নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় তিনদিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুয়াডাঙ্গায় তিনদিনব্যাপী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. সলিমুল্লাহ। বিকেলে ফিতা কেটে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত মেলার উদ্বোধন করেন অতিথিরা। দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। উদ্বোধনের পর মেলা মঞ্চে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রেসব্রিফিং করা হয়। তিনদিনব্যাপী এ মেলায় সরকারি-বেসরকারি ৮৫টির বেশী প্রতিষ্ঠান স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শোভাযাত্রাটি টাউন ফুটবল মাঠে পৌছায়। বিকেলে অতিথিরা ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন। পরে মেলা প্রাঙ্গনের মঞ্চে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. সলিমুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. মু: সিদ্দিকুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন।
আলোচনাসভায় মো. সলিমুল্লাহ প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, আমি চুয়াডাঙ্গা জেলাকে আমার দ্বিতীয় জন্মস্থান হিসেবে মনে করি। কেননা, এ জেলায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর চাকরি করেছি। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তেমন চুয়াডাঙ্গায় দায়িত্বে থাকাকালীন বিভিন্ন উন্নয়ন ভাবনা ও উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গার নতুন জেলা স্টেডিয়ামের জায়গা আমার সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করি এবং সীমানা নির্ধারণ করি।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে যেমন আপামোর জনসাধারণ উন্নয়নে অংশগ্রহন করেছেন, তেমনি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এই কর্মসুচীতে তাদের আন্তরিক অংশগ্রহনের মাধ্যমে সমগ্র কর্মসূচীকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, প্রথমে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের তিন’শ টাকা ভাতা দেয়া হতো। সেটি বর্তমান সরকার বাড়িয়ে দশ হাজারে উন্নীত করেছে। এছাড়া খেতাবপ্রাপ্ত, যুদ্ধাহত, শহীদ পরিবারের মুক্তিযোদ্ধাদের আরো বর্ধিত হারে ভাতা দেয়া হচ্ছে।
আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ উন্নয়নের এক রোল মডেল। শিক্ষান্নোতি, বেকার সমস্যা দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন, পূণর্বাসনসহ সর্ব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নয়ন পেয়েছে। এ ছাড়াও সভাপতি তার বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পূর্ণ নিজস্ব চিন্তচেতনা এবং সৃজনশীলতা দ্বারা উদ্ভাবিত বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসক এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় জেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মোট ৩১৫টি গ্রাম সংগঠন তৈরী করা হয়েছে ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক রয়েছে ৪টি। বাড়ি কেন্দ্রীক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খামার তৈরীর জন্য ৩০, ৪৬৮ জনকে পর্যায়ক্রমে সহায়তা দেওয়া হয়েছে, হাস মুরগী পালন, মৎস্য চাষ, গবাদিপশু পালন এবং নার্সারী স্থাপনের জন্য ৪৮টি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ২৪০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রম চলমান রয়েছে, আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ২৪০টি পরিবার আজ পুনর্বাসিত, প্রতিমাসে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৪৫লাখ মানুষ জেলার ৪টি পিডিএস এবং ৩৬টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে তথ্য ও সেবা গ্রহণ করছে, এ বছরের ১লা জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে বই বিতরণ করা হয়েছে, ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব চালু করা হয়েছে, ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, ১৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম চালু করা হয়েছে, বাল্য বিবাহ রোধে জেলার প্রতিটি গ্রামে বিশেষ সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে, জেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হয়েছে, এ জেলায় মোট ১১৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে সেখানে ৩০ প্রকার ঔষধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হয়, পূর্বের তুলনায় বর্তমানে দ্বিগুণ জনকে বৃদ্ধ ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধীকে ভাতা প্রদান করছে সরকার। এ ছাড়াও চালু হয়েছে প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় জেলায় ৭৫৯জন প্রতিবন্ধীকে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ ও উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক সমৃদ্ধি লাভ করেছে। আলোচনাসভায় প্রাণবন্ত্র উপস্থাপনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মুন্সী আবু সাঈফ।
আলোচনা সভা শেষে অতিথিগণ মেলার স্ট্রলগুলো ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আঞ্জুমান আরা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আ. রাজ্জাক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্র্রেট দেবপ্রসাদ পাল, সহকারি পুলিশ সুপার ছূফিউল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে, এনডিসি তরিকুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি আজাদ মালিতাসহ আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উন্নয়ন মেলায় ৯৩টি স্ট্রল তাদের উন্নয়ন পসরা সাজিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার আরো স্ট্রল বাড়তে পারে বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে। এ সব স্ট্রলে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। সন্ধ্যায় মেলা মঞ্চে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মেলার প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ হয়।
