ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কামান্না গ্রামে ৪৯তম ‘২৭ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শাহাদাৎ দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবসটি পালন উপলক্ষে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঝিনাইদহের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই।
প্রধান অতিথি বলেন, ১৯৭১ সালের এ দিনে পাক বাহিনী ও রাজাকাররা মিলে ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৯ জনকে হত্যা করে। এ দিনে স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য কামান্না গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের টিনের দুটি ঘর এখনো সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতি চিরকাল তাঁদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ফ ম আবুল ফাত্তাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ও রহমত আলি মণ্টু। আলোচনা শেষে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এ দিনে পাক বাহিনী ও রাজাকাররা ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৯ জনকে হত্যা করে। স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে কামান্না গ্রামে শহীদ হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মোমিন, আব্দুল কাদের, শহিদুল ইসলাম, সোলেমান হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক (১), আব্দুল ওয়াহেদ, রিয়াত আলী, আলমগীর হোসেন, মতলেব উদ্দীন, আলি হোসেন, শরিফুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, আলিমুজ্জামান, তাজুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, মাছিম উদ্দীন, আব্দুর রাজ্জাক (২), কাওছার আলী, সালেক মিয়া, আজিজুর রহমান, আকবর হোসেন, সেলিম হোসেন, হোসেন আলী, রাশেদ মিয়া, গোলজার হোসেন, শ্রী অধীর কুমার ও গৌর পদ। একই সঙ্গে জীবন দিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গাইডার শ্রী ফণি ভুষণ কুন্ডু ও রান্নার বুয়া মোছা. রঙ্গবিবি। অবস্থানগত দিক দিয়ে সুবিধাজনক হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাগন কামান্না গ্রামের মাধব ভুঁইয়ার বাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্প গড়ে তোলেন। ২৫ নভেম্বর রাতে খাবার খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাগণ ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর রাতে বাড়িটির ঘিরে ফেলে পাকসেনা ও রাজাকাররা। তাদের গুলিতে একে একে শহীদ হন ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
