ইপেপার । আজ শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪

ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে হাজতি আসামীদের উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আশ্বাস দিয়ে ২ কারারক্ষির জামিন বানিজ্য: টাকা ফেরৎ চেয়ে উকিল নোটিশ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৪৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০১৭
  • / ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে হাজতি আসামীদের উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আশ্বাস দিয়ে দুইজন চিহ্নিত কারারক্ষি রীতিমত বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার আইনজীবিদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জামিন করতে ব্যার্থ হওয়ার পরও আসামীদের টাকা ফেরৎ না দেওয়ায় মামুন (ব্যাচ নং ৪২৬৬৭) নামে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের এক কারা রক্ষিকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত কারারক্ষি মামুন পঞ্চাশ হাজারের মধ্যে ৩৬ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। সাফায়েত নামে আরেক কারা রক্ষির বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন একই স্থানে থাকার কারণে তারা এহেন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে অনেকের অভিমত। প্রাপ্ত তথ্য ও উকিল নোটিশ সুত্রে জানা গেছে, একটি মামায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চান্দেরপোল গ্রামের ওমর আলী সোহাগ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান। হাজতী আসামী সোহাগকে হাইকোর্ট থেকে জামিন করার জন্য কার রক্ষি মামুন ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করেন। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের কোন আইনজীবী দিয়ে জামিন করা হয়নি। এ অবস্থায় গত ২৪ জানুয়ারী ঝিনাইদহের একটি আদালত থেকে ওমর আলী সোহাগ জামিন লাভ করেন। হাইকোর্ট থেকে জামিন করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কারা রক্ষি মামুন টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তা ফেরৎ না দেওয়ায় আইনজীবীর দ্বারস্থ হন হাজতী আসামীর সোহাগের ভাই তাজ উদ্দীন। ঝিনাইদহ জজ কোর্টের আইনজীবী মোঃ শওকত আলী ২৩ ফেব্রয়ারী কারারক্ষি মামুনের বরাবর টাকা ফেরৎ চেয়ে উকিল নোটিশ পাঠান। উকিল নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে তার মক্কেলকে টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়। তরিঘড়ি করে কারারক্ষি মামুন ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ৩৬ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। বাকী টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ করেন সোহাগ। এদিকে কারা রক্ষি মামুনের এহেন কর্মকান্ড নতুন নয়। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের সাবেক এক কমিশনারকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৭০ হাজার, কোটচাঁদপুর শহরের এক যুবকের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা এবং শৈলকুপার চড়িয়ারবিল এলাকার আব্দুল হালিমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের জামিন করাতে পারেনি। তাদেরকে আবার টাকাও ফেরৎ দেওয়া হচ্ছে না। টাকা চাইলে হুমকী ধমকি দেওয়া হচ্ছে। ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কারারক্ষি হিসেবে এই কাজ করা সম্পুর্ন অন্যায়। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ কারাগারের জেলার নিজাম উদ্দীন জানান, মামুন নামে কারাগারে এক রক্ষি আছে। আমি নতুন যোগদান করেছি। তবে তিনি জামিন করার নামে কোন টাকা নেন কিনা জানি না। তবে তথ্য যখন পেলাম তখন তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ বিষয়ে করারক্ষি মামুনের ০১৭৩৯৭২৯২৯৯ নাম্বার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী এক মহিলা জানান, তিনি জরুরী কাজে ব্যস্ত আছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে হাজতি আসামীদের উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আশ্বাস দিয়ে ২ কারারক্ষির জামিন বানিজ্য: টাকা ফেরৎ চেয়ে উকিল নোটিশ!

আপলোড টাইম : ০৪:৪৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০১৭

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে হাজতি আসামীদের উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আশ্বাস দিয়ে দুইজন চিহ্নিত কারারক্ষি রীতিমত বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার আইনজীবিদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জামিন করতে ব্যার্থ হওয়ার পরও আসামীদের টাকা ফেরৎ না দেওয়ায় মামুন (ব্যাচ নং ৪২৬৬৭) নামে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের এক কারা রক্ষিকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত কারারক্ষি মামুন পঞ্চাশ হাজারের মধ্যে ৩৬ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। সাফায়েত নামে আরেক কারা রক্ষির বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন একই স্থানে থাকার কারণে তারা এহেন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে অনেকের অভিমত। প্রাপ্ত তথ্য ও উকিল নোটিশ সুত্রে জানা গেছে, একটি মামায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চান্দেরপোল গ্রামের ওমর আলী সোহাগ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান। হাজতী আসামী সোহাগকে হাইকোর্ট থেকে জামিন করার জন্য কার রক্ষি মামুন ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করেন। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের কোন আইনজীবী দিয়ে জামিন করা হয়নি। এ অবস্থায় গত ২৪ জানুয়ারী ঝিনাইদহের একটি আদালত থেকে ওমর আলী সোহাগ জামিন লাভ করেন। হাইকোর্ট থেকে জামিন করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কারা রক্ষি মামুন টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তা ফেরৎ না দেওয়ায় আইনজীবীর দ্বারস্থ হন হাজতী আসামীর সোহাগের ভাই তাজ উদ্দীন। ঝিনাইদহ জজ কোর্টের আইনজীবী মোঃ শওকত আলী ২৩ ফেব্রয়ারী কারারক্ষি মামুনের বরাবর টাকা ফেরৎ চেয়ে উকিল নোটিশ পাঠান। উকিল নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে তার মক্কেলকে টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়। তরিঘড়ি করে কারারক্ষি মামুন ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ৩৬ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। বাকী টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ করেন সোহাগ। এদিকে কারা রক্ষি মামুনের এহেন কর্মকান্ড নতুন নয়। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের সাবেক এক কমিশনারকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৭০ হাজার, কোটচাঁদপুর শহরের এক যুবকের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা এবং শৈলকুপার চড়িয়ারবিল এলাকার আব্দুল হালিমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের জামিন করাতে পারেনি। তাদেরকে আবার টাকাও ফেরৎ দেওয়া হচ্ছে না। টাকা চাইলে হুমকী ধমকি দেওয়া হচ্ছে। ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কারারক্ষি হিসেবে এই কাজ করা সম্পুর্ন অন্যায়। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ কারাগারের জেলার নিজাম উদ্দীন জানান, মামুন নামে কারাগারে এক রক্ষি আছে। আমি নতুন যোগদান করেছি। তবে তিনি জামিন করার নামে কোন টাকা নেন কিনা জানি না। তবে তথ্য যখন পেলাম তখন তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ বিষয়ে করারক্ষি মামুনের ০১৭৩৯৭২৯২৯৯ নাম্বার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী এক মহিলা জানান, তিনি জরুরী কাজে ব্যস্ত আছেন।