সারা দেশে মৃত্যু ৪৬০০ ছাড়াল, ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ গেল ৪১ জনের, শনাক্ত ১৮৯২
সমীকরণ প্রতিবেদন:
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৮৯২ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪ হাজার ৬৩৪ জনে। মোট শনাক্ত ৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৪৬ জন এবং এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৩ হাজার ৫৫০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে আরও জানানো হয়, ৯৪টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ৬৪২টি নমুনা সংগ্রহ এবং ১৫ হাজার ৫৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৬ লাখ ৯০ হাজার ১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭০ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এদিকে, গতকাল চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। এক দিনে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২১ জন।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে ১৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৩৭ জন। গতকাল করোনা উপসর্গ নিয়ে মুকুল হোসেন (৭৫) নামের এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। জেলায় গতকাল নতুন ২১ জনসহ এ পর্যন্ত মোট ৯৭৭ জন সুস্থ হয়েছেন। নতুন শনাক্ত ১৪ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৬ জন, দামুড়হুদা উপজেলা ৫ জন ও জীবননগর উপজেলার ৩ জন রয়েছেন। ১৪ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী। বয়স ১৬ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।
জানা যায়, বৃদ্ধ মুকুল হোসেন দীর্ঘদিন যাবত করোনা উপসর্গ জ্বর, ঠাÐা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। গতকাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহানা আহমেদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত মুকুল হোসেনের করোনা উপসর্গ থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর শরীর থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত মুকুল হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা গ্রামের পূর্বপাড়ার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
গত বুধবার করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৪৫টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে পাঠায়। গতকাল উক্ত নমুনার মধ্যে ৪৫টি নমুনারই ফলাফল সিভিল সার্জন অফিসে এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ১৪টি নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ ও বাকি ৩১টি নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। গতকাল করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ২২টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা থেকে ১৯টি, দামুড়হুদা উপজেলা থেকে ৩টি নমুনাসহ সংগৃহীত ২২টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবির জানান, চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে ১৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গতকাল করোনা উপসর্গ নিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার মুকুল হোসেন নামের এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। তিনি দির্ঘদিন যাবত করোনা উপসর্গ জ্বর, ঠাÐা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে গতকাল পরিবারের সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালের জরুরি বিভগে নেয়। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। করোনা উপসর্গ থাকায় করোনা পরীক্ষার জন্য নিহতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা প্রটোকলে লাশের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় নতুন আক্রান্তর ১৪ জনই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। তাঁদের সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে হোম আইসোলেশন অথবা প্রতিষ্ঠানিক আইসোলেশন নিশ্চিত করা হবে। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ২৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৫ হাজার ২৫৩টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৫ হাজার ১২৬টি, পজিটিভ ১ হাজার ৩৩৭টি ও নেগেটিভ ৩ হাজার ৭৮৯টি। গতকাল নতুন ২১ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৯৭৭ জন ও মৃত্যু ৩১ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জেলায় গতকাল হোম আইসোলেশনে ছিলেন ২৯৩ জন ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ছিলেন ২৫ জন।