তিন সিটির নির্বাচন: ফুরফুরে আ. লীগ, বিএনপিতে শঙ্কা
- আপলোড টাইম : ০৯:৩৬:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুলাই ২০১৮
- / ৩০৮ বার পড়া হয়েছে
ডেস্ক রিপোর্ট: রাত পোহালেই তিন সিটিতে ভোট। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটির ভোটের হাওয়া এখন ঢাকাসহ সারাদেশে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে ইসির নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে ব্যর্থতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার, মামলা ও ভয়ভীতির অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। ভোটের ঠিক আগমুহূর্তে এসে বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের মুখে নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ নিয়ে শঙ্কার সুর আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বিরোধী নেতা ও প্রার্থীর এজেন্টদের গ্রেপ্তার-হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তিন সিটিতে প্রতিদ্বন্দিতাকারী বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের মুখে মুখে। নির্বাচন কমিশনে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাবে না উচ্চ আদালত ও ইসির নির্দেশনা সত্ত্বেও তা মানা হচ্ছে না বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে আগামীকালের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কিনা তা নিয়ে বিএনপির যেমন শঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে, তেমনি তিন সিটির সাধারণ মানুষের মধ্যেও এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ রকম শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যেই কাল (সোমবার) তিন সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ-র্যাব ও আনসারের পাশাপাশি তিন সিটিতে মোট ৪৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী ও বরিশালে ১৫ প্লাটুন করে এবং সিলেটে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া আরও ৪ প্লাটুন করে প্রত্যেক সিটিতে রিজার্ভ রাখা হয়েছে বিজিবি। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণে নির্বাচন কমিশন তিন সিটিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রধান সমন্বয়কারী করে জেলা-উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে তিন সিটির এই নির্বাচন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যেমন গুরুত্বসহকারে নিয়েছে, তেমনি নির্বাচন কমিশনের জন্যও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া। তবে শেষ মুহূর্তে কী হয় এই তিন সিটিতে এ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা ও ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। রাজশাহী ও সিলেটে জোটগতভাবে বিএনপির প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও সিলেটে জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীকেও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে তিন সিটিতেই দলগত ও জোটগত সমর্থনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
তিন সিটি নিয়ে প্রশাসনের জরিপে উঠে এসেছে, রাজশাহীতে ১৩৮টি কেন্দ্রের ১১৪টিই ঝুঁকিপূর্ণ! সিলেটে ঝুঁকিপূর্ণ অর্ধেকেরও বেশি, ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টি ঝুঁকিপূর্ণ! এছাড়া বরিশালের ১২৩টি ভোটকেন্দ্রের ১১২টিই ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। তিন সিটির ৩৯৫ কেন্দ্রের ৩০৬টিই ঝুঁকিপূর্ণ। মাত্র ৮৯টি কেন্দ্র রয়েছে ঝুঁকি ছাড়া। সবমিলিয়ে তিন সিটির ৭৭ শতাংশ কেন্দ্রই রয়েছে ঝুঁকিতে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে ইসির নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে ব্যর্থতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার, মামলা ও ভয়ভীতির অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। নির্বাচনের প্রচারণা রাতেই শেষ হলো। ইতোমধ্যে গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনি এলাকায় বহিরাগতদের অবস্থান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, তিন সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি ছাড়াও কয়েকটি দলের প্রার্থী থাকায় নির্বাচনি এলাকায় বিরাজ করছে রাজনৈতিক উত্তাপ। এজন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের মাঠে রাখা হয়েছে। তারা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনি এলাকাগুলোতে টহল দেবেন। পাশাপাশি অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও রয়েছেন নির্বাচনি এলাকায়। তারা মঙ্গলবার পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।