শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, র্যালি, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের সরকারি-বেসরকারি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করেছে।
চুয়াডাঙ্গা:
মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পী, লেখক ও সাংবাদিকসহ অন্য মেধাবী বাঙালিকে বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের শহিদ হাসান চত্বরে শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তর্বক অর্পণ ও শহিদ বেদিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের বিনম্র চিত্তে স্মরণ করা হয়। মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত রহমান, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু হোসেন, নুরুল ইসলাম মালিকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। পরে শহিদ হাসান চত্বরের মুক্তমঞ্চে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি শত্রুরা যখন বুঝতে পারল, তারা পরাজিত হতে বসেছে, ঠিক তখনই তারা ষড়যন্ত্র করল এই দেশকে মেধাশূন্য করার জন্য। এ দেশকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যেই তারা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। জাতিকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল তারা। আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে সেই আলোকিত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করি। যখন কোনো শহিদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যের কথা শুনি টেলিভিশনে, তখন বুকটা ফেটে যায়। কত ত্যাগ স্বীকার করে আমরা আজ এই জায়গায়। আমাদেরকে বুঝতে হবে কত কষ্ট করে আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর রেজাউল করিম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু হোসেন, নুরুল ইসলাম মালিক প্রমুখ। আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেটের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান।
এর আগে সকাল ৭টায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে শহিদ হাসান চত্বরে শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তর্বক অর্পণ করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আরশাদ উদ্দীন চন্দন, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন হেলা, জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা চেয়ারম্যান নাবিলা রুখসানা ছন্দা, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদী আলম মিলি, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক প্রমুখ।
অপর দিকে, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা শহরের শহিদ হাসান চত্বরে অবস্থিত শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে জেলা যুবলীগ। পরে দলীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সদস্য সাজ্জাদুল ইসলাম লাভলু, হাফিজুর রহমান হাপু, আলমগীর আজম খোকা, বাড়াদী ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন, ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মাসুদ রানা, খানজাহান আলী, ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান আসাদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বিপ্লব।
এদিকে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কর্মসূচি অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের পক্ষে বড় বাজার হাসান চত্বরে শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হুছাইন জ্যাকির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম পারভেজ সজল, জেলা ছাত্রলীগ নেতা উজ্জল তরফদার, রাজন, সানজিদ আহমেদ, শীতল, শুভ, সম্রাট, রনি, আরাফাত, রুশার, সোহান, সাইফুল, রতন, মমিন, সাকিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হুছাইন জ্যাকি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা হলেন জাতির বিবেক। বুদ্ধিজীবীরা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা দিয়ে সমাজ-রাষ্ট্রকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সহায়তা করেন। বুদ্ধিজীবী হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বর্বরোচিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা। পরাজয় নিশ্চিত জেনে জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য দেশীয় দোসরদের সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনার দল দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের জন্য বাঙালি জাতি যুগ যুগ ধরে তাদরকে ঘৃণা করবে।’
অপর দিকে, দিবসটি উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি নজমুল হেলাল, সহসভাপতি গোলাম কবির মুকুল, সাধারণ সম্পাদক নজির আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক সুমন ইকবাল, মাসুদ রানা প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, পেশাজীবী, রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষক-ছাত্র ও সাধারণ মানুষ শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গা প্রবীণ হিতৈষী সংঘের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংঘের সভাপতি এ কে এম আলী আখতার। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা আদর্শ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এসএম ইস্রাফিল। সভায় বক্তব্য দেন অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী, পৌর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাজাহান আলী বিশ্বাস, ডা. মুস্তাকুর রহমান জোয়ার্দ্দার, মো. আলাউদ্দিন ও মো. লুৎফর রহমান। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মালেকা রহমান, আবু তাহের, একিউএম আলফাজউদ্দীন, রত্না খাতুন ও আমিরুল ফারুক। আলোচনা সভা শেষে দোয়ার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার শান্তির ও দেশের অগ্রতির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মো. আব্দুল হামিদ।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে বধ্যভূমিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি যথাযোগ্য মর্যদায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নুর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহমেদ ডন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদা সুলতানা, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মাকসুরা জান্নাত, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহীল কাফি, মৎস্য কর্মকর্তা কামরুজ্জামান আঁখি, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোহেল রানা, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম, মহিলা তথ্য আপা স্নিগ্ধা দাস, আলমডাঙ্গার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, প্রেসক্লাব সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মণ্টু, সম্পাদক হামিদুল আজম, হাফেজ ওমর ফারুক প্রমুখ।
