
সমীকরণ প্রতিবেদন:
দেশে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে সরকার জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে। সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩-এর আওতায় এই কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে গতকাল বিকেলে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘দেশের সর্বস্তরের জনগণকে টেকসই পেনশন কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে প্রণীত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩-এর ৪(১) ধারা অনুযায়ী ‘জতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠা করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’ তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে কর্তৃপক্ষের গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত আর কিছু বলা হয়নি। জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর গত ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩-এর অনুমোদন দেন। তারপরই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ এবং আইনটির ক্ষমতা বলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পেনশন আইনে কর্তৃপক্ষকে একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের স্থায়ী ধারাবাহিকতায় একটি সিল মোহর থাকবে। এর কার্যলয় হবে ঢাকায়। কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চার সদস্য থাকবেন এবং তারা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং তাদের চাকরির মেয়াদ ও শর্ত বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন নির্বাহী চেয়ারম্যান। কর্তৃপক্ষসহ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের ব্যয় সরকার বহন করবে। গঠিত কর্তৃপক্ষ স্থাবর বা অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন, সম্পত্তি অধিকারে রাখতে ও হস্তান্তর করতে পারবে এবং সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে নিজ নামে ঋণ নিতে পারবে। কর্তৃপক্ষ নিজ নামে মামলা দায়ের এবং আদালতের মাধ্যমে সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব ক্রোক করতে পারবে। এ ছাড়া কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও মামলার সুযোগ রাখা হয়েছে আইনে। র্র্র্কর্তৃপক্ষের কার্যপরিধি হিসেবে ১২টি কাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের প্রথম কাজ হবে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু, সুষ্ঠু ব্যস্থাপনা ও উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ। সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতির আওতায় এর চাঁদাদাতাদের স্বার্থ সংরক্ষণ, পেনশন স্কিমে চাঁদাদাতাদের জমাকৃত অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ। চাঁদাদাতাদের অভিযোগ নিষ্পত্তি করার দায়িত্বও থাকবে এই কর্তৃপক্ষের। পেনশন আইনে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি পেনশন পরিচালনা পর্ষদও গঠন করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, অর্থসচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-এর চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, এফবিসিসিআই সভাপতি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি প্রমুখ এর সদস্য হবেন।