জীবননগর বাঁকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার খাতা দেখাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা প্রধান শিক্ষকের সাথে অভিভাবকদের দ্বন্দ্ব : তোপের মুখে শিক্ষা অফিসার
- আপলোড টাইম : ১১:২০:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৭
- / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে
জীবননগর অফিস: জীবননগর উপজেলার বাঁকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে পরীক্ষার খাতা দেখাকে কেন্দ্র করে অভিভাবকের সাথে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়লে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। অবশেষে অভিভাবদের তোপের মুখে শিক্ষা অফিসার সাকী সালাম। জানা গেছে গত কয়েক দিন আগে জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের কালাম হোসেনের ছেলে বাঁকা ২৬নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণী থেকে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীন্ন হয়ে চতুর্থ শ্রেনীতে লেখাপড়া করছে। তাদের অভিযোগ প্রথম শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাসে প্রথম স্থান লাভ করে আসছে অথচ এই বার সে চতুর্থ শ্রেণীতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে। যার ফলে তার বাবা স্কুলে প্রধান শিক্ষকের কাছে খাতা দেখার জন্য বললে তিনি খাতা দেখাতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশেষে অভিভাবক বাধ্য হয়ে জীবননগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারই পরিপেক্ষিতে গতকাল সাড়ে ১২টায় বাঁকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাকী সালাম। এ ব্যাপারে অভিভাবক কালাম হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমার ছেলে প্রথম শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত প্রথম স্থান লাভ করে আসছে, কিন্তু এ বছর সে ক্লাসে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে। এ বিষয়টি আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সানোয়ার হোসেনের কাছে বললে তিনি আমাকে কোন পাত্তায় দেয়না, যার ফলে আমি আমার ছেলের পরীক্ষার খাতা দেখার কথা বললে তিনি প্রথমে খাতা দেখাতে রাজি হয়নি অনেক বলার পরে তিনি খাতা দেখান, সেখানে দেখি আমার ছেলের পরীক্ষার খাতায় দুই পৃষ্ঠায় কোন নাম্বার দেওয়া হয়নি। তিনাকে আমি এ বিষয়টি বললে তিনি আমাকে বলেন আমি কার নাম্বার দেব আর কার নাম্বার দেব না এটা আমার ব্যপার তোমার ছেলের আমি কোন নাম্বার দেব না পারলে আমার কিছু করে নাও। তিনার এ কথা শুনে আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। সে সময় তিনি আমাকে সময় দেন এবং এ বিষয়টি দেখার কথা বলেন। তাই তিনার কথা মত আমরা যারা অভিভাবক আছি সকলে স্কুলে যেয়ে হাজির হয় এবং খাতাটি এনে আমাদের সামনে দেখাতে বলি, কিন্তু তিনি তা দেখাতে রাজি হয়নি। এ ব্যপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাকী সালামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন একজন অভিভাবক আমার কাছে স্কুলের পরীক্ষার খাতা দেখার জন্য আবেদন করেন। আমি তিনাকে বলি আমি বুধবার যাবো তা হলে আপনি ওই দিন স্কুলে আসেন আমি আপনাদের বিষয়টি দেখব। তারই পরিপেক্ষিতে আমি গতকাল স্কুলে গেলে এলাকার বেশ কয়েকজন অভিভাবক ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মী স্কুলে উপস্থিত হয়ে খাতা দেখতে চান, আমি তিনাদের বলি এটা কোন নিয়ম নেই যে সবার সামনে স্কুলের পরীক্ষার খাতা দেখাতে হবে। ঠিক আছে তা হলে এখানে একজন থাকেন আর বাকিরা অন্য রুমে বসেন এই কথা বললে তিনারা আমার উপর চড়াও হয়ে ওঠেন। এ ব্যপারে স্থানীয় জনগনের সাথে কথা বললে তারা বলেন স্কুলের দপ্তর থাকলেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রায় স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ কর্ম করে নেন, এমনকি স্কুলের টয়লেট পরিস্কার পর্যন্ত করে নেন, এর আগেও এলাকাবাসীসহ অভিভাবকরা নিষেধ করেছে তবু তিনি তিনার ক্ষমতার দাপটে এ ধরনের কাজ করে থাকে বলে অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সানোয়ার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন যারা এ ধরনের অভিযোগ করেছে তা মোটেও সঠিক নয়। এদিকে শিক্ষকদের এ ধরনের কর্মকান্ড দেখে এলাকার সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে, এই যদি হয় শিক্ষকদের চরিত্র তা হলে ছাত্র/ছাত্রীরা তাদের নিকট থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশকে কি শিক্ষা উপহার দিবে? অন্যদিকে বাঁকা ২৬নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক সানোয়ার হোসেনকে অপসারনের জন্য এলাকাবাসী কতৃপক্ষের কাছে জোর দাবি তুলেছেন।