আকিমুল ইসলাম: বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। বিশ্বের বুকে মানচিত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি দেশের নাম বাংলাদেশ। দীর্ঘ নয় মাস প্রতিক্ষার পর অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আর বুকের তাজা রক্ত ছাড়াও অনেক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই বাংলাদেশ। কিন্তু যারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে নিঃশর্তে বাংলাদেশকে পাকিস্তানদের অত্যাচারের কবল থেকে মুক্ত করতে ঝাপিয়ে পড়েছিলে যুদ্ধে আমরা কতজন রাখি তাদের খবর! এজন্যই কি তারা জীবনের মায়া ছেড়ে নেমেছিলো যুদ্ধে? তাদের অনেকেই এখন ঠিক মতো না পারছে খেতে না পারছে পড়তে আর প্রাপ্য সম্মান তো বাদই দেওয়া হলো। ঠিক তেমনই এক মহান মুক্তিযোদ্ধার কথা উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহের গড়াইটুপির (ত্রিপুরাপাড়া) মরহুম বিলাত আলীর পুত্র সহকারী মুক্তিযোদ্ধা ওমবাদ (৭২) আলীর কথা। দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে কোনো রকম ভাবে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী এক পুরুষের নাম ওমবাদ আলী। পরের জমিতে দিনমুজুর আর গরু দেখাশোনার মধ্য দিয়েই কাটে তার দিন। বয়স ৭০রের তালিকা ছেড়ে গেলেও এখনো পরিবারের হাল ধরতে হয় ওমবাদ হোসেনকেই। আর পরিবারের অবস্থা, সেতো নুন আন্তেই পান্তা ফুরায়। এক দিন কাজ করতে না পারলে আর পরিবারের কারো মুখে অন্ন ওঠে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দোচালা টিনের শীটের মাটির একটি ঘরেই তার বসবাস। ঘরের চালের দিকে তাকালেই চাল দিয়ে পরিষ্কার ভাবে আসমান দেখা যায়। বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায় সমস্ত জিনিস। ওমবাদের স্বরণাপন্ন হলে ওমবাদ দু’চোখের পানি ছেড়ে বলেন, এজন্যই কি আমি জীবনের মায়া ত্যাগ করে পরিবারকে একা ফেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে সাড়া দিয়ে গেছিলাম যুদ্ধে। জীবনে কি পেলাম। না একটু সম্মান না মুক্তিযোদ্ধা কার্ড। বাংলাদেশ সরকার শেখ মুজিবের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নাকি সব মুক্তিযোদ্ধার জন্য বিশাল বিশাল অবদান রাখছে তাহলে আমার জন্য কি একটি কার্ডও কপালে জুটে না। আমি কি অপরাধ করেছি সরকারের কাছে। চুয়াডাঙ্গা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম সাইদুর রহমান সাব্দারের সাথে সহকারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি কাজ করেছি। কিন্তু আমি পড়াশোনা না জানায় কাগজ-পত্র ঠিক করে কার্ড করতে পারেনি। কিন্তু আমার সব কাগজ- পত্রই আছে। আমি পড়াশোনা জানি না বলে কিছুই করতে পারি না। সরকারের আছে আমার জোড় আবেদন আমার যেনো একটা কার্ডের ব্যবস্থা করে দেয়। সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে ওমবাদের একটা কার্ডের ব্যবস্থা করে দিলে কষ্টের সাথে সংগ্রাম থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেতে পারে মুক্তিযোদ্ধা ওমবাদ হোসেন।