ধর্ম ডেস্ক: হাশরের ময়দানে মানুষ যখন ভয়ানক অস্থিরতা আর উৎকণ্ঠা নিয়ে পাগলের মতো ছোটাছুটি করবে, পিপাসায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবে তখন আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক নবীকে একটি করে হাউজ দান করবেন। সেই হাউজ থেকে তাঁরা তাঁদের উম্মতকে পানি পান করিয়ে পিপাসা নিবারণ করাবেন। সেদিন মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা.)-কেও আল্লাহ তায়ালা হাউজে কাউসার দান করবেন। সেটা হবে সবচেয়ে বড় হাউজ। সেখানেই সবচেয়ে বেশি লোকের সমাগম হবে। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের মাঝে ছিলেন, হঠাৎ তিনি তন্দ্রা গেলেন, এরপর হাসতে হাসতে মাথা তুললেন। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, কিসে আপনাকে হাসাচ্ছে? তিনি বললেন, এ মুহূর্তে আমার ওপর একটি সূরা নাজিল করা হয়েছে। এরপর তিনি পড়লেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। অতএব তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যেই নামাজ পড় এবং কোরবানি কর। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ’ (সূরা কাউসার : ১-৩)। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা জানো কাউসার কী? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন। তিনি বললেন, এটা একটা নহর। আল্লাহ তায়ালা আমাকে এটা দেওয়ার ওয়াদা করেছেন, এতে রয়েছে প্রচুর কল্যাণ। এটা একটা হাউজ, এর পাশে আমার উম্মত গমন করবে। এর পানপাত্রগুলো নক্ষত্রের সংখ্যার মতো। তাদের থেকে এক বান্দাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক, সে আমার উম্মতদের একজন। আল্লাহ বলবেন, তুমি জানো না তোমার পর তারা কী আবিষ্কার করেছে (মুসলিম ও আবু দাউদ)। হাউজে কাউসার হলো জান্নাতি ঝরনাধারা। জান্নাত থেকে দুইটি নালা দিয়ে হাশরের মাঠের হাউজে পানি প্রবাহিত হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার জীবন যার হাতে সেই সত্তার কসম, হাউজে কাউসারের পানপাত্রগুলো অন্ধকার রাতের আকাশের তারকারাজির সংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি। জান্নাতের পাত্র এমন, যে তা থেকে পান করবে পরে সে আর পিপাসার্ত হবে না। জান্নাত থেকে দুইটি নালা দিয়ে এতে পানি প্রবাহিত হবে (মুসলিম, নাসায়ি ও মুসনাদে আহমাদ)। এতে বোঝা গেল হাউজে কাউসার সাধারণ কোনো হাউজ নয়। সরাসরি জান্নাতের সঙ্গে এর সম্পর্ক। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে জান্নাতি ঝর্ণাধারা বরকতময় হাউজে কাউসার নসিব করুন।