এছাড়াও সকাল ৯টায় আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে সেখানে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ্ব লিয়াকত আলী মোল্লা, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান ফারুক, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুর রহমান পিণ্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হাজী ঠান্ডু রহমান, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালেক, উৎপল, জাহাঙ্গীর, জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।
এদিকে, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আলমডাঙ্গার বধ্যভূমিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বধ্যভূমি স্তম্ভে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নুর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান সালমুন আহমেদ ডন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দিন, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম, এসআই সুফল কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দিন বলেন, বিজয় সুনিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে দেশ বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বাংলাদেশ যেন কোনোদিনই মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, এ জন্য এই হত্যাকাণ্ড চালায়। তিনি আরও বলেন, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া পথেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
জীবননগর:
জীবননগরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় জীবননগর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জীবননগর শহরের মুক্তমঞ্চে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. হাফিজুর রহমান, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম, জীবননগর পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. আয়েশা সুলতানা লাকী, জীবননগর পৌর যুবলীগের সভাপতি শাহ আলম শরিফুল ইসলাম ছোট বাবু, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মিঠুন মাহমুদ, সহসভাপতি চাষী রমজান, যুগ্ম সম্পাদক তুহিনুজ্জামান, সদস্য জোসনা, লাবনী, মিমসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির কর্মসূচি:
সাবেক সংসদ সদস্য ও মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন বলেন, একটি গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের মাধ্যমে বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন পূরণ করতে চায়। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার, মানুষের সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকারকে সামনে রেখে আমরা আজ শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছি। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী প্রাক্কালে আমরা যখন বলছি, তখন আমাদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আমরা যখন দেখছি, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার লুণ্ঠন হয়ে গেছে, আমাদের ভোটের অধিকার হরণ হয়ে গেছে, শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ইচ্ছা আজ লুণ্ঠন হয়ে গেছে। ঠিক সেই মুহূর্তেই আমরা নতুন সংগ্রামের প্রেরণা নিয়ে আমরা শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছি।
মেহেরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জেলা বিএনপির শ্রদ্ধাঞ্জলি, পদযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ কর্মসূচির সময় তিনি এ কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করে মেহেরপুর জেলা পরিষদের স্মৃতিসৌধে গিয়ে বুদ্ধিজীবীদের পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন, সাবেক সহসভাপতি আব্দুর রহমান, ইলিয়াস হোসেন, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
মুজিবনগর:
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেছে মুজিবনগর উপজেলা প্রসাশন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন সরকার ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দীন বিশ্বাস।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদী রাসেল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা খাতুন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুর রব, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আনিসুর রহমানসহ উপজেলার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মুক্তিযোদ্ধারা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামানায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
পরে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুজন সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদী রাসেল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম মোল্লা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা খাতুন, শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আহসান আলী প্রমুখ।
এদিকে, সন্ধ্যায় প্রেরণা একাডেমি দারিয়াপুরের আয়োজনে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজ শহিদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও কবিতা আবৃত্তি করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রেরণা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান চাঁদু, নির্বাহী পরিচালক সেলিনা পারভিন সুমিসহ অত্র একাডেমির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
মহেশপুর:
ঝিনাইদহের মহেশপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকালে মহেশপুর উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুল করিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়জদ্দীন হামীদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাসিবুস সাত্তার জমির, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এটিএম খাইরুল আনাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা খাতুন হেনা, শিক্ষা অফিসার আবু হাসান, মুক্তিযোদ্ধা চলাকালীন সেক্টর কমান্ডার ফয়জুর রহমান, সাবেক পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তালেব প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপজেলা পর্যায়ের সকল দপ্তরের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি*-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।