জীবননগর আন্দুলবাড়ীয়ায় এসিড দগ্ধ মামলায় রক্ষা পেতে দগ্ধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে
- আপলোড টাইম : ১০:০১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
- / ৪৩৩ বার পড়া হয়েছে
মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা : মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন দগ্ধ বিশারত
আন্দুলবাড়ীয়া প্রতিনিধি: জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়ায় বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে পুঞ্জিভুত সমস্যাকে কেন্দ্র্র করে প্রতিপক্ষের ছোঁড়া এসিডে শরীরের একাংশ ঝলসে গেছে আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিশারতের (৪৫)। এ ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে এসিডের শিকার বিশারতের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন করা হয়েছে বলে মিথ্যা অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর মূল আসামি দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অন্যদিকে, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ঢাকা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন বিশারত ম-ল। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য তাদেরকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে।
এলাকাবাসী সুত্র জানান, জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ম-লপাড়ার রুস্তম আলীর ছেলে বিশারত আলী ম-ল ও আব্বাস আলী পরস্পর নিকটতম আত্মীয়। তাদের উভয়পক্ষের মধ্যে অতীতে ভাল সম্পর্ক থাকায় একই স্থানে জমি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু তারা কিছুদিন ভালভাবে বসবাস করলেও অল্পদিনের ব্যবধানে জমির ন্যায্য হিস্যা ও পারিবারিক অন্যান্য ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এরই জের ধরে গত ২১ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে বিশারত বাড়ি থেকে বের হয়ে আব্বাসের গেটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আব্বাস ও তার স্ত্রী কাকলী খাতুন এবং মনিরুজ্জামান পরস্পর যোগসাজসে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গায়ে এসিড ছুঁড়ে মারলে শরীরের একাংশ ঝলসে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। বর্তমানে বিশারত আলী ম-ল ঢাকা বার্ন ইউনিটে ভর্তি রয়েছে। ঘটনার অনেক পরে এ ব্যাপারে জীবননগর থানায় একটি মামলা করা হয়। কিন্তু তারা এ মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশারতের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করে।
এসিডদগ্ধ বিশারত আলী বলেন, আমি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছি। আব্বাসদের সাথে আমার পাশাপাশি বসবাস। ওই জমি নিয়ে তাদের সাথে আমার বিরোধ। তার বাড়ির গেটের সামনে দিয়ে আমার যাতায়াতের রাস্তা। জমি জায়গার বিরোধকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে বিবাদমান সমস্যা সমাধানে চেয়ারম্যান মোক্তারসহ অন্যান্য লোকজন সালিসে বসে। সেখানে আব্বাস ও তার স্ত্রী অপরাধী প্রমাণিত হওয়ায় তারা নিজেদেরকে অপমান বোধ করেন। সেই রাগে আমাকে ঘটনার দিন গায়ে এসিড ছুঁড়ে মারে অথচ তারা এলাকায় অপপ্রচার করতে থাকে আমি নাকি তাদের বাড়িতে ঢুকেছি সেই জন্য আমার গায়ে গরম ডাল ছুড়ে মেরেছে। পুলিশ আসামী আব্বাস ও তার স্ত্রীকে এখনও ধরতে পারেনি।
ঘটনার ব্যাপারে আসামি আব্বাসের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করার এক পর্যায়ে সাংবাদিকের সাথে কথা বলছেন এমন অবস্থা টের পেয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলা বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি আর মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেননি।
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বর আরিফুল ইসলাম বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে জমি জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে ঠিক। সর্বশেষ তাদের মধ্যে বিবাদমান বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বসা হয়েছিল। কিন্তু আসামি পক্ষ না মানায় তা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। সবারই কম বেশী দোষ ত্রুটি আছে। আমার জানামতে আসামি আব্বাস ও তার স্ত্রী কাকুলী খাতুন বাড়িতে নেই।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুরাদুল ইসলাম বলেন, পুলিশি তৎপরতার কারণেই মামলার অন্যতম আসামি মনিরুজ্জামান বাধ্য হয়েছে আদালতে আত্মসমর্পন করতে। আমি তাকে পুলিশ রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদনও করেছি। মামলার মূল আসামি আব্বাস ও কাকলী খাতুনদেরকে গ্রেফতার করতে সব ধরণের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। শুধু জেলার যে কোন স্থানে নয়, বাংলাদেশের যেখানেই থাকুক না কেন সন্ধান পাইলেই তাদেরকে গ্রেফতার করতে একটু দেরি হবে না। তবে আসামিদের এলাকায় অবস্থানের কথা মনে হয় সঠিক নয়।