‘চুয়াডাঙ্গা পরিবারের’ সহযোগিতায় বেগমপুরে প্রতিবন্ধী শফিকুলের দোকান উদ্বোধনকালে অতিথিবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে শুধুমাত্র সময় কাটানো বা বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করে ব্যক্তি, সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কাজ লাগাতে হবে। সামাজের উন্নয়নে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করতে পারলেই তথ্য ও প্রযুক্তির সফলতা পাবে। ‘চুয়াডাঙ্গা পরিবার’ ফেসবুক গ্রুপ অনলাইনে চুয়াডাঙ্গা জেলার বাসিন্দাদের এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। চুয়াডাঙ্গাকেন্দ্রীক সকল বিষয়গুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরে ‘চুয়াডাঙ্গা পরিবার’। চুয়াডাঙ্গা জেলাকে বিশ্বময় উপস্থাপন করার পাশাপাশি জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে তাদের এগিয়ে আসার চেষ্টাকে সাধুবাদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চুয়াডাঙ্গা জেলা কেন্দ্রীক জনপ্রিয় গ্রুপ ‘চুয়াডাঙ্গা পরিবারের’ উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গা সদরের বেগমপুর গ্রামের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শফিকুল ইসলামের নতুন চা ও ফাস্টফুডের উদ্বোধন কালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাজাহারুল ইসলাম।

দোকান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর, সাবেক পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান, বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফয়জুর রহমান প্রমুখ। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা ফিতা কেটে দোকানের উদ্বোধন করেন ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শফিকুলের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন।

এসময় দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফুল কবির বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শফিকুলের দোকান থেকে প্রথম কাস্টমার হিসেবে উপস্থিত সকলকে কেক ও অন্যান্য সামগ্রী কিনে খাওয়ান। এসময় তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, ‘শফিকুল ইসলাম বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি। আপনারা তার ব্যবসায় সহযোগিতা করবেন। তবে প্রতিবন্ধী কিংবা অসহায় বলে যদি তার ক্ষতি করার চেষ্টা করেন, তবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’ অতিথিরা দোকানে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দেন। এসময় চুয়াডাঙ্গা পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা আরিফ হাসান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাজাহারুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শফিকুলের পারিবারিক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে তার জন্য একটি সরকারি ঘরের দাবি জানালে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্রুত আলাপ করে তাকে ঘর দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।

এসময় উপস্থিত লোকজন করতালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। শফিকুলের ব্যবসা যাতে আরও উন্নত হয়, সে জন্য দৈনিক সময়ের সমীকরণের পক্ষ থেকে তাকে নগদ আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন। আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে আবেগে আপ্লত হয়ে পড়েন শফিকুল। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লাবলুর রহমান, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা পরিবারের পরিচালনা পরিষদের সদস্য জহিরুল ইসলাম জনি, আশরাফুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, ইদ্রিস আলী, বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আলী কদর, ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কায়েশ আলী প্রমুখ।
উল্লেখ, বেগমপুর ইউনিয়নের বেগমপুর গ্রামের হাটপাড়ার মোক্তার হোসেনের ছেলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শফিকুল ইসলাম ৯টি চায়ের কাপ ও একটি কেটলি নিয়ে বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সরকারি রাস্তার জায়গায় চায়ের দোকান চালিয়ে কোনমতে জীবিকা নির্ভর করতেন। বিষয়টি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পরিবারে একটি ভিডিও প্রতিবেদন করলে চুয়াডাঙ্গা পরিবারের কয়েকজন সদস্য শফিকুলের ব্যবসা করার জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে। সেই অর্থ ও বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ অর্থ সহযোগিতায় শফিকুল ইসলামকে নতুন দোকান ও মালামাল তুলে দেওয়া হয়।