ইপেপার । আজ সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার মানিকদিহি মাঠের কলাবাগানে নৃশংসতা : লাশ দেখে স্থানীয়দের পুলিশে খবর পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বোমা মঈনকে জবাই করে হত্যা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৩৩৭ বার পড়া হয়েছে

deadbody20170108162343ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আনিছ বিশ্বাস/ ইকরামুল হক: চুয়াডাঙ্গার মানিকদিহি থেকে সন্ত্রাসী মঈন উদ্দীন ওরফে বোমা মঈনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে গ্রামের একটি কলাবাগানে যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। গতকাল বিকেল পর্যন্ত নিহতের পরিচয় না পাওয়ায় বিকেলে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়েছে। পরে অবশ্য নিহতের পরিচয় মিলেছে। সে ঝিনাইদহের হরিনাকু- উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে এবং পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল জনযুদ্ধ লাল পতাকা বাহিনীর সক্রীয় সদস্য। নিহত মঈনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ ও হরিনাকু- থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনসহ তিনটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ মানিকদিহি গ্রামের মফিজ উদ্দীনের কলাবাগানে যুবকের গলা কাটা লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কলাবাগান থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করে। ওই সময় চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন ও সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে সদর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ অজ্ঞাত যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার করে সুরোতহাল প্রনয়ণ করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠান। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিচয় না পেয়ে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে গতকাল বিকেলে দাফন করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ সমীকরণকে জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ডিঙ্গেদহের মানিকদিহি গ্রামের মফিজ উদ্দীনের কলাবাগান থেকে যুবকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে মর্গে নেয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিচয় না পেয়ে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে জান্নাতুল মওলা কবরস্তানে দাফন করা হয়।
তিনি আরও জানান, রোববার রাত ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি নিহত যুবকের নাম মঈন উদ্দীন। সে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকু- উপজেলার লুৎফর রহমানের ছেলে। পরে হরিণাকু- থানায় যোগাযোগ করা হয়। হরিনাকু- থানার ওসি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান মইন উদ্দীন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর ও হরিনাকু- থানায় হত্যাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। সন্ত্রাসী মঈন উদ্দীন তার এলাকায় বোমা মঈন নামে পরিচিত। সে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল জনযুদ্ধ লাল পতাকা বাহিনীর সক্রীয় সদস্য।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক সমীকরণকে জানান, সন্ত্রাসী মঈনের প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে। মঈন উদ্দীন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল জনযুদ্ধ লাল পতাকা বাহিনীর সদস্য ছিলো। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ২০১৫ সালে বোমা বানানোর সময় বিষ্ফোরিত হয়ে মঈনের হাত উড়ে যায়। এই বিষয়েও তার বিরুদ্ধে হরিনাকু- থানায় একটি বিষ্ফোরণ মামলা রয়েছে। এর আগে ২০০৪ সালে তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরও জানান, হত্যাকারীরা মঈনকে জবাই করে এবং দু পায়ের রগ কেটে হত্যা নিশ্চিত করেছে। তাদের দলীয় আভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে মঈনের লাশ উদ্ধার হওয়ায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঈনের স্বজনরা তার লাশ দাবী করলে তাদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, প্রথমে নিহত যুবকের পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা করা হয়েছে। পরে জানা যায় সে এলাকায় বোমা মঈন নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- করে আসছিলো। হত্যাকা-ে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গার মানিকদিহি মাঠের কলাবাগানে নৃশংসতা : লাশ দেখে স্থানীয়দের পুলিশে খবর পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বোমা মঈনকে জবাই করে হত্যা

আপলোড টাইম : ০১:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০১৭

deadbody20170108162343ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আনিছ বিশ্বাস/ ইকরামুল হক: চুয়াডাঙ্গার মানিকদিহি থেকে সন্ত্রাসী মঈন উদ্দীন ওরফে বোমা মঈনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে গ্রামের একটি কলাবাগানে যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। গতকাল বিকেল পর্যন্ত নিহতের পরিচয় না পাওয়ায় বিকেলে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়েছে। পরে অবশ্য নিহতের পরিচয় মিলেছে। সে ঝিনাইদহের হরিনাকু- উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে এবং পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল জনযুদ্ধ লাল পতাকা বাহিনীর সক্রীয় সদস্য। নিহত মঈনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ ও হরিনাকু- থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনসহ তিনটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ মানিকদিহি গ্রামের মফিজ উদ্দীনের কলাবাগানে যুবকের গলা কাটা লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কলাবাগান থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করে। ওই সময় চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন ও সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে সদর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ অজ্ঞাত যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার করে সুরোতহাল প্রনয়ণ করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠান। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিচয় না পেয়ে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে গতকাল বিকেলে দাফন করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ সমীকরণকে জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ডিঙ্গেদহের মানিকদিহি গ্রামের মফিজ উদ্দীনের কলাবাগান থেকে যুবকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে মর্গে নেয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিচয় না পেয়ে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে জান্নাতুল মওলা কবরস্তানে দাফন করা হয়।
তিনি আরও জানান, রোববার রাত ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি নিহত যুবকের নাম মঈন উদ্দীন। সে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকু- উপজেলার লুৎফর রহমানের ছেলে। পরে হরিণাকু- থানায় যোগাযোগ করা হয়। হরিনাকু- থানার ওসি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান মইন উদ্দীন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর ও হরিনাকু- থানায় হত্যাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। সন্ত্রাসী মঈন উদ্দীন তার এলাকায় বোমা মঈন নামে পরিচিত। সে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল জনযুদ্ধ লাল পতাকা বাহিনীর সক্রীয় সদস্য।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক সমীকরণকে জানান, সন্ত্রাসী মঈনের প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে। মঈন উদ্দীন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল জনযুদ্ধ লাল পতাকা বাহিনীর সদস্য ছিলো। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ২০১৫ সালে বোমা বানানোর সময় বিষ্ফোরিত হয়ে মঈনের হাত উড়ে যায়। এই বিষয়েও তার বিরুদ্ধে হরিনাকু- থানায় একটি বিষ্ফোরণ মামলা রয়েছে। এর আগে ২০০৪ সালে তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরও জানান, হত্যাকারীরা মঈনকে জবাই করে এবং দু পায়ের রগ কেটে হত্যা নিশ্চিত করেছে। তাদের দলীয় আভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে মঈনের লাশ উদ্ধার হওয়ায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঈনের স্বজনরা তার লাশ দাবী করলে তাদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, প্রথমে নিহত যুবকের পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা করা হয়েছে। পরে জানা যায় সে এলাকায় বোমা মঈন নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- করে আসছিলো। হত্যাকা-ে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।