সমীকরণ প্রতিবেদন: ঢাকা থেকে কলকাতার মধ্যে চতুর্থ আরেকটি আন্তঃদেশীয় ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। রেলপথমন্ত্রী মো: নূরুল ইসলাম সুজনের সাথে গতকাল সোমবার তার দফতরে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। তিনি ভারতের পক্ষে এই প্রস্তাব দেন। এ সময় বাংলাদেশে ভারতীয় অর্থায়নে যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য যেসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় ভারতের হাইকমিশনার জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু রয়েছে। যাত্রীচাহিদা বিবেচনা করে ঢাকা-কলকাতার মধ্যে দর্শনা হয়ে আরো একটি ট্রেন চালানো যেতে পারে। এ সময় রেলপথমন্ত্রীর ভারত সফরের বিষয়টি উঠে আসে।
মন্ত্রী এ সময় জানান, তিনি ভারত সফরের সময় আধুনিক কোচ তৈরির কারখানা পরিদর্শন করেছেন। ঢাকা থেকে কক্সবাজারে চালানোর জন্য উন্নত মানের ট্যুরিস্ট কোচ তিনি ভারত থেকে আমদানি করতে আগ্রহী। লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় এই কোচের পাশাপাশি ইঞ্জিন এবং লাগেজ ভ্যান ক্রয়ের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ভারতের পক্ষ থেকে এগুলো ক্রয়ের বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়।
রেলপথমন্ত্রী নেপাল এবং ভুটানের সাথে কানেকটিভিটি বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেন। সে ক্ষেত্রে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটকে আরো শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। আলোচনায় আরো যে বিষয়গুলো উঠে আসে তা হলোÑ পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং বাংলাবান্ধা থেকে ভারতীয় অংশ যেখানে সংযোগ স্থাপিত হবেÑ সেটি ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়নি। কাজেই ভারতকে এ বিষয়টি দ্রুত করার আহ্বান জানানো হয়। ভারতীয় অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া পর্যন্ত রেললাইন। রেলপথমন্ত্রী বগুড়া পর্যন্ত লাইনকে সান্তাহার পর্যন্ত বর্ধিত করার আহ্বান জানান। কারণ বগুড়া থেকে সান্তাহার পর্যন্ত মিটারগেজ লাইন রয়েছে। সেখানে ডুয়েল গেজ লাইন করতে না পারলে ব্রডগেজের উপকার ভোগ করা যাবে না। এর পাশাপাশি ভারতীয় অর্থায়নে খুলনা-মংলা রেললাইন, ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ রেললাইন নির্মাণে যে সমস্যা- সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বেনাপোল স্টেশনের আধুনিকায়ন, সিরাজগঞ্জে আইসিডি নির্মাণ, সৈয়দপুরে একটি আধুনিক মানের কোচ তৈরির কারখানা, বাংলাদেশের সহকারী লোকোমোটিভদের ভারতে ট্রেনিং প্রদানের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। সাক্ষাৎকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) মো: মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।