সমীকরণ প্রতিবেদন:
সরকারের বিরুদ্ধে সব মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার দুপুরে দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই আহ্বান জানান। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে মতিউর রহমান, যিনি এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা প্রথম আলোর সম্পাদক, তার নামে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়েছে, পত্রিকাটির রিপোর্টার শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। আমরা আছি বলে এখনো কথা বলছি, এ দেশের মানুষ কথা বলছে। তাই আমি প্রথমেই যে সাবধান বাণী উচ্চারণ করতে চাই সব মানুষের কাছে- বন্ধুগণ, সতর্ক হোন, সজাগ হোন। যারা আজকে ক্ষমতা বেআইনিভাবে জোর করে ধরে রাখার জন্য ভিন্ন মত ধারণকারী মানুষকে হত্যা করছে, গুম করছে, নির্যাতন করছে, কারাগারে নিচ্ছে তাদের হাত থেকে আপনারাও মাফ পাবেন না। কারণ একদিন না একদিন আপনাদেরও ধরবে। তাই সব মানুষের দায়িত্ব সকালে মিলে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। জার্মান কবি মার্টিন নিম্যোলারের লেখা কবিতা ‘ফার্স্ট দে কেইম’ (ওরা প্রথম : এসেছিল) আবৃত্তি করে মির্জা ফখরুল বলেন, কবিতাটি খুবই প্রাসঙ্গিক। এটা পড়ার লোভ আমি সামলাতে পারছি না। কবিতাটি হচ্ছে, ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিল আমি কোনো কথা বলিনি। কারণ আমি কমিউনিস্ট নই। তারপর যখন ওরা ট্রেড ইউনিয়নের লোকগুলোকে ধরে নিয়ে গেলো, আমি নীরব ছিলাম কারণ আমি শ্রমিক নই। শেষবার ওরা ফিরে এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে। আমার পক্ষে কেউ কোনো কথা বলল না। কারণ কথা বলার মতো আর কেউ ছিল না। তিনি বলেন, জার্মানরা ইহুদিদের হত্যা করার জন্য হিটলার ও হিটলারের গ্যাসটাপো বাহিনী যখন একেক করে কমিউনিস্ট, সাংবাদিক, লেখক যারা সত্য কথা বলে, যারা জনগণের কথা বলে শ্রমিকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছিল তখন কোনো কোনো মানুষ তারা নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সেদিন কোনো বিরোধিতা করেনি, কোনো কথা বলেনি। তাকে যখন ধরে নিতে এলো তখন কথা বলার কেউ ছিল না। তিনি বলেন, আজকে ওই অবস্থা (জার্মানের মতো অবস্থা) এখানে হয়েছে। আজকে একেক করে যারা এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছে তাদের তারা ধরে নিয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাদের গুম করেছে, হত্যা করেছে। শ্রমিকদের ধরে নিয়ে গেছে, গুম করেছে হত্যা করেছে, ভিন্ন মত পোষণ করেছে, গুম করেছে, হত্যা করেছে। এরপর আপনাদের মনে আছে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে, দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছে, শফিক রেহমানকে একইভাবে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছে, আসাদ সাহেবকে (দৈনিক সংগ্রাম) তাকে দীর্ঘকাল কারাগারে আটক করে রেখেছিল। তখন অনেকে কোনো কথা বলেননি।