ঝিনাইদহ অফিস:
ভোটার তালিকায় তিন বছর আগেই ‘মৃত’ তিনি। এখন বাঁচার জন্য টিকা দরকার। কিন্তু ভোটার তালিকায় তাঁর নাম মৃত তালিকায় থাকায় টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। ঝিনাইদহ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঞ্চননগর গ্রামের মৃত শেখ মোহাম্মদ আলীর ছেলে এস এম আনোয়ার হোসেন দিব্যি জীবিত থাকলেও তাঁকে মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় কোনো কাজই তিনি করতে পারছেন না। তাঁর এনআইডি নম্বর ৮২৪৪৯৬১২৮৩।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ প্রতিনিধির কাছে আনোয়ার জানান, নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজে তিনি ‘মৃত’। কিন্তু বাঁচার জন্য এখন তাঁর দরকার টিকার রেজিস্ট্রেশন। এস এম আনোয়ার ছোট-খাটো ঠিকাদারী কাজ করেন। করোনার ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করতে গিয়ে জানতে পারলেন তিনি ‘মৃত’।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, এস এম আনোয়ার নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজে ২০১৮ সালের আগে থেকেই ‘মৃত’। ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে পৌরসভা থেকে স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করেন আনোয়ার। তিনি অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম তাঁর এলাকার ডাটাবেজ তৈরি করেন। তিনিই তাঁকে ‘মৃত’ দেখিয়েছেন। তবে শরিফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাড়ির লোকজনের দেওয়া তথ্য নিয়ে তিনি ফরম পূরণ করেছেন। ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এরকম করা হয়নি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মশিউর রহমান জানান, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তথ্যগত ভুল হতেই পারে। তবে আবেদন করে সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। এস এম আনোয়ার জানান, তাঁর পরিচয়পত্রে এতো বড় ভুল থাকার কারণে শতবার চেষ্টা করেও টিকা নিবন্ধন করা যায়নি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীম কবির জানান, সরকার ৮০ শতাংশ লোককে টিকার আওতায় আনার চিন্তা করেছে। সে লক্ষ্যে নিবন্ধন না করে শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর লিখে রেখে টিকা দেওয়া ব্যবস্থা করছে।
এদিকে, নির্বাচন অফিসের দৃষ্টিতে এটা খুব ছোট সমস্যা হলেও এমন সমস্যা নিয়ে অনেক মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। কারও বাপের থেকে ছেলে দুই বছরের বড়। কারো নামের বানান ভুল, সার্টিফিকেটে এক নাম জাতীয় পরিচয়পত্রে আরেক নাম, প্রকৃত বয়সের চেয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স ১৫/২০ বছর কম এমন সমস্যা নিয়ে প্রায় প্রতিদিন ঝিনাইদহ নির্বাচন অফিসে ভিড় করছে মানুষ। ভুক্তভোগীদের দাবি, সরেজমিনে না গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করায় এমন বড় দাগের ভুলের মাশুল দিচ্ছে গ্রামের সাধরণ মানুষ।