ঢাকাসহ ১০ বিভাগে সমাবেশ কাল

সমীকরণ প্রতিবেদন:
যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল দশ বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে বিএনপি। দেশব্যাপী এই সমাবেশের মধ্য দিয়েই ফের নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে চায় দলটি। অন্যদিকে সমমনা দল ও জোটও নিজেদের সাধ্যমতো ঢাকায় সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগসহ দশ দফা দাবি বাস্তবায়নে দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সমাবেশ থেকেই পরবর্তী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সে জন্য বিভিন্ন জোট ও দলের সঙ্গে বৈঠক করছে বিএনপি। কর্মসূচির বিষয়ে তাদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। সবার মতামত গ্রহণ শেষে বিএনপির নীতিনির্ধারক নেতারা আজ কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন। বিভাগীয় সমাবেশ সফলের জন্য কেন্দ্রীয় নেতারা যেসব বিভাগে যাবেন তাদের নামও ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে ঢাকা সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কুমিলস্নায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রাজশাহীতে মির্জা আব্বাস, খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরিশালে ডক্টর আব্দুল মঈন খান, চট্টগ্রামে নজরুল ইসলাম খান, ময়মনসিংহে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিলেটে বেগম সেলিমা রহমান, ফরিদপুরে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উলস্নাহ বুলু, রংপুরে মোহাম্মদ শাহজাহান। দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতাদেরও নিজ নিজ বিভাগীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে বলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাবেশ সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রত্যেক জেলায় দায়িত্বশীল নেতারা উঠান বৈঠক, প্রস্তুতি সভা, লিফলেট বিতরণ করছেন বিগত কয়েকদিন ধরে। বিভাগীয় কেন্দ্রীয় নেতারাও ছুটছেন এলাকায়। চলমান আন্দোলনে বড় পরিসরে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে নেওয়া হয়েছে নানাবিধ উদ্যোগ। এজন্য সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় যাচ্ছেন নেতারা। বিএনপি নেতারা জানান, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের পর অনেকটা ঝিমিয়ে পড়া বিএনপিকে আবারও উজ্জীবিত করতে সচেষ্ট দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী। এই সমাবেশের মধ্য দিয়েই ফের নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে চায় বিএনপি। দলীয় নেতাকর্মীর পাশাপাশি সমাবেশে সাধারণ মানুষেরও ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায় তারা। এজন্য ঢাকার সমাবেশকে সফল করতে ঢাকা মহানগর বিএনপি ছাড়াও আশপাশের জেলাগুলোতে চলছে প্রচার-প্রচারণা। এদিন এসব জেলা থেকে নয়া পল্টনে নেতাকর্মীদের ঢল নামতে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। এ লক্ষ্যে পৃথক-পৃথকভাবে দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও নিজেদের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে বৃহস্পতিবারও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচি সফলে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি ইউনিট এবং সর্বস্তত্মরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার পুনরুদ্ধার ও জনদুর্ভোগ নিরসনে ১০ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘চলমান কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ঢাকা মহানগরে চারটি পদযাত্রা হয়েছে। প্রতিটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে শুধু নেতাকর্মী নয়, সমাজে খেটে খাওয়া মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। এই সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন যত বাড়বে তত তাদের আন্দোলন শক্তিশালী হবে।’ অন্যান্য দল ও জোটের প্রস্তুতি: সরকারে পদত্যাগের দাবিতে বিএনপিসহ ৫৫টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করছে। ৬টি জোট ও ৩টি দলের মধ্যে সাত-দলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, ১২-দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, জামায়াত, ৪ দলের জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণফোরামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, ১৫ সংগঠন সমন্বয়ে পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট রয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে কাল সকাল বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রত্যেক দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ১২-দলীয় জোটের উদ্যোগে বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কের সামনে, ১২-দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে পল্টনে, গণফোরামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির নতুন জোট রাজধানীর আরামবাগে নটর ডেম কলেজের সামনে এ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির উদ্যোগে পূর্বপান্থপথ এলাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ৪ দলের জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে ১৫ সংগঠন সমন্বয়ে পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে পল্টন মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।