ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে টিসিবির পণ্য ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে নানা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আলহেরা পাড়ার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে ঝিনাইদহে ট্রেডিং করর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। পণ্যের স্বল্পতা, ওজনে কম দেওয়া, দেরি করে স্পটে পণ্য নিয়ে আসা, জোর করে অপ্রয়োজনীয় পণ্য খরিদ করতে বাধ্য করা, দীর্ঘসময় ধরে লাইনে দাঁড় করানোর পর ‘পণ্য নাই’ বলে ক্রেতা বিদায় করে দেওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটছে। এতে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ক্রেতাদের অভিযোগ, দুর্নীতি করে লাভবান হওয়ার জন্য ডিলাররা পরিকল্পিতভাবে সরকারের এই মহতি উদ্যোগকে ব্যর্থ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। গতকাল বুধবার ঝিনাইদহের বাইপাস সড়কের আলহেরা স্কুলের সামনে হতদারিদ্রদের মাঝে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করেন কুমারেশ চন্দ্র বিশ্বাসের জে.কে এন্টারপ্রাইজ। সেখানে বেশির ভাগ ক্রেতাদের ওজনে কম দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ক্রেতারা।
টিসিবি’র পণ্য খরিদ করতে আসা বাইপাস ও আলহেরা এলাকার মিন্টু, রিমন, মিলন, বিপ্লব ও মর্জিনা খাতুন অভিযোগ করেন, তাদের কাছে যে চিনি ও ডাল বিক্রি করা হয়েছে তাতে কম রয়েছে। মর্জিনা বলেন, তাঁর ২লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে ৪০ টাকা বেশি নিয়েছে। শুধু জে.কে এন্টারপ্রাইজ নয় সুযোগ বুঝে কতিপয় ডিলার প্রতিনিয়ত ওজনে কম দিয়ে গ্রাহকদের ঠকিয়ে চলেছে।
এসব অনিয়মের বিষয়ে ঝিনাইদহের টিসিবির সহকারী পরিচালক ও অফিস প্রধান সোহেল রানা জানান, ঝিনাইদহ জেলায় মোট ৫৯ জন ডিলার রয়েছেন। সদরে রয়েছেন ৩০জন ডিলার। ঝিনাইদহ শহর এলাকায় প্রতিদিন ৩টি স্থানে টিসিবি’র মালামাল বিক্রয় করা হয়। এসব মালামাল ওজনে কম দেয়া চরম অন্যায়। আর টিসিবি’র মালামাল গেটের বাইরে চলে গেলে আমার দায়িত্বে থাকে না। এদিকে, ক্রেতাদের অভিযোগ পণ্যের সরবরাহের অজুহাতে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য পাওয়া যায় না। মানুষ মসুর ডাল বা পেঁয়াজের জন্য লাইনে দাঁড়ালেও প্রায়ই সময় নেই বলে ক্রেতাদের বিদায় দেওয়া হয়।
এসব বিষয় জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মণ্ডল জানান, টিসিবির পণ্য ওজনে কম দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যে ডিলার এটা করবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ থেকে খোলা ট্রাকে করে সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা ও আলু বিক্রি করছে টিসিবি। প্রতি কেজি চিনি ৫০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৫০ টাকা, লিটার প্রতি সয়াবিন তেল ৮০ টাকা ও পিয়াজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ ২ কেজি চিনি, মসুর ডাল ২ কেজি, সয়াবিন তেল ৫ লিটার ও পেঁয়াজ ২ কেজি খরিদ করতে পারবে।
