ইপেপার । আজ রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের যাদবপুর গ্রামের যৌতুকলোভী পাষণ্ড স্বামীর কাণ্ড গৃহবধূর মাথার চুল কেটে বের করে দিলো ননদ-শ্বশুড়ি : শাস্তি দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:০১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ১০৭১ বার পড়া হয়েছে

DSC00596

জীবননগর অফিস: সময় মত যৌতুকের টাকা দিতে পারেনি বলে এক অসহায় গরীব পরিবারের মেয়েকে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে টাক করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে যৌতুকলোভী এক পাষন্ড স্বামী । ঘটনাটি ঘটেছে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামে। জানা গেছে গত আড়াই বছর পূর্বে জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর রমজান আলীর কন্যা ইসনেহার খাতুনকে (২০) একই উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামে মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলামের (২৬) সাথে মহা ধুমধামে বিয়ে দেওয়া হয়। দেড় বছরের মাথায় তার কোল জুড়ে আসে শিশু পুত্র জিহাদ (১)। শিশুটির জন্মের পরেই শুরু হয় যৌতুকের দাবিতে তার উপর অমানুষিক অত্যাচার ও নির্যাতন। অনেক কষ্টে গত ৬মাস পূর্বে অসহায় পিতা জামাইকে দেওয়া যৌতুকের  প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী ২৫হাজার টাকা পরিশোধ করে। এই টাকা শেষ হতে না হতেই পুনরায় আবারও ৫০হাজার টাকা দাবি করে কুলাঙ্গার জামাই । এত টাকা যোগাড় করতে মেয়ের বাবা ব্যর্থ হলে কন্যার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। টাকা না দিতে পারায়  দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় পাষন্ড স্বামী রফিকুল, শ্বাশুড়ী ছমিরন, ননদ সাজেদা, দেবর রবগুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা। এ ব্যাপারে আহত গৃহবধু অভিযোগ করে বলেন আমার স্বামী, শ্বাশুড়ী, বড় ননদ, দেবর মিলে আমাকে আমার বাবার কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা আনতে বলেন। আমি গত ৬মাস আগে তাদের কথা মত ২৫হাজার টাকা নিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু আবারও তারা টাকার জন্য আমাকে চাপ দেয়। আমি টাকা আনতে অপরাগত জানালে তারা সকলে মিলে আমার উপরে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। তবু আমার বাবার অবস্থার কথা চিন্তা করে তাদের সমস্ত নির্যাতন সহ্য করে তাদের বাড়িতে ছিলাম । কিন্তু গত ৩দিন আগে তারা সকলে মিলে আমাকে দড়ি দিয়ে বেধে ঘরের ভিতরে প্রথমে কাচি দিয়ে আমার মাথার চুল কেটে দেয়। তারপরে ব্লেড দিয়ে আমার মাথার চুল ন্যাড়া করে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। নিজের জীবন বাচাতে আমি চিৎকার করলে এলাকাবাসী তখন আমাকে উদ্ধার করে এবং আমার বাবাকে খবর দিলে তারা আমাকে সেখান থেকে নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন এ বার নিয়ে তিন গ্রামে বিচার হয়েছে । এ ব্যাপারে সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওর্য়াড সদস্য আঃ সালামের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি আমি শুনেছি, আমি ঢাকায় রয়েছি। তবে মহিলার স্বামী রফিকুল ইসলাম আমার কাছে ফোন দিয়ে বলেন আমি আমার স্ত্রীর মাথার চুল কাটিনি, তার মাথায় উকুন হয়েছিল বলে সে মাথা ন্যাড়া করে আমার উপরে মিথ্যা দোষ দিচ্ছে ।এদিকে জীবননগর থানা সুত্রে জানা গেছে, ইসনেহার খাতুন বাদি হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এলাকার সাধারন মানুষ হতবাক হয়ে পড়েছে এবং পাষন্ড স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের যাদবপুর গ্রামের যৌতুকলোভী পাষণ্ড স্বামীর কাণ্ড গৃহবধূর মাথার চুল কেটে বের করে দিলো ননদ-শ্বশুড়ি : শাস্তি দাবি

আপলোড টাইম : ০১:০১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

DSC00596

জীবননগর অফিস: সময় মত যৌতুকের টাকা দিতে পারেনি বলে এক অসহায় গরীব পরিবারের মেয়েকে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে টাক করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে যৌতুকলোভী এক পাষন্ড স্বামী । ঘটনাটি ঘটেছে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামে। জানা গেছে গত আড়াই বছর পূর্বে জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর রমজান আলীর কন্যা ইসনেহার খাতুনকে (২০) একই উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামে মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলামের (২৬) সাথে মহা ধুমধামে বিয়ে দেওয়া হয়। দেড় বছরের মাথায় তার কোল জুড়ে আসে শিশু পুত্র জিহাদ (১)। শিশুটির জন্মের পরেই শুরু হয় যৌতুকের দাবিতে তার উপর অমানুষিক অত্যাচার ও নির্যাতন। অনেক কষ্টে গত ৬মাস পূর্বে অসহায় পিতা জামাইকে দেওয়া যৌতুকের  প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী ২৫হাজার টাকা পরিশোধ করে। এই টাকা শেষ হতে না হতেই পুনরায় আবারও ৫০হাজার টাকা দাবি করে কুলাঙ্গার জামাই । এত টাকা যোগাড় করতে মেয়ের বাবা ব্যর্থ হলে কন্যার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। টাকা না দিতে পারায়  দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় পাষন্ড স্বামী রফিকুল, শ্বাশুড়ী ছমিরন, ননদ সাজেদা, দেবর রবগুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা। এ ব্যাপারে আহত গৃহবধু অভিযোগ করে বলেন আমার স্বামী, শ্বাশুড়ী, বড় ননদ, দেবর মিলে আমাকে আমার বাবার কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা আনতে বলেন। আমি গত ৬মাস আগে তাদের কথা মত ২৫হাজার টাকা নিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু আবারও তারা টাকার জন্য আমাকে চাপ দেয়। আমি টাকা আনতে অপরাগত জানালে তারা সকলে মিলে আমার উপরে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। তবু আমার বাবার অবস্থার কথা চিন্তা করে তাদের সমস্ত নির্যাতন সহ্য করে তাদের বাড়িতে ছিলাম । কিন্তু গত ৩দিন আগে তারা সকলে মিলে আমাকে দড়ি দিয়ে বেধে ঘরের ভিতরে প্রথমে কাচি দিয়ে আমার মাথার চুল কেটে দেয়। তারপরে ব্লেড দিয়ে আমার মাথার চুল ন্যাড়া করে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। নিজের জীবন বাচাতে আমি চিৎকার করলে এলাকাবাসী তখন আমাকে উদ্ধার করে এবং আমার বাবাকে খবর দিলে তারা আমাকে সেখান থেকে নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন এ বার নিয়ে তিন গ্রামে বিচার হয়েছে । এ ব্যাপারে সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওর্য়াড সদস্য আঃ সালামের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি আমি শুনেছি, আমি ঢাকায় রয়েছি। তবে মহিলার স্বামী রফিকুল ইসলাম আমার কাছে ফোন দিয়ে বলেন আমি আমার স্ত্রীর মাথার চুল কাটিনি, তার মাথায় উকুন হয়েছিল বলে সে মাথা ন্যাড়া করে আমার উপরে মিথ্যা দোষ দিচ্ছে ।এদিকে জীবননগর থানা সুত্রে জানা গেছে, ইসনেহার খাতুন বাদি হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এলাকার সাধারন মানুষ হতবাক হয়ে পড়েছে এবং পাষন্ড স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে ।