চুয়াডাঙ্গার রেলপাড়ায় চাঞ্চল্যকর হত্যাকা- : ৮ বছর পর ভাড়াটিয়া মা-মেয়ে হত্যা মামলার রায় প্রধান আসামী লিপুর ফাঁসি : কার্যকরের অপেক্ষায় জেলাবাসী
- আপলোড টাইম : ০২:২৪:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০১৭
- / ৫১০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলাব্যাপী ব্যাপক আলোচিত সমালোচিত লোমহর্ষক মা ও মেয়ে ডাবল মার্ডারের প্রধান আসামী লিপুর ফাঁসির আদেশ দিয়েছে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালত। চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের রেলপাড়ার চাঞ্চল্যকর মা-মেয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী মনজুরুল ইসলাম লিপুকে (৪২) মৃত্যুদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার এই আদেশ দেন বিচারিক আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ এর বিজ্ঞ বিচারক রোকনুজ্জামান এই আদেশ দেন। দ-িত মনজুরুল ইসলাম লিপু চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলপাড়ার গোলাম হোসেন মল্লিকের ছেলে।
প্রসঙ্গত এজাহারে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৬ নভে¤॥^র সকালে মনজুরুল ইসলাম লিপু নিজ বাড়ির ভাড়াটিয়া হাবিবের স্ত্রী রিনা আক্তার(৩২) ও তার মেয়ে আয়েশা খাতুন (১২)কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। লিপু খুন করে পালানোর সময় একইদিন বেলা ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গার পাঁচপকেট নামক স্থানে চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে ট্রেনের নিচে পড়ে যায়। এতে তার ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার দিন নিহতের স্বামী হাবিবুর রহমান হাবিব ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকাতে ছিলেন। তিনি ফিরে বাদী হয়ে মনজুরুল ইসলাম লিপুর বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সে সময় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আমিনুল ইসলামের কাছে অভিযুক্ত মনজুরুল ইসলাম লিপু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দেয়। সদর থানার এসআই আমীর আব্বাস তদন্তশেষে ২০১০ সালের ১৬ জানুয়ারি আসামি লিপুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদ-াদেশ প্রদান ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশদেন বিজ্ঞ বিচারক। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড বেলাল হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম। আসামী পক্ষে ছিলেন এ্যাড শাজাহান মুকুল। এদিকে গতকালই রায়ের কপি ২৪ঘন্টার মধ্যে রাষ্ট্রীয় লালসালুতে মুড়িয়ে উচ্চ আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার উত্তর বারীখাল গ্রামের আব্দুল হাকিম খানের ছেলে চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউমার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান হাবিবের স্ত্রী ছিলেন নিহত রিনা আক্তার ও তাদের মেয়ে আয়েশা খাতুন। ঘটনার সময় রিনা আক্তার ৯মাসের অন্তঃস্বত্তাও ছিলেন। তাদের মেয়ে আয়েশা ছিলো ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। হাবিবের অভিযোগ, লিপু দীর্ঘদিন ধরে তার ও তার স্ত্রীর কাছে চাঁদাদাবী করে আসছিলো। লিপুর চাহিদা মোতাবেক চাঁদা না দেওয়ায় তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ প্রাণনাশের হুমকী দিতো। এরই এক পর্যায়ে হাবিব ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকায় গেলে সুযোগ বুঝে ঘাতক লিপু তার স্ত্রী ও মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঐ দিনই হত্যাশেষে পালানোর চেষ্টাকালে রেললাইনের পাশে রক্তাত্ব ও জখম অবস্থায় পুলিশের হাতে আটক হয় সে। পরে অকপটে লিপু তার জোড়া খুনের দ্বায় স্বীকার করে।