চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের পুরস্কার বিতরণকালে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভি.জে) সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় ‘সবাই মিলে খেলা করি, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়াঙ্গন একটি জাতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি অঙ্গনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ফুটবলের কারণে আমরা বর্হিবিশ্বের অনেক দেশকে চিনি। তোমরা যদি মনে করো, চেষ্টা করো, তোমরাও ভি. জে স্কুলকে দেশের মধ্যে পরিচিতি করে তুলতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তখন এই স্কুলের ছাত্র। ভি.জে স্কুল খুলনা বিভাগের মধ্যে ফুটবলে প্রথম হয়েছিল। মোবাইল ছেড়ে মাঠে যেতে হবে। আমি আশা করি তোমরা দেশের জন্য কাজ করবে। তোমরা আগামীর ভবিষ্যৎ। এখন থেকে ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে।’
এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন আরও বলেন, ‘ক্রীড়া শিক্ষককে বাঁশি হাতে মাঠে যেতে হবে। আন্দুলবাড়ীয়া স্কুলের একটি ছেলে দৌঁড়ে ফাস্ট হয়েছে। সে চুয়াডাঙ্গা জেলার গৌরব। চেষ্টা করলে তোমরাও পারবে। মোবাইলের আসক্তি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। মোবাইলে ক্ষতি হচ্ছে। চোখ, মাথা, ব্রেন ও সময় সবকিছুর ক্ষতি করছে। অভিভাবকদের বলি, আপনারা সন্তানদের মোবাইল ও মোটরসাইকেল থেকে দূরে রাখুন।’
সভাপতির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি আশাবাদী এই স্কুলের কোনো ছাত্র যেন অপরাধমূলক কোনো কাজ না করে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের কারিগর তথা কান্ডারি হবে আজকের শিশু। তোমরাই একদিন নেতৃত্ব দিবে। মনের মধ্যে দেশপ্রেম থাকতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।’
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘কারো ওপর দোষারোপ করবেন না। আপনাদের দায়িত্ব বেশি। বেশিরভাগ সময় বাঁচ্চা বাসায় থাকে। আপনারা যেভাবে শেখাবেন, সে সেভাবে চলবে। কেউ যদি চেষ্টা করে, কোচিং প্রাইভেটে যাবে না। তাও সম্ভব। আপনারা মাথায় রাখবেন, এমনভাবে বাঁচ্চাদের গড়ে তুলতে হবে। পত্রিকা পড়তে হবে। বিভিন্ন পত্রিকায় শিক্ষা পাতা আছে। মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। অভিভাবকদের এদিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিতে সম্পৃক্ত হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষক হলেন আমাদের শিক্ষাগুরু। তাদের সামনে কথা বলার প্রয়োজনীয়তা খুবই কম। প্রত্যেকের ধর্মই তাঁর জীবন চরিত। তাই ধর্মীয় মূল্যবোধ নিজেদের মধ্যে বিকশিত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যোগ্যতার ভিত্তিতে ফরম নিয়ে লটারির মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে এখানে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছো। তোমাদের স্বাগত জানাই। শিক্ষকমণ্ডলী ছাত্রদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও জাতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন ছাত্র জীবনের মানবিক ‘খোকা’। এখানকার প্রত্যেকটি ছাত্র বয়সে খোকা। ওদেরকে পরিচর্যার মাধ্যমে মেধা, প্রজ্ঞা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, মানবিকতায় শ্রেষ্ঠ মানুষের কাতারে দাঁড় করানোই হবে শিক্ষকদের মূল দায়িত্ব ও কর্তব্য।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বিলাল হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আলামিন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিল আরা চৌধুরী, চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেটের সহকারী কমিশনার আব্দুর রহমান ও ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হাফিজুর রহমান।
ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মামুনার রশীদের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফসহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষাক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।