এদিকে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর বিপুল সংখ্যাক হারে স্টল বেঁড়েছে। বিভিন্ন সরকারি, বে-সরকারি, সামাজিক ও এনজিও সংস্থার পাশা পাশি মেলায় স্টল দখল করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এর দুটি দল। মেলা চলবে আগামী ১১তারিখ বুধবার পর্যন্ত সকাল ১০টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত । তবে জেলা প্রশাসন আয়োজিত উন্নয়ন মেলা উন্মুক্ত সকলের জন্য।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেছে জেলা প্রশাসন। শেখ হাসিনার দর্শন সব মানুষের উন্নয়ন, উন্নয়নের গণতন্ত্র শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র সেøাগান সংবলিত ব্যানারে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে দেশের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচী তুলে ধরেন। এসময় চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আলমডাঙ্গা অফিস জানিয়েছে, গতকাল বেলা ৩টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চত্বরে ৩দিন ব্যাপী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩দিন ব্যাপী উন্নয়ন মেলার শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দীন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা, থানা অফিসার ইনচার্জ আকরাম হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা রওশন আরা, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শামীমুজ্জামান, হারদী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মন্টু, কালিদাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু, নাগদাহ ইউপি চেয়ারম্যান দারুস সালাম, ডাউকি ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান, আইলহাঁস ইউপি চেয়ারম্যান মিনাজ উদ্দিন, বাড়াদী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাষ্টার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মূছা, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিয়ার রহমান।
ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, “উন্নয়নের গণতন্ত্র শেখ হাসিনার মুলমন্ত্র” এ স্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে শুরু হয়েছে ৩দিন ব্যাপী উন্নয়ন মেলা। এ উপলক্ষে সোমবার সকালে ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন ডিসি চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে পুরাতন ডিসি কোর্ট মুক্তমঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মালেক, ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা: রাশেদা সুলতানা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ্ মোহাম্মদ আকরামুল হক, পরিবার-পরিকল্পনার উপ-পরিচালক ডা: জাহিদুল ইসলাম। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে বুধবার। এবারের মেলায় সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা মিলিয়ে ৬৬ টি স্টল স্থান পেয়েছে। ৩দিন ব্যাপী এ মেলায় ২য় দিন ও ৩য় দিনে মেলায় উপস্থিত থাকবেন ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের সচিব মো: শাহ্ কামাল। সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং করবেন ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম-সচিব ইসমাইল হোসেন ও উপ-সচিব মনিরুল ইসলাম।
কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সারাদেশের মত কোটচাঁদপুরে উন্নয়ন মেলা ২০১৭ উদ্ভোধন করা হয়েছে। সোমবার স্থানীয় উপজেলা চত্বওে এ মেলার উদ্ভোধন করা হয়। এ বছর মেলায় ৩৩ টি স্টল শোভা বর্ধন করছে। জানা যায়, উন্নয়ন মেলাকে ঘিরে কোটচাঁদপুর উপজেলা চত্বরে চলছে উৎসবে আমেজ। গেল কয়েক দিন ধরে চলছে সাজ সাজ রব। স্টল বরাদ্ধ দেয় হয়েছে রবিবার। আর এ স্টল গুলো যে যার মত সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করেন রবিবার থেকেই। সোমবার সকাল থেকে চোখে পড়ে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের আনাগোনা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে স্টল গোছানোর কাজ সেরে ফেলেন তারা। এরপর বেলা ১১ টায় মেলা উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয় উপজেলা প্রশাসনের। এরপর আলোচনা সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার শাম্মী ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নাজমা খাতুন,পৌর সভার মেয়র জাহিদুল ইসলাম (জাহিদ),উপজেলা আওয়ামীলীগের মোছাঃ শরিফুননেসা মিকী,মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তাজুল ইসলাম,পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক ফারজেল হোসেন মন্ডল,কোটচাঁদপুর থানার ওসি (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন সরকার।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, এ দেশ হবে শোষনমুক্ত গরিবের বাংলাদেশ। উন্নয়র মাধ্যমে গরীবের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। সকল ধর্মের মানুষ মাথা উচু করে সমতার সাথে বসবাস করবে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্য দিয়ে সব স্বপ্ন ধুলিশ্যাৎ হয়ে যায়। দেশকে জঙ্গিবাদ রাষ্ট্রে পরিনত করতে একটি গোষ্ঠি কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সে স্বপ্নকে বৃথা যেতে দেয়নি বঙ্গবন্ধুর কণ্যা। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষে কাজ করছে বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বলিষ্ট নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি সেক্টরে ঈর্ষনীয় উন্নয়ন ঘটেছে। সোমবার বিকেল মেহেরপুরের শহীদ সামসূজ্জোহা পার্কে তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেছেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন। তিনি আরোও বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে তথ্য নির্ভর, প্রযুক্তি নির্ভর, মধ্যম আয়ের স্বচ্ছল অর্থনীতির সমৃদ্ধ দেশ। দেশে আর কখনও খাদ্য ঘাটতি থাকবে না। এর আগে বিকেল ৩ টার দিকে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশের উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেহেরপুর জেলার উন্নয়ন মেলায় জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব ডঃ মঈনুল হক আনছারী, পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, পৌর মেয়র মোতছিম বিল্লাহ মতু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ খালেক, সহ সভাপতি আলহাজ্ব আশকার আলী, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, মেহেরপুর জেলা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি ও মেহেরপুর নিউজ ২৪ ডটকমের সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি রফিক-উল আলম। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিন ধুমকেতু। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শাশ্বত নিপ্পন। জেলার বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ৫৭ টি স্টল থেকে সরকারে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরছেন। এ সময় প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দরা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। মেলা চলবে আগামী বুধবার পর্যন্ত। এর আগে সকালে ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র শেখ হাসিনার মুল মন্ত্র’, ‘শেখ হাসিনার দর্শন বাংলাদেশের উন্নয়ন’, ‘শেখ হাসিনার দর্শন সব মানুষের উন্নয়ন’ এ স্লোগানে মেহেরপুরে উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছে জেলা প্রশাসন। সোমবার সকল ১০ টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে গিয়ে শেষ হয়। জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, পৌর মেয়র মোতাছিম বিল্লাহ মতু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রশিদুল মান্নাফ কবীরসহ জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার দর্শন, বাংলাদেশের উন্নয়ন’ এই প্রতিপাদ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মুজিবনগরে তিন দিন ব্যাপী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে ৩টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশে একযোগে উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পরে সাড়ে ৩টায় দিকে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে স্থানীয় ভাবে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং ফিতা কেটে তিন দিন ব্যাপী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন। পরে উপজেলা চত্তরে নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন মুজিবনগর থানা অফিসার কাজী কামাল হোসেন, মুজিবনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল জলিল, মহাজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু, উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাঃ মোফাক্খারুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম ফারুক, মৎস্য অফিসার শহিদুল ইসলাম। পরিচালনায় ছিলেন সমাজ সেবা অফিসার তৈফিকুর রহমান। উন্নয়ন মেলায় বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ৩৫টি স্টল দেওয়া হয়েছে।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সারাদেশের ন্যায় দামুড়হুদা উপজেলায় ৩দিন ব্যাপি উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ৩টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্তর থেকে উন্নয়ন মেলা ২০১৭’র বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে র্যালীটি একই স্থানে এসে শেষ হয়। র্যালী শেষে উন্নয়ন মেলা প্রাঙ্গনে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলায় সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠনের ৪২টি স্টলে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান তাদের পশড়া সাজিয়ে বসে রয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগর টগর। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান সামসুল আবেদীন খোকন, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালমা জাহান পারুল, দামুড়হুদা আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রী কলেজের প্রিন্সিপাল কামাল উদ্দিন, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ, দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ওসি) শোনিত কুমার গাইন, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী এম নূরুন্নবী। বক্তব্য রাখেন, ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম, সোহরাব হোসেন, আব্দুল আজিজ, মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু, জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত সদস্য শফিউল কবির ইউসুফ, জাফর আলী, সিরাজুল ইসলাম প্রমূখ। আলোচনা সভা শেষে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৫০জন দুস্থ, হত-দরিদ্র প্রশিক্ষিত মহিলাকে ৫০টি সেলাই মেশিন প্রদান করেন।