সমীকরণ প্রতিবেদন:
চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ২৩ জন। গতকাল শুক্রবার এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট সেলিমের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সুফিয়া খাতুন (৮০) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বেলা একটার দিকে চুয়াডাঙ্গার ১ নম্বর পানির ট্যাঙ্কের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সুফিয়া চুয়াডাঙ্গা শহরের সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার আব্দুর মজিদের স্ত্রী।
সুফিয়ার বোনের মেয়ে সাজিদা খাতুন বলেন, ‘আমি রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। খালা রাস্তা পার হয়ে আমার কাছে আসছিলেন। এসময় সার্জেন্ট সেলিমের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় খালা রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান। পরে ওই পুলিশ আমার খালাকে ভ্যানে করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।’
সাজিদা আরও বলেন, ‘প্রায় ৮ মাস আগে আমার খালার চোখ অপারেশন করা হয়েছিল। এরপর থেকে খালা চোখে কম দেখত। পুলিশের মোটরসাইকেলের গতি খুবই কম ছিল। আমার খালা চোখে কম দেখেন বলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। বিনা ময়নাতদন্তে আমরা মরদেহ নিয়ে যেতে চাই।’ গতকাল বাদ এশা জানাজা শেষে জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে ইব্রাহিম হোসেন মিজান (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেয়াবাগান তেল পাম্পের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম বাসের হেল্পার ছিলেন। তিনি কাালীগঞ্জ পৌরসভর হেলাই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে।
কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের লিডার রবিউল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাকবলিত শাপলা পরিবহনের বাসটি যশোর থেকে যাত্রী নিয়ে কালীগঞ্জের দিকে আসছিল। বাসটি কেয়াবাগান তেল পাম্পের সামনে পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। সংবাদ পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছয়জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্যা সড়ক দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একটি বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে পাশের খাদে পড়ে যায়।
মেহেরপুর:
মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আরাফাত রহমান নূর (১৮) নামের একজন মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরের দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আরাফাত মেহেরপুর সদর উপজেলার কলাইডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে মেহেরপুর শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আরাফাত রহমান নূর, সজিব (২০) ও মতিয়ার রহমান মতু (৩৫) নামের তিনজন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে আরাফাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিতে বলেন। আরাফাতকে ঢাকা নেওয়ার পর ভোরের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। গতকাল বাদ মাগরিব কলাইডাঙ্গা পূর্বপাড়া কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।