় দায়িত্বপালনকারী পর্যাপ্তসংখ্যক চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন থাকবে। গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো, খায়রুজ্জামান বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। ইজতেমা ময়দানে ১০টি অস্থায়ী মেডিক্যাল টিম মুসল্লিদের চিকিৎসা দেবে। বিশেষায়িত মেডিক্যাল টিম রয়েছে ছয়টি। ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান জানান, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকাণ্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় থাকে। বিশ্ব ইজতেমার সব দিক জেলা প্রশাসন পর্যবেক্ষণ করে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ জানান, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি পৃথক কন্টোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মাঠে মুসল্লিদের স্থান সংঙ্কুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে টঙ্গীতে দুই পর্বে বিশ্বইